রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪৬ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে পরিচয় মিলেছে ৪২ জনের। শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে তাদের মরদেহ শনাক্ত করেন স্বজনরা।
নিহতরা হলেন-
রাজধানীর কাকরাইলের ফৌজিয়া আফরিন (২২) ও তার বোন সাদিয়া আফরিন, মালিবাগের পপি রায় (৩৬), পুরান ঢাকার সম্পনা পোদ্দার (১১), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশরাফুল ইসলাম (২৫), আরামবাগের নাজিয়া আক্তার (৩১) ও তার ছেলে আরাহাম মোস্তফা (৬), পুরান ঢাকার নুরুল ইসলাম (৩২), কুমিল্লার সম্পা সাহা (৪৬), নারায়ণগঞ্জের শান্ত হোসেন (২৪), মতিঝিলের মায়শা কবির (২১) ও তার বোন মেহেরা কবির (২৯), ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক লুৎফুর নাহার করিম (৫০) ও তার মেয়ে জান্নাতিন তাজরী নিকিতা (২৩), মাদারীপুরের মোহাম্মদ জিহাদ (২২), যশোরের কামরুল হাসান (২০), ভোলা সদরের দিদারুল হক (২৩), মৌলভীবাজারের আতাউর রহমান (৬৫), টাঙ্গাইলের মেহেদী হাসান (২৭), কুমিল্লার নুসরাত জাহান (১৯),
মুন্সিগঞ্জের জারিন তাসনিম (২০), ঢাকার বাড্ডার জুয়েল গাজী (৩০), মালিবাগের রুবি রায় (৪০) ও তার মেয়ে প্রিয়াঙ্কা রায় (১৮), খিলগাঁওয়ের তুষার হাওলাদার (২৩), বাসাবোর কে এম মিনহাজ উদ্দিন (২৫), পাবনার সাগর (২৪), পিরোজপুরের তানজিলা নওরিন (৩৫), শেরপুরের শিপন (২১), বরিশালের আলিসা (১৩), বুয়েটের শিক্ষার্থী নাহিয়ান আমিন (১৯) ও লামিসা ইসলাম (২০), বরগুনার মো. নাঈম (১৮), দ্য রিপোর্ট ডটকমের প্রতিবেদক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী (২৫), কক্সবাজারের শাহজালাল উদ্দিন (৩৪), তার স্ত্রী মেহেরুন নেসা জাহান (২৪) ও তাদের সন্তান ফাইরুজ কাশেম জামিরা (৩)।
এছাড়া আগুনে নিহত এক পরিবারের পাঁচজন হলেন সৈয়দ মোবারক কাউসার (৪৮), তাঁর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৪০) এবং তাঁদের তিন সন্তান সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা (১৬), সৈয়দা আমেনা আক্তার (১৩) ও সৈয়দ আবদুল্লাহ (৮)। তারা ইতালিপ্রবাসী ছিলেন। বাংলাদেশে বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
২৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ ভবনে ভয়াবহ আগুন লাগে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো সাততলা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে। ভবনটির অধিকাংশ ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এরমধ্যে আগুনে হতাহতের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে দ্বিতীয় তলার কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে। এ রেস্টুরেন্ট থেকে কমপক্ষে ১৫টির বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ভবনটির নিচতলায় চায়ের চুমুক নামে একটি রেস্টুরেন্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে মুহূর্তে পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। মাত্র এক মাস আগে ভবনটির নিচতলায় চায়ের চুমুক রেস্টুরেন্টটি যাত্রা শুরু করেছিল।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জানিয়েছে, গ্রিন কোজি কোটেজ নামে ভবনটির ডেভেলপার আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ। ভবনটির সব ফ্লোর ব্যবহার হচ্ছিল বাণিজ্যিকভাবে। তবে রেস্টুরেন্টের জন্য ব্যবহারের কোনো অনুমতি ছিল না এ ভবনের।