কুমিল্লা এসডি নিউজ ডেস্ক :
একই কোম্পানিকে একাধিক কাজ দেয়ার ফলে ওই কোম্পানিগুলো বিভিন্ন সময় অনেক কাজ আটকে দেয়। এজন্য এক কোম্পানিকে বারবার কাজ দেয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘মহাসড়কের লাইফ টাইম: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ এর উপর আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে সংখ্যার চেয়ে অর্থায়ন ও বাস্তবায়নের সক্ষমতা বিবেচনা করে নতুন প্রকল্প নিতে হবে। চলমান প্রকল্পগুলো টেকসইভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে সোচ্চার হতে হবে। অর্থাৎ কাজের সংখ্যা না বাড়িয়ে গুনগত মান বাড়াতে হবে।
দক্ষ কোম্পানিকে কাজ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে পরিমাণ কাজের আয়ুস্কাল নির্ধারণ করা হবে সেটা দিতে হবে। একই কোম্পানীকে একাধিক কাজ না দিয়ে অন্যান্য কোম্পানিকে কাজ দিয়ে কাজ করলে কাজের মান ভাল হবে। একাধিক কাজ দেয়ার ফলে ওই কোম্পানিগুলো কাজ আটকে দেয়। এ জন্য একই কোম্পানিকে বারবার কাজ দেয়া যাবে না।
ওই সেমিনারে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সড়কের টোল পদ্ধতি সম্পূর্ণভাবে সয়ংক্রিয় করতে হবে। এই পদ্ধতি নামমাত্র বা বা অর্ধেক বাস্তবায়ন করা যাবে না। পুরোপুরি নিশ্চিত করতে হবে। আর টোল আদায়ের নামে গাড়ি আটকে সময় নষ্ট ও জ্যাম তৈরি করা যাবে না। প্রতিটি গাড়ির জন্য প্রিপেইড মিটারের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্দিষ্ট সীমা পার হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিল পরিশোধ হবে। টোল প্লাজায় কোনো যানজট হবে না। প্রধানমন্ত্রীও স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিটি মহাসড়কে টোল আদায়ের ব্যবস্থার নির্দেশনা দিয়েছেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে মোহাম্মদ ফজলুল করীম। এতে তিনি বলেন, গত অর্থবছরে সড়ক সংস্কার ও অবকাঠামো সংরক্ষণে সংস্থাটির দরকার ছিল ১১ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা। বিপরীতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ২ হাজার ২২৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর আগের ৯ অর্থবছরের কোনোবারেই পর্যাপ্ত অর্থ মেলেনি।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ভালো সড়ক তৈরি করেছে সিঙ্গাপুর, সেগুলো তো আমরা দেখেছি, সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। তেলের পরিবর্তে যদি পরিবহন সেক্টরে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো যায়, তাহলে বছরে ২ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে। বিশ্বের অনেক দেশের পরিবহন খাত বিদ্যুতে চলে যাচ্ছে। শুধু আমরাই পারছি না।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, মহাসড়ককে টেকসই করার জন্য ওভারলোডিং কমাতে হবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সড়ক-মহাসড়কের রাস্তা নির্মাণ করতে হবে। রাস্তার পাশে যাতে পানি না জমে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সমন্বিত উপায়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে সড়কের লাইফ টাইম নিশ্চিত হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনসহ প্রমুখ।