মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স; কর্মস্থলে ৪ বছর অনুপস্থিত থেকেও বেতন তুলেছেন সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা!

আরিফ গাজী :

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ বছর ধরে কর্মস্থলে না এসেও নিয়মিত বেতন ভাতার প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা তুলার অভিযোগ মোসা: রহিমা বেগম নামের এক আয়ার বিরুদ্ধে। সে ১৯৯৫ সালের দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আয়ার চাকুরিতে নিযুুক্ত হয়। ২০১৯ সালের মাঝা মাঝি সময় চাকুরিরত অবস্থায় রহিমা বেগম শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে যান। ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও বিগত চার বছর ধরে শুধুমাত্র বেতন ও ভাতার টাকা উত্তোলনের সময় ছাড়া নিজ কর্মস্থলে দেখা যায় না তাকে।

নাম প্রকাশে অনচ্ছিক এক কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল কর্মকতার্ ও কর্মচারিদের ডিজিটাল হাজিরা (ফিঙ্গার প্রিন্ট) হাজিরার আওতায় আনা হলে রহিমা বেগমের ফিঙ্গার প্রিন্ট না নিয়ে স্বামী জামাল হোসেনের ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়া হয়। এর পর থেকে প্রতিদিন স্বামী জামাল হোসেন হাজিরা মেশিনে নিজের ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে হাজিরার উপস্থিতি দেখিয়ে আসছে। মূলত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বিগত ৪ বছর ধরে কোন রকম ছুটি ছাড়াই বছরের পর বছর কর্মস্থলে না এসেও প্রতি মাসে বেতনের ২৪ হাজার টাকা ও সরকারি সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা তুলে নিচ্ছেন রহিমা বেগম।

আয়া রহিমা বেগমের স্বামীর বাড়ি পরমতলা গ্রামের আব্দুল জলিল জানান, রহিমা বেগম তেমন কোন অসুস্থ না। তিনি বাড়িতে থেকে বিভিন্ন কৃষিকাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন সব সময। মূলত তার স্বামী জামাল হোসেন একটু অলস প্রকৃতির মানুষ শুনেছি সেজন্য হাসপাতালের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন যাবত স্বামীকে দিয়ে তার ডিউটি করাচ্ছে।

সকল অভিযোগ অস্বীকার করে আয়া রহিমা বেগম বলেন, একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আমি পায়ে ব্যথা পেয়ে প্রায় পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলাম। কয়েক বছর আমার চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হয়েছিল। তারপর থেকে নিয়মিত চিকিৎসার ফলে বর্তমানে আমি কিছুটা ভালো। আমি প্রতিদিনই হাসপাতালের ডিউটিতে যাই, অসুস্থতার কারণে আমি কাজ করতে পারি না বিধায় আমার স্বামী আমার উপস্থিতিতে কাজে সহযোগিতা করেন।
তবে স্বামী জামাল হোসেন স্ত্রীর অসুস্থতা নিয়ে বলছেন ভিন্ন কথা তিনি বলেন, আমার স্ত্রী দীর্ঘদিন যাবত পিঠের ব্যথা নিয়ে খুবই অসুস্থ। পরে আমি বড় স্যারদের হাতে পায়ে ধরে তার উপস্থিতিতে সকল কাজ করার অনুমতি নিয়ে আমি সব কাজ করি।

মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এনামুল হক বলেন, আমি এখানে দায়িত্ব নেয়ার পর রহিমা বেগমের বিষয়টি জানতে পারি। আসলে আমার আগে যে কর্মকর্তারা ছিলেন তারা নাকি রহিমা বেগমের অসুস্থতার কথা জেনে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রহিমা বেগমের উপস্থিতিতে স্বামীকে দিয়ে ডিউটি করার অনুমতি দিয়েছিলেন। তার পরেও বিষয়টিকে আমি যাচাই-বাছাই করে গুরুত্বসহকারে দেখছি।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!