অনলাইন ডেস্ক :
গোটা বিশ্বকেই গ্রাস করতে চলেছে করোনাভাইরাস। পরিস্থিতিকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।
একের পর এক দেশ নিজেদের বিছিন্ন করে নিয়েছে।
এদিকে করোনা প্রতিরোধে নানা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে এসব গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।
তেমনি এক গুজবের জেরে দেড়শ টাকার মুরগির দাম ১০ টাকায় নেমে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্রে।
সেখানে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব রটেছে, মুরগি ও ছাগল করোনাজীবাণু বহন করে। এমনকি মুরগির ডিমের কুসুমেও করোনার অস্তিত্ব রয়েছে।
এমন গুজবের জেরে বর্তমানে মুরগি ও ডিম খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন ভারতীয়রা। ফলে মাত্র ১০ রুপিতেই আস্ত একটি মুরগি পাওয়া যাচ্ছে সেখানে।
এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে, মুরগি হাতে নিয়ে বাজারে ১০ রুপি হাঁকছেন বিক্রেতারা।
ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, করোনার আতঙ্কে ৯০ শতাংশ লোকসানে পড়েছে ভারতের মহারাষ্ট্রের পোলট্রির ব্যবসায়ীরা। কয়েক সপ্তাহ আগেও ৮০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে এক কেজি মুরগি পাওয়া যেত সেখানে। এখন ১০ টাকায় মিলছে প্রতিটি মুরগি।
এ বিষয়ে পুনের এক পোলট্রি ফার্মের মালিক প্রমোদ হিঙ্গে বলেন, ‘করোনা আতঙ্কে মুরগির চাহিদা একেবারে নিম্মগামী। মুরগির দাম এতোই কমেছে যে আমার প্রায় ১০ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। বাজারে মুরগির চাহিদা না থাকায় নামমাত্র দামে মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।’
প্রমোদ হিঙ্গের মতো সর্বশান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রের আরো অনেক পোলট্রি চাষি। মোট ৭০০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তারা। বর্তমানে ১০ থেকে ২০ টাকায় প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি করছেন তারা।
এদিকে করোনা বিস্তারে গুজবে কান না দিতে আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের পশুপাল বিভাগ ও ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, করোনার বিস্তারে মুরগির কোনো সম্পর্ক নেই।
এরপরও গুজবে রটানো বন্ধ হচ্ছে না।
এর কারণ হিসাবে সংস্থার প্রধান বসন্ত কুমার শেট্টি বলেন, ‘মুরগিতে বার্ড ফ্লুর ঘটনা মানুষ মনে রেখেছে। ওই বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই ভীত হয়ে আছে মানুষ। যে কারণে মুরগি থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানো গুজব মানুষ চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করছে।’
উল্লেখ্য, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দেয়া সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রোববার রাত পর্যন্ত করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১১২ জনে দাঁড়িয়েছে। ১৯টি করোনা আক্রান্তের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। যার ১৫টি ঘটনাই মহারাষ্ট্রের। আক্রান্তদের মধ্যে ১৭ জন বিদেশি পর্যটক। আক্রান্ত ১০ জন এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
মহারাষ্ট্র প্রশাসন জানায়, এখন পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে ৩৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাই আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ এবং শপিংমল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য গুজরাটে মহামারী ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা মোকাবেলার জোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে সেখানে। অঙ্গনওয়াড়িসহ রাজ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২৯ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।