বারবার নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে শ্রীপুর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জামিল হাসানের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (১৫ মে) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের প্রধান কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
অশোক কুমার বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জামিল হাসানের প্রার্থিতা বাতিল করেছে কমিশন। প্রার্থীর শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত দেয়।
এর আগে জামিল হাসানকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে হতে যাওয়া গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আপনি ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী। আপনি গত ২১ এপ্রিল শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ও চত্বরের বাইরে আনুমানিক বেলা ১১টা ১০ মিনিটে আপনার কর্মী সমর্থকরা শোভাযাত্রা/শোডাউনসহ মিছিল করেন। এতে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় আপনাকে ২১ এপ্রিল কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে আপনি নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে চলার অঙ্গীকারপূর্বক ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
পরবর্তীতে আপনি ২৭ এপ্রিল বিকেল ৫টায় গাজীপুর সদর উপজেলাধীন বাঘের বাজার এলাকাস্থ সারাহ গার্ডেনে প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে আনুমানিক ৪০০ জন কর্মী সমর্থক নিয়ে জনসভা করার চেষ্টা করেন। উক্ত বিষয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইসতিয়াক মজনুন ইশতি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে আপনার উপস্থিতিতে আপনার সমর্থক মো. আক্তার হোসেনকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
আপনি ৭ মে আনুমানিক দুপুর ১২টার সময় আনুমানিক এক হাজার কর্মী সমর্থক নিয়ে শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেটের সামনে উত্তর দিকে মসজিদ মার্কেট এলাকায় বিশাল প্যান্ডেল করে বিনা অনুমতিতে জনসভাসহ দুপুরের খাবারের আয়োজন করেন। যা উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালার লঙ্ঘন। এ আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
পরবর্তীতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা পুনরায় একই স্থানে বিনা অনুমতিতে সভা আয়োজন এবং জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করার অভিযোগ প্রাপ্ত হন। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আয়োজনস্থলে আপনাকে বক্তৃতারত অবস্থায় এবং আপনার প্রায় ১ এক হাজার কর্মী সমর্থকসহ দেখতে পান।
পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে আয়োজকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হলে আপনি এবং আপনার সমর্থকসহ সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়াসহ হমকি দেন। তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শ্রীপুর, গাজীপুর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে আপনিসহ আপনার কর্মী সমর্থকরা হুমকিসহ অশোভন আচরণ করে ও মিছিল করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে দেখেন, যা উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালার লঙ্ঘন।
উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন-২০২৪ এর তফসিল ঘোষণার পর থেকেই উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এ বর্ণিত বিভিন্ন বিধি ভঙ্গ করছেন। আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশসহ এ বিধিমালায় বর্ণিত দণ্ড দেওয়ার পরও আচরণ মেনে চলছেন না, যা একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন পরিচালনার জন্য অন্তরায়।