০৩:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রসূতি মুসলিম হওয়ায় ভর্তি নিল না হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্সে প্রসবের পর নবজাতকের মৃত্যু

  • তারিখ : ০১:৪৯:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ এপ্রিল ২০২০
  • / 1211

অনলাইন ডেস্ক : অন্তঃসত্ত্বা নারী মুসলিম হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি না করার অভিযোগ উঠেছে ভারতের রাজস্থানের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। পরে ওই নারী অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে প্রসব করলেও সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়।

রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে নবজাতকের মৃত্যুর জন্য জেলা প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন ওই নারীর স্বামী ইরফান খান।

তার অভিযোগ, ‘আমার স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সিকরি এলাকার স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে আমাদের ভরতপুরের মহিলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে ডাক্তাররা জানিয়ে দেন, যেহেতু আমরা মুসলিম, তাই আমাদের জয়পুরে যেতে হবে।’

‘অ্যাম্বুলেন্সে করে জয়পুরে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রী সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু আমাদের সন্তান বাঁচেনি। আমাদের সন্তানের মৃত্যুর জন্য জেলা প্রশাসনই দায়ী।’

এ ব্যাপারে ভরতপুরের মহিলা হাসপাতালের প্রিন্সিপাল রূপেন্দ্র ঝার বলেন, ‘এক অন্তঃসত্ত্বা নারী এসেছিলেন। অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় ওই নারীকে জয়পুরে রেফার করা হয়েছিল। তবে কোনো ত্রুটি ঘটে থাকলে তার তদন্ত করা হবে।’

এদিকে ঘটনাটি নিয়ে সরব হয়েছে রাজস্থানের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের অন্দর। রাজস্থানের পর্যটনমন্ত্রী বিশেন্দ্র সিংহ বলেছেন, ‘মুসলিম নারীকে ধর্মের জন্য ভরতপুরের মহিলা হাসপাতাল থেকে জয়পুরে পাঠানো হলো। ভরতপুরের বিধায়কই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বিষয়টি লজ্জাজনক।’

তার দাবি, ভরতপুর হাসপাতালের গাইনোকোলজি বিভাগের ডা. মোনিত ওয়ালিয়াই ধর্মের জন্য ওই নারীকে ভর্তি করতে চাননি। এটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, ‘ভরতপুরের হাসপাতালের কর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত। এমন ঘৃণার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে যে তার ফলেই প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ। এখন কি মুসলিমরা হাসপাতালেও যাওয়া বন্ধ করে দেবেন? মৌলবাদী হিন্দুত্ব কি সরকারি প্রশ্রয় পাচ্ছে? না সমাজের বড় অংশই মৌলবাদকে সমর্থন করছে? এই অবস্থা বদলাতে কোনো পদক্ষেপ করা হবে কি।’

শেয়ার করুন

প্রসূতি মুসলিম হওয়ায় ভর্তি নিল না হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্সে প্রসবের পর নবজাতকের মৃত্যু

তারিখ : ০১:৪৯:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ এপ্রিল ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : অন্তঃসত্ত্বা নারী মুসলিম হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি না করার অভিযোগ উঠেছে ভারতের রাজস্থানের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। পরে ওই নারী অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে প্রসব করলেও সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়।

রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে নবজাতকের মৃত্যুর জন্য জেলা প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন ওই নারীর স্বামী ইরফান খান।

তার অভিযোগ, ‘আমার স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সিকরি এলাকার স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে আমাদের ভরতপুরের মহিলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে ডাক্তাররা জানিয়ে দেন, যেহেতু আমরা মুসলিম, তাই আমাদের জয়পুরে যেতে হবে।’

‘অ্যাম্বুলেন্সে করে জয়পুরে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রী সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু আমাদের সন্তান বাঁচেনি। আমাদের সন্তানের মৃত্যুর জন্য জেলা প্রশাসনই দায়ী।’

এ ব্যাপারে ভরতপুরের মহিলা হাসপাতালের প্রিন্সিপাল রূপেন্দ্র ঝার বলেন, ‘এক অন্তঃসত্ত্বা নারী এসেছিলেন। অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় ওই নারীকে জয়পুরে রেফার করা হয়েছিল। তবে কোনো ত্রুটি ঘটে থাকলে তার তদন্ত করা হবে।’

এদিকে ঘটনাটি নিয়ে সরব হয়েছে রাজস্থানের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের অন্দর। রাজস্থানের পর্যটনমন্ত্রী বিশেন্দ্র সিংহ বলেছেন, ‘মুসলিম নারীকে ধর্মের জন্য ভরতপুরের মহিলা হাসপাতাল থেকে জয়পুরে পাঠানো হলো। ভরতপুরের বিধায়কই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বিষয়টি লজ্জাজনক।’

তার দাবি, ভরতপুর হাসপাতালের গাইনোকোলজি বিভাগের ডা. মোনিত ওয়ালিয়াই ধর্মের জন্য ওই নারীকে ভর্তি করতে চাননি। এটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, ‘ভরতপুরের হাসপাতালের কর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত। এমন ঘৃণার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে যে তার ফলেই প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ। এখন কি মুসলিমরা হাসপাতালেও যাওয়া বন্ধ করে দেবেন? মৌলবাদী হিন্দুত্ব কি সরকারি প্রশ্রয় পাচ্ছে? না সমাজের বড় অংশই মৌলবাদকে সমর্থন করছে? এই অবস্থা বদলাতে কোনো পদক্ষেপ করা হবে কি।’