আরিফ গাজী।।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাদরাসা পরিচালকসহ ২ জনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রহিমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকসহ এলাকাবাসী জড়ো হয়ে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেছে।
এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি ও ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আহতরা হলেন, উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের মৃত কাজী সাইদুর রহমানের ছেলে ও রহিমপুর হেজাজিয়া এতিমখানা মাদরাসার পরিচালক কাজী মোহাম্মদ লোকমান (৫২) ও তার ছেলে মেহেদী হাসান (২৩) এবং একই গ্রামের মৃত আনছর আলীর ছেলে ময়নাল হোসেন (৬৫)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউপি নির্বাচনের পূর্ব থেকেই রহিমপুর গ্রামের কাজী মোহাম্মদ লোকমান ও আশরাফ মেম্বারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। তারই জের ধরে লোকমান অনুসারীরা শনিবার বিকেলে সদরের আল্লাহু চত্বর এলাকায় আশরাফ মেম্বারের অনুসারী শাহআলমকে মারধর করে।
এ খবর আশরাফ মেম্বারের লোকজনের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে, তারা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেট দিয়ে রহিমপুর হেজাজিয়া এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদরাসার পরিচালক কাজী মোহাম্মদ লোকমান, তার সাথে থাকা সাবেক ইউপি সদস্য ময়নাল হোসেনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। বাবার উপর আক্রমনের খবর শুনে কাজী মোহাম্মদ লোকমানের ছেলে মেহেদী হাসান এগিয়ে এলে তাকেও বেধরক পিটিয়ে আহত করে। ঘটনাস্থল থেকে এলাকাবাসী তাদেরকে উদ্ধার করে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভতি করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: নাজমুল আলম বলেন, আহত কাজী মোহাম্মদ লোকমান ও ময়নাল হোসেনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। কারণ তাদের মাথায়, পেটে, পিঠে, হাতে পায়ে মারাত্মক ভাবে জখম হয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে।
আহত কাজী লোকমান বলেন, বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ময়নাল মেম্বারকে সাথে নিয়ে মাদরাসা থেকে বের হয়ে ২শত গজ সামনে গেলেই, কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই আশরাফ মেম্বারের ছোট ভাই আবুবকর রামদা দিয়ে আমার মাথায় কুপ দেয়। ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর এলোপাতারী লোহার পাইপ দিয়ে পিটাতে থাকলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি হাসপাতালের বেডে।
ইউপি সদস্য আশরাফ মেম্বার বলেন, আমি বিশেষ একটি কাজে ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলায় গিয়ে ছিলাম। এসে শুনি বিকেলে আমার আত্মীয় শাহআলমকে লোকমানের লোকজন মারধর করে। এ ঘটনার জের ধরে তাদের উপর আবার পাল্টা হামলা হয়েছে।
খবর পেয়ে এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এমপি সন্ত্রাসী হামলায় আহত কাজী লোকমান ও ময়নাল হোসেনকে দেখতে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান এবং উপস্থিত সকলকে আইনের উপর আস্থা রেখে ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দেন।
মুরাদনগর থানার ওসি আবুল হাসিম বলেন, উভয় পক্ষ পরবর্তীতে যেন আর কোন ঘটনা না ঘটাতে পারে সেজন্য ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন করেছি। অভিযোগ পেলে মামলা রুজু করা হবে।