০৯:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ব্যবসায়ী দুলালকেখুন্তি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা ভাড়াটিয়া সুমি কুমিল্লার বেলতলীতে পিকআপ চাপায় পথচারী নিহত বিতর্কের মুখে সংসদের নির্বাচনী এলাকা সীমানা নির্ধারণ কারিগরি কমিটি কুমিল্লা সদর দক্ষিণে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান অপরাধী যে দলেরই হোক, কোনো ছাড় নেই- ওসি মোহাম্মদ সেলিম কুমিল্লা সদর দক্ষিণে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইয়ংস্টার সোশ্যাল অর্গানাইজেশন এর সদর দক্ষিন উপজেলার কমিটি গঠন নতুন পুরাতন বুঝি না,ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে-ডা. শফিকুর রহমান ছয় দফা দাবিতে কুমিল্লা সদর দক্ষিণে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে হেনস্তা: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হানিফ গ্রেফতার

সৌদিতে পশুর মতো মেঝেতে গৃহকর্মীর খাবার ছুড়ে দেয়া হয়

  • তারিখ : ০১:১১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুলাই ২০২০
  • / 263

অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি আরবে আটকে পড়া লাখো গৃহকর্মী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সোমবার নিউইয়র্ক টাইমস লোমহর্ষক এ বর্ণনা তুলে ধরেছে। গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত ৯ আফ্রিকান নারী লকডাউনের কারণে যখন চাকরি হারালেন, তখন নিয়োগকারী দালাল কয়েকটা পাতলা মাদুর দিয়ে তাদের একটি খালি ঘরে ঢুকিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল।

তাদের কেউ কেউ মার্চ থেকে সেখানে আছেন। একজন সাত মাসের গর্ভবতী হলেও প্রসূতি সেবা পাচ্ছেন না। আরেকজন মানসিকভাবে এমন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন যে নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেললে তাকে দেয়ালে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।

ওই নারীরা বলছেন, তাদের দিনে একবার খাবার দেয়া হয়। তাও পশুর মতো সামনে ছুড়ে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে কেনিয়া থেকে আসা আপিসাকি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে জানান, ‘আমরা সবাই আতঙ্কিত।
এখানকার পরিবেশ মোটেই ভালো না। কেউ আমাদের আওয়াজ শুনতে পায় না।’ বহু আরব দেশে পরিবারগুলো গাড়ি চালানো, ঘর পরিষ্কার রাখা এবং শিশু ও প্রবীণ স্বজনদের যত্ন নেয়ার জন্য এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে আসা লাখ লাখ প্রবাসী কর্মীর ওপর নির্ভর করে। তাদেরকে স্বল্প বেতন দিয়ে রাখা হয়, মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো একে দীর্ঘদিন ধরে ‘শোষণ ও নির্যাতনমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন।

শ্রমিক অধিকার কর্মীরা বলছেন, এখন মহামারী ও তার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা তাদের বিপদকে বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে। ভাইরাস বয়ে নিয়ে আসবে ভয়ে অনেক পরিবার গৃহকর্মীদের ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না। লকডাউনের কারণে পুরো পরিবার ঘরে থাকায় গৃহকর্মীদের কাজও অনেক বেড়ে গেছে।

পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের শ্রমিক অভিবাসন নিয়ে কর্মরত আবুধাবি ডায়ালগের এক গবেষণায় দেখা যায়, শুধু এই দেশগুলোতে ২০১৬ সালে প্রায় ৪০ লাখ অভিবাসী গৃহকর্মী ছিল, যাদের অর্ধেকেরও বেশি নারী। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হিসাবে, লেবানন ও জর্ডানসহ অন্যান্য আরব অঞ্চলে যে পরিমাণ বিদেশি গৃহকর্মী ও আয়া কাজ করেন, তা বিশ্বের অন্য কোনো অঞ্চলের চেয়ে বেশি।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, অনেক নিয়োগকর্তা শ্রমিকদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেন এবং তাদের কোনো ছুটি দেন না। কেউ কেউ কর্মীদের মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেন না। এছাড়া শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা তো খুবই সচরাচর ঘটে। বদ্ধ ঘর থেকে টেলিফোনে উগান্ডান জাস্টিন মুকিসা বলেন, আমাদের উদ্দেশ্যে খাবার ছুড়ে দেয়া হয়। আমরা তো মানুষ, জীবজন্তু নই।

গত ফেব্রুয়ারিতে কাজের সন্ধানে পর্যটক ভিসা নিয়ে কেনিয়া থেকে দুবাই আসেন ২৫ বছর বয়সী কেল্লে জোকি। কিন্তু এসেই বুঝতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী। এখন তিনি একটি জনাকীর্ণ ডরমিটরিতে ঘুমান। তার মাতৃত্বকালীন কোনো যত্ন নেই; ফিরে যাওয়ার জন্য ৪০০ ডলার বিমান ভাড়াও নেই। তিনি বলেন, ‘আমি সাত মাসের গর্ভবতী। এখানে আমি আমার বাচ্চাকে কীভাবে রাখব? আমি আটকে গেছি। আমার সত্যিই সাহায্য দরকার।’

রিয়াদে আরও আট নারীর সঙ্গে আটকে পড়া অ্যাপিসাকি গত মাসে কয়েক মাসের বেতন পরিশোধ না করে তাকে ছাঁটাই করা হলে আরও বিপদে পড়েন।

বিডি প্রতিদিন

শেয়ার করুন

সৌদিতে পশুর মতো মেঝেতে গৃহকর্মীর খাবার ছুড়ে দেয়া হয়

তারিখ : ০১:১১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুলাই ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি আরবে আটকে পড়া লাখো গৃহকর্মী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সোমবার নিউইয়র্ক টাইমস লোমহর্ষক এ বর্ণনা তুলে ধরেছে। গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত ৯ আফ্রিকান নারী লকডাউনের কারণে যখন চাকরি হারালেন, তখন নিয়োগকারী দালাল কয়েকটা পাতলা মাদুর দিয়ে তাদের একটি খালি ঘরে ঢুকিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল।

তাদের কেউ কেউ মার্চ থেকে সেখানে আছেন। একজন সাত মাসের গর্ভবতী হলেও প্রসূতি সেবা পাচ্ছেন না। আরেকজন মানসিকভাবে এমন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন যে নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেললে তাকে দেয়ালে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।

ওই নারীরা বলছেন, তাদের দিনে একবার খাবার দেয়া হয়। তাও পশুর মতো সামনে ছুড়ে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে কেনিয়া থেকে আসা আপিসাকি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে জানান, ‘আমরা সবাই আতঙ্কিত।
এখানকার পরিবেশ মোটেই ভালো না। কেউ আমাদের আওয়াজ শুনতে পায় না।’ বহু আরব দেশে পরিবারগুলো গাড়ি চালানো, ঘর পরিষ্কার রাখা এবং শিশু ও প্রবীণ স্বজনদের যত্ন নেয়ার জন্য এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে আসা লাখ লাখ প্রবাসী কর্মীর ওপর নির্ভর করে। তাদেরকে স্বল্প বেতন দিয়ে রাখা হয়, মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো একে দীর্ঘদিন ধরে ‘শোষণ ও নির্যাতনমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন।

শ্রমিক অধিকার কর্মীরা বলছেন, এখন মহামারী ও তার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা তাদের বিপদকে বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে। ভাইরাস বয়ে নিয়ে আসবে ভয়ে অনেক পরিবার গৃহকর্মীদের ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না। লকডাউনের কারণে পুরো পরিবার ঘরে থাকায় গৃহকর্মীদের কাজও অনেক বেড়ে গেছে।

পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের শ্রমিক অভিবাসন নিয়ে কর্মরত আবুধাবি ডায়ালগের এক গবেষণায় দেখা যায়, শুধু এই দেশগুলোতে ২০১৬ সালে প্রায় ৪০ লাখ অভিবাসী গৃহকর্মী ছিল, যাদের অর্ধেকেরও বেশি নারী। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হিসাবে, লেবানন ও জর্ডানসহ অন্যান্য আরব অঞ্চলে যে পরিমাণ বিদেশি গৃহকর্মী ও আয়া কাজ করেন, তা বিশ্বের অন্য কোনো অঞ্চলের চেয়ে বেশি।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, অনেক নিয়োগকর্তা শ্রমিকদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেন এবং তাদের কোনো ছুটি দেন না। কেউ কেউ কর্মীদের মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেন না। এছাড়া শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা তো খুবই সচরাচর ঘটে। বদ্ধ ঘর থেকে টেলিফোনে উগান্ডান জাস্টিন মুকিসা বলেন, আমাদের উদ্দেশ্যে খাবার ছুড়ে দেয়া হয়। আমরা তো মানুষ, জীবজন্তু নই।

গত ফেব্রুয়ারিতে কাজের সন্ধানে পর্যটক ভিসা নিয়ে কেনিয়া থেকে দুবাই আসেন ২৫ বছর বয়সী কেল্লে জোকি। কিন্তু এসেই বুঝতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী। এখন তিনি একটি জনাকীর্ণ ডরমিটরিতে ঘুমান। তার মাতৃত্বকালীন কোনো যত্ন নেই; ফিরে যাওয়ার জন্য ৪০০ ডলার বিমান ভাড়াও নেই। তিনি বলেন, ‘আমি সাত মাসের গর্ভবতী। এখানে আমি আমার বাচ্চাকে কীভাবে রাখব? আমি আটকে গেছি। আমার সত্যিই সাহায্য দরকার।’

রিয়াদে আরও আট নারীর সঙ্গে আটকে পড়া অ্যাপিসাকি গত মাসে কয়েক মাসের বেতন পরিশোধ না করে তাকে ছাঁটাই করা হলে আরও বিপদে পড়েন।

বিডি প্রতিদিন