দেশে শিশু, নারী, প্রতিবন্ধিদের ধর্ষণ বন্ধ করতে ধর্ষকদের ক্রসফায়ারে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সরকারি ও বিরোধী দলীয় এমপিরা। জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এই পৃথিবীতে তাদের (ধর্ষকদের) বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। ক্রস ফায়ারে আইন কোন প্রতিবন্ধক নয়। তাহলে দেশে তাদের ক্রসফায়ারে দিলে কোনো পাপ হবে না।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে চলতি সংসদের মঙ্গলবারের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। পরে এ বিষয়ে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, কাজী ফিরোজ রশীদ ও তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। এর আগেও একাধিক বার সংসদ থেকে এই দাবি জানানো হয়।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারতে একবার বাসে এক নারীকে ধর্ষণ করা হয়। পরে সেখানে ওই ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করে ক্রস ফায়ারে মেরে ফেলা হয়। তারপর ভারতে ধর্ষণের ঘটনা কমে যায়। কাজেই আমি অন্য দুই সদস্যের সাথে একমত।
আমি যদি চিনি যে উনি ধর্ষক, সেই এ কাজ করেছে তাহলে তাকে আর এই পৃথিবীতে থাকার অধিকার নেই।
জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, টাঙ্গাইলে বাসে ধর্ষণের পরপরই পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করল। সেদিন যদি পুলিশ ৫ জনকে মধুপুরে নিয়ে গুলি করে মারত, তাহলে কিন্তু আবার ধর্ষিত হত না। তিনি বলেন, একটার পর একটা ধর্ষণ হচ্ছে। মেয়েরা বাসে ওঠে ওই বাসে আগে থেকেই ৪-৫ জন থাকে। নারীরা ওঠার পর দেখা যায়, যাত্রী না -ওরা ধর্ষক। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের পর একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হোক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য, সেখানে গুলি করে মারা হোক।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমি সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাবো, এখন ধর্ষণ করলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আমার মনে হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে এই ধর্ষণ কন্ট্রোল যাচ্ছে না । আমার মনে হয় সময় এসেছে ধর্ষণে দায়ী ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করা হোক। এসময় তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার সরকার, আপনার মন্ত্রণালয় এত ক্রসফায়ার দিচ্ছে, সমানে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়, ধর্ষণের মত এরকম একটি জঘন্য অপরাধে এখনো আজ পর্যন্ত একজনও বন্দুকযুদ্ধে মারা গেল না! সরকারের কাছে আমার আবেদন থাকবে বিষয়টি সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। ক্রসফায়ার ছাড়া কোনক্রমেই এটি বন্ধ যাবে না। ধর্ষণে দায়ী ব্যক্তিদের সাজা বিষয়টি পত্রিকায় ভালোভাবে ছাপানোর দাবি জানান তিনি। আলোচিত শারমিন ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এর বিচার পেতে ১৬ বছর লেগেছে । তার পিতা এ দেশের স্বনামধন্য একজন শিল্পপতি। তাকে এই ধর্ষণ ও হত্যার বিচার নিয়ে কোটকাচারি করতে করতে গেছে ১৬ বছর। খরচ হয়েছে ৮ কোটি টাকা। আর একজনের মাত্র ফাঁসি হয়েছে।
এরপর মুজিবুল হক মাইজভান্ডারী বলেন, আমি টুপি মাথায় দিয়ে আল্লাহকে হাজির-নাজির করে বলছি, এদের ক্রসফায়ারে দিলে কোন পাপ হবে না বরং বেহেশতে যাওয়া যাবে।