আরিফ গাজী :
“আম জাম বড়ই পেপে পাকা আনারস, এলো আবার মধু মাস রসে টসটস।” বাহারি রসালো ফলের সমারোহ নিয়ে এলো জৈষ্ঠ্য মাস। হাটে-বাজারে, রাস্তায়-ফুটপাতে, শহরে-গ্রামে এখন শুধু বিভিন্ন রসালো ফলের সমারোহ। দেখলেই যেন জিভে জল এসে যায়। এমন-ই এক রসালো ফল তালের শাঁস। গরমে শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে এ ফল। সহজলভ্য ও মুখরোচক হওয়ায় এ সময় বিভিন্ন বয়সী মানুষের পছন্দের তালিকায় থাকে তালশাঁস। তালের নরম কচি শাঁস খেতে সুস্বাদু হওয়ায় তীব্র গরমে এর কদর বেড়েছে দ্বিগুন।
বহু বছর ধরে তালের শাঁস বিক্রি করে আসা উপজেলার ভুবনঘর গ্রামের সফিকুল ইসলাম (৫০) বলেন, প্রতি বছরই এ সময়ে তালের শাঁস বিক্রি করে সংসার চালাই। প্রাম অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তাল ক্রয় করে গাছ থেকে কেটে এনে শাঁস বিক্রি করি। জৈষ্ঠ্যে মাস পর্যন্ত চলে তালের শাঁস বিক্রি। প্রতিদিন প্রায় ৫৫০ থেকে ৬০০ টি তাল বিক্রি করা যায়। একটি শাঁস (চোখ) আকার ভেদে ৫ থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি করি। প্রতিদিন প্রায় চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি হয়। এতে যা লাভ হয় খারাপ না। তবে দিন দিন যে পরিমানে তাল গাছ কমে যাচ্ছে আগামী কয়েক বছর পরে হয়তো এ ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।
তাল ক্রয় করতে আশা আবু কাউছার জানান, তীব্র গরমে ফলে গত বছরের তুলনায় এবছর তাল শাঁসের দাম অনেকটাই বেশি। তারপরও মৌসুমি ও সুস্বাদু ফল হওয়ায় বেশি দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে।
সুস্বাদু এই তালের শাঁসের গুনাগুন সম্পর্কে উপজেলা সদরের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ডাঃ ইকবাল নিজামী বলেন, এটি একটি মৌসুমি ফল। তালের শাঁস শরীরকে নানা রোগ থেকে রক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। তালের শাঁসের জলীয় অংশ শরীরের পানিশূন্যতা দূর করে। প্রাকৃতিকভাবে দেহকে রাখে ক্লান্তিহীন।
তালের শাঁসে বিদ্যমান ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্স পানি পানের তৃপ্তি বাড়ায়। এ ছাড়া রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে, এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বমিভাব আর বিস্বাদ দূর করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তালের শাঁস।