হাটহাজারী প্রতিনিধি :
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে মহান আল্লাহতায়ালার ওপর ইমান এবং আকিদা বিশ্বাস ঠিক রেখে সচেতন থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
রোববার দুপুরে সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে আল্লামা বাবুনগরী এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস আজ বিশ্বে এক আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে ইসলামের নির্দেশনা ও আকিদা-বিশ্বাসের ঊর্ধ্বে গিয়ে আজ আমরা মিডিয়ার তালে তাল মেলাচ্ছি।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মিডিয়া করোনাভাইরাস নিয়ে এত বেশি মাতামাতি করছে যে, বর্তমানে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলেও তা কারও কাছে প্রকাশ করতে চাচ্ছে না। এমনকি মিডিয়ার থাবা থেকে বাঁচতে করোনায় আক্রান্ত রোগী হসপিটাল থেকে পালিয়ে নিজেকে লুকাতে চাচ্ছে।
আল্লামা বাবুনগরী আরও বলেন, মিডিয়ার প্রচারের দরুণ আজ মানুষ কর্মক্ষেত্রে না গিয়ে নিজ ঘরে নিজেকে অবরুদ্ধ করে রাখছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় অফিস-আদালত বন্ধ হচ্ছে। ব্যবসাবাণিজ্যসহ সব কিছুতেই এর প্রভাব পড়ছে। এর দরুণ বিশ্বময় যেই অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হতে যাচ্ছে, তা কেটে উঠতে হিমশিম খেতে হবে।
বাবুনগরী বলেন, অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে মসজিদে জামাত সহকারে নামাজ পড়তে নিষেধ করা হচ্ছে, জুমা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। কোরআন ও হাদিসের ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ওয়াজ মাহফিলে লোক সমাগমের দরুণ যদি তা বন্ধ করতে হয়, তা হলে পুরো দেশের বাজারগুলোতে তো লোক সমাগম আরও বেশি। সেগুলোর কি অবস্থা হবে! গার্মেন্টসে কি লোক কম? কোনো গার্মেন্টস তো বন্ধ হয়নি!
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে এই নাজুক মুহূর্তে মসজিদে মসজিদে বিশেষ দোয়া কুনুতে নাজেলা পাঠ ও মাদ্রাসায় বিভিন্ন দোয়া-দরুদ, খতমে কোরআন শরিফ, খতমে বুখারি শরিফ, দোয়ায়ে ইউনুসের আয়োজন করে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে মহান প্রভুর দরবারে কায়মনোবাক্যে রোনাজারির সহিত দোয়া করতে হবে। তাই এ মুহূর্তে সারা দেশে ইসলামবিরোধী সব কার্যক্রম বন্ধ করা সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
করোনা আক্রান্ত রোগীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিতে চিকিৎসকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রোগীর সেবা-শুশ্রূষা করা, তাকে সান্ত্বনা দেয়াকে সর্বোচ্চ সৎকাজ এবং গ্রহণযোগ্য ইবাদত হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, রাসুল (সা.) স্বয়ং রোগীদের ঘরে গিয়ে তাদের দেখাশোনা করতেন এবং তাদের সঙ্গে এমন কথা বলতেন, যাতে তাদের মনে প্রশান্তি আসত, দুশ্চিন্তা হালকা হয়ে যেত। হাদিস শরিফে আছে– রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা ক্ষুধার্তদের অন্ন দাও, রোগীদের সেবা কর এবং বন্দিদের মুক্তি দাও। আপনারা সেবার মহৎ কাজ করে যাচ্ছেন। এখলাস ও নিষ্ঠার সঙ্গে সেবার কাজ চালিয়ে যান, আল্লাহতায়ালার কাছে এর উত্তম বিনিময় পাবেন।