আরিফ গাজী :
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ৯নং কামাল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাতা এবং সহায়তা দেওয়ার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চেয়ারম্যান পরিবারটি প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে তাদের বিরুদ্ধে কেউ ইতিপূর্বে মুখ না খুললেও মঙ্গলবার এলাকায় সাংবাদিক এসেছে এমন খবরে ভূক্তভোগিরা জড়ো হয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া বিভিন্ন ভোগান্তির কথা বলে।
জানা যায়, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে ক্ষেত্র বিশেষ ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন ইউপি সদস্যরা। ইউপি সদস্যদের আদায়কৃত টাকাও আবার নির্ধারণ করে দিয়েছেন চেয়ারম্যন নিজেই। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরেও ওই ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক গরীব, অসহায় লোক তাদের কাঙ্খিত সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে অধিকাংশ অভিযোগই ১নং ওয়ার্ডের সদস্য কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
বয়স্ক ভাতার নামে কামাল্লা গ্রামের মৃত অলেক মিয়ার স্ত্রী মায়া বেগমের কাছ থেকে দুই হাজার, মৃত মালেক মিয়ার স্ত্রী আয়শা খাতুনের কাছ থেকে তিন হাজার, মৃত শহিদ মিয়ার স্ত্রী শিরিনা আক্তারের কাছ থেকে দেড় হাজার, মৃত হেকমত আলীর স্ত্রী আয়শা বেগমের কাছ থেকে দেড় হাজার, মৃত জহর মিয়ার স্ত্রী আছিয়া খাতুনের কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার, মৃত সাদত খানের ছেলে শেখ ফরিদের কাছ থেকে দুই হাজার, মৃত সোনা মিয়ার ছেলে ময়নাল মিয়ার কাছ থেকে দুই হাজার, মৃত নোয়াজ আলীর ছেলে আব্দুর রব থেকে তিন হাজার নেয়।
বিধবা ভাতার নামে কামাল্লা গ্রামের মৃত নুরু মিয়ার স্ত্রী হাফেজা খাতুনের কাছ থেকে সাড়ে চার হাজার, মৃত আলী আকবরের স্ত্রী রাজিয়া খাতুনের কাছ থেকে তিন হাজার, মৃত ছিদ্দিক মিয়ার স্ত্রী ছালেহা বেগমের কাছ থেকে দুই হাজার, মৃত লাতু মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের কাছ থেকে চার হাজার দুইশ’ মৃত রোকন উদ্দিনের স্ত্রী সাজেনা বেগমের কাছ থেকে চার হাজার, মৃত মোহন মুন্সীর স্ত্রী হনুফা বেগমের কাছ থেকে তিন হাজার, মৃত বিশ্বজিত চন্দ্র দাসের স্ত্রী আধুরী রানী দাসের কাছ থেকে আড়াই হাজার, মৃত হবি মিয়ার স্ত্রী ঝরণা বেগমের কাছ থেকে তিন হাজার নেয়।
অভিযুক্ত ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন বলেন, ভূক্তভোগিদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে এ অভিযোগ সঠিক, তবে এই টাকা আমি ধরি নাই। ইউপি সচিব আবু সাইম ও সমাজ সেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজ কর্মী সাবিনা ইয়াছমিনকে নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে হয়। দীর্ঘদিন যাবত এ অবস্থা চলে আসছে। চেয়ারম্যানের অবর্তমানে তার ছেলে আবুল বাশার খান ইউনিয়ন পরিষদের সবকিছু দেখভাল করছেন। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রতিহিংসামূলক।
এ ব্যাপারে কামাল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ খাঁন বলেন, অসুস্থতার কারণে আমি দীর্ঘদিন ঘর থেকে বের হইনা। বিশেষ কোন স্বাক্ষরের প্রয়োজন হলে আমার কাছে নিয়ে আসলে আমি স্বাক্ষর দিয়ে দেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার অবর্তমানে মেম্বার কামাল উদ্দিন বিভিন্ন বিষয়গুলো দেখবাল করছেন। কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভাতার কার্ড দেওয়া হয় নাই এমন ঘটনা আমাকে কেউ জানায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশ বলেন, এ বিষয়ে আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। খুব সহসায় বিষয়টি তদন্ত করে দোষী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।