লাকসাম নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বাড়ী পরিদর্শনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত

আকবর হোসেন :

লাকসাম নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বাড়ি পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। গতকাল শনিবার দুপুরে কুমিল্লা জেলার লাকসাম পৌরশহরের পশ্চিমগাঁওয়ে ডাকাতিয়া নদীর তীর ঘেঁষে ঐতিহাসিক নবাব বাড়িটি পরিদর্শনে নিজ উদ্যোগে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

দুপুর ২ টা ২৯ মিনিটের সময় বাড়ির মূল ফটকে রাষ্ট্রদূতকে বরণের করেন প্রশাসন ও নেতৃবৃন্দ। এরপর নবাব ফয়জুন্নেছার অবদান ও কর্মকান্ডের নিদর্শন স্বরূপ বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ ঘুরে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। তার সফরকালে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন লাকসাম উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ইউনুছ ভুঁইয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সাইফুল আলম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার লাকসাম সার্কেল মহিতুল ইসলাম, লাকসাম পৌরসভা মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের, কুমিল্লা জেলা পরিষদের সদস্য এডভোকেট তানজিনা আক্তার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলী, লাকসাম থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন ভুঁইয়া, লাকসাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রফিকুল ইসলাম হিরা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজিয়া বিনতে আলম, নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বাবুল চন্দ্র দেবনাথ, নবাব পরিবারের উত্তরাধিকার ফজলে রহমান চৌধুরী আয়াজ, মাসুদুল হক চৌধুরীসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলের কারুকার্য দিয়ে নির্মিত ভারতীয় উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নবাব ও নারী আন্দোলনের প্রথম অগ্রদূত নবাব ফয়জুন্নেছার স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক এ বাড়িটি চমৎকার একটি স্থাপত্য, যা দক্ষিণ এশিয়ার সৌন্দর্যমন্ডিত বাড়িগুলোর অন্যতম।

স্মৃতিবিজড়িত এ বাড়িটি বছরের পর বছর অরক্ষিত থাকলেও সাম্প্রতিক এটিকে আকর্ষণীয় প্রতœপর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রায় ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বরাদ্দ পেলেই বদলে যেতে শুরু করবে বাড়িটি।

সৌন্দর্যমন্ডিত বাড়িটি ঘিরে দেখা দিতে পারে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা। কুমিল্লা জেলার লাকসাম পৌরশহরের পশ্চিমগাঁওয়ে ডাকাতিয়া নদীর তীর ঘেঁষে অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলাভূমি ঐতিহাসিক নবাব ফয়জুন্নেছার বাড়ির অবস্থান। ঐতিহ্যের ধারক বাড়িটির নির্মাণসাল নিয়ে মতান্তর রয়েছে।

কথিত আছে, উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বিয়ের ১৭ বছর পর তিনি জানতে পারেন তার স্বামী হাছান আলী জমিদারের আরেকজন স্ত্রী রয়েছেন। অসাধারণ ব্যক্তিত্ববান, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, দৃঢ়চেতা নবাব ফয়জুন্নেছা এটি মানতে পারেননি। তিনি পৃথক থাকার জন্য সাড়ে ৩ একর জমির ওপর তার বিয়ের কাবিনের ১ লাখ ১ টাকা দিয়ে এই বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়িটি নির্মাণ করতে প্রায় তিন বছর সময় লাগে।

ব্রিটিশ আমলে সিমেন্ট, রড, চুন ও সুরকি দিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। বাড়ির পশ্চিম পাশেই ১০ গম্বুজবিশিষ্ট একটি অনিন্দ্য স্থাপত্যশৈলীর পারিবারিক মসজিদ রয়েছে। মসজিদের পাশেই রয়েছে পারিবারিক কবরস্থান, যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন নবাব ফয়জুন্নেছাসহ তার বংশধরেরা। ২৫ সেপ্টেম্বর শনিবার লাকসামে এ প্রথম নবাব জমিদার বাড়িতে পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!