অন্যকে দায়ী করে হুদা কমিশনের বিদায়

অনলাইন ডেস্ক।।

নির্বাচনে অনিয়ম-সহিংসতার ঘটনা এবং এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যর্থতার দায় অন্যদের ওপর চাপিয়ে বিদায় নিলেন কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।

রাজনৈতিক দল, মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যম থেকে নির্বাচনি সহিংসতার তাৎক্ষণিক তথ্য না পাওয়ায় অনেক গুরুতর ঘটনার ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি-এমন দাবি করেন বিদায়ি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম।

এমনকি নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংসের যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা কীভাবে হয়েছে, সেটিও জানেন না বলে দাবি সিইসির।

সোমবার বিদায়ি সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন তারা। অন্যদিকে সিইসির সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরই নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার খোদ কমিশনের বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ তোলেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বড় দুর্বলতা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব, জালিয়াতি প্রভৃতি সম্পর্কে ভুক্তভোগীরা যেসব অভিযোগ করেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দৃষ্টান্ত বিরল। লিখিতভাবে যেসব অভিযোগ আসে, তারও যথাযথ নিষ্পত্তি হয় না।

নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে এমন পালটাপালটি অভিযোগের মধ্য দিয়ে নূরুল হুদা কমিশনের মেয়াদ শেষ হলো। সোমবার রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে নির্বাচন ভবন ত্যাগ করেন সিইসি ও তিন নির্বাচন কমিশনার। এর আগে নির্বাচন কর্মকর্তাদের দেওয়া সংবর্ধনাও নেন তারা।

ওই বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টার কিছু সময় পর পর্যন্ত। এরপর নির্বাচন কর্মকর্তাদের আয়োজনে নৈশভোজে অংশ নেন কমিশনাররা।

ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আগে বিদায়ের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিইসি দুই শতাধিক ফাইলে স্বাক্ষর করেন। এদিন নির্বাচন কমিশনের জেলা পর্যায়ের অন্তত ১৩ কর্মকর্তাকেও বদলি করেন।

২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পাঁচ বছর মেয়াদ সোমবার শেষ হলো। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি কাজ করছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নতুন কমিশনার গঠন না হওয়া পর্যন্ত আগামী কয়েকদিন কমিশনার পদ ফাঁকা থাকছে।

বিদায়ের দিনেও নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে বিভক্তি ছিল প্রকাশ্য। নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী অসুস্থ থাকায় এদিন অফিস করেননি। সিইসি ও বাকি তিন কমিশনার অফিস করেছেন।

সিইসির বিদায়ি সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার অংশ নেননি। তিনি পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। মুক্তভাবে কথা বলতেই তিনি পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেন বলে জানান।

এছাড়া কমিশনের সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারও উপস্থিত ছিলেন না। ওই সময়ে তিনি কার্যালয়ে ছিলেন। তার পরিবর্তে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ অংশ নেন।

এই কমিশনের সময়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনের ব্যাপারে ব্যাপক অনিয়ম ও সহিংসতার অভিযোগ ওঠে। তবে কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রশংসিত হয়।

এছাড়া প্রবাসীদের ভোটার কার্যক্রম শুরু করলেও করোনায় আটকে যায়। ভোটে ইভিএম প্রযুক্তির ব্যবহার ফিরিয়ে আনে এ কমিশন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’খচিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে আলোচিত হয়।

ইসি জানায়, এই কমিশন পাঁচ বছরে রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদ, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ছয় হাজার ৬৯০টি নির্বাচন করেছে।

কুমিল্লা, রংপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ছাড়া বাকি নির্বাচন নিয়ে বর্তমান কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠে।

নির্বাচনে অনিয়ম ও সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া, বক্তৃতার নামে টাকা নেওয়া, আরপিও থেকে প্রার্থিতা বাতিলে ইসির ক্ষমতাসম্পন্ন ধারা ৯১ই বাদ দেওয়ার উদ্যোগ এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে পুরো মেয়াদেই বিতর্ক ও সমালোচনা ছিল।

যদিও ওইসব অভিযোগ বরাবরের মতো সোমবারও নাকচ করলেন সিইসি। সুষ্ঠু নির্বাচনের দায় রাজনৈতিক দলসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্টদের ওপর ছেড়ে দিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই।

নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা দুষ্কর। রাজনৈতিক দল, তাদের কর্মী, সমর্থক এবং প্রার্থী যদি নির্বাচনি আইন ও আচরণবিধি যথাযথ মেনে চলেন তবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা।

বর্তমান কমিশনের বিরুদ্ধে নির্বাচনব্যবস্থায় গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ, অসদাচরণ ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ করেন দেশের ৪২ নাগরিক। ওই অভিযোগ সব অসত্য বলেও দাবি করেন সিইসি।

এমনকি নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংসের দায়ভার নিতে অস্বীকার করেন তিনি। এ সময় তিনি ইউনিয়ন পরিষদে বিভিন্ন ধাপে ভোট পড়ার

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!