০৮:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পিস্তল নিয়ে গ্রেফতার হওয়া রাসেল সদর দক্ষিণ উপজেলা যুবদলের কেউ নয়- সায়েম মজুমদার  নাঙ্গলকোটে মহিলাদল আদ্রা উওর ইউনিয়ন কমিটি গঠন করার লক্ষে মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় সুদের টাকা আদায়ে বৃদ্ধকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন কুমিল্লায় ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে কিশোর কুমিল্লায় চাঁদাবাজবিরোধী অভিযানে হামলা, আহত ৩ পুলিশ সদস্য ইউসুফ মোল্লা টিপুকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে যৌথ বিবৃতি কুমিল্লায় যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল কুমিল্লা সদর দক্ষিণে পিস্তলসহ যুবদল কর্মী আটক দুর্গাপূজায় ৯ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় হানিফ ফ্লাইওভারে বাস-সিএনজি সংঘর্ষ, নিহত ২

মুরাদনগরে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

  • তারিখ : ০৭:৩৯:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২
  • / 674

আরিফ গাজী :

মুরাদনগরে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহিন আক্তার মায়ার বিরুদ্বে রবিবার (১৭ এপ্রিল) থেকে প্রশাসনের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। যা নববর্ষ, শুক্রবার ও শনিবার অফিসিয়াল কার্যক্রম বন্ধ থাকায় স্থগিত ছিল।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিন সদস্য বিশিষ্ট যে তদন্ত কমিটি গঠন করেন তার প্রধান উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) সুমাইয়া মমিন এর সাথে কথা বলে জানা যায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তবে অফিস বন্ধ থাকায় চিঠি হাতে পাইনি। রবিবার চিঠি হাতে আসার সাথে সাথেই তদন্তের কার্যক্রম শুরু করা হবে। সকল প্রশিক্ষণার্থীরা আশা করছে একটি সুষ্ঠু তদন্ত হবে।

উল্লেখ্য যে, মুরাদনগর মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহিন আক্তার মায়ার বিরুদ্বে ১২ জন প্রশিক্ষাণার্থীর দেয়া অভিযোগে লিখা ছিল, জাতীয় মহিলা সংস্থার আওতাধীন ২০২১-২২ অর্থ বছরে ‘তৃণমূল পর্যায়ের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প’র অধীনে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ই-কমার্স, ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে প্রশিক্ষন দেয়া হয় ২শ ৮৯ জনকে। যা গত ১৪ই মার্চ ২০২২ ইং তারিখ সম্পূর্ণ হয়। তাদের মধ্যে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা ধার্য ছিলো ৬ হাজার এবং ৮০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ১২ হাজার টাকা। কিন্তু প্রশিক্ষন শেষে টাকার চেক আনতে গেলেই মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তার মায়াকে দিতে হয় দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা। তাছাড়াও প্রশিক্ষন চলাকালিন সময়ে বিভিন্ন অযুহাতে একশ থেকে তিন’শ টাকা নিতেন অফিস খরচ দেখিয়ে।

অভিযোগে আরো উল্লেখ রয়েছে যে, তার চাহিদা মতো টাকা না দেয়া প্রায় ১শ ৮০ জনের ভাতার চেক সে এখনো হস্তান্তর করছে না। এই বিষয়ে কয়েকজন প্রশিক্ষনার্থী তার সাথে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে তাদের কে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেন শাহিন আক্তার মায়া।

এই বিষয়ে প্রশিক্ষণার্থী রোকসানা খাতুন, তানজিনা আক্তার, খাদিজা আক্তার ও মঞ্জু বেগম, বলেন, ‘আমরা একসাথে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ৮৯ জন ও ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ২শ জন। যারা ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিল তাদের কাছ থেকে আমাদের চেয়ারম্যান মায়া মেডাম অগ্রিম ২ হাজার করে টাকা নিয়ে পরে ৬ হাজার টাকার চেক দিছে। আর যারা ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাদেরকে বলা হইছে প্রত্যেকে ৪ হাজার টাকা করে চেয়ারম্যান মেডামের কাছে অগ্রিম জমা দিতে। তবেই তিনি সকলকে ১২ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করবেন। আমরা অনেকেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান মেডাম নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে বলছে যারা টাকা দিবিনা তাগরে ইয়াবা দিয়া ধরাইয়া দিমু তখন বুজবি মজা।’

অভিযুক্ত মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তার মায়া মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। কেউ নিয়ে থাকলে আমার তা জানা নেই। ২০১০ সাল থেকে আমি এই চেয়ারে আছি এখন পর্যন্ত আমার বিরুদ্বে এই ধরণের অভিযোগ আনার সাহস করা হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, প্রশিকাষণার্থীদের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ভূমি কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থা-মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব মুঠোফোনে বলেন, প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে অভিযোগ প্রমানিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

মুরাদনগরে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

তারিখ : ০৭:৩৯:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২

আরিফ গাজী :

মুরাদনগরে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহিন আক্তার মায়ার বিরুদ্বে রবিবার (১৭ এপ্রিল) থেকে প্রশাসনের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। যা নববর্ষ, শুক্রবার ও শনিবার অফিসিয়াল কার্যক্রম বন্ধ থাকায় স্থগিত ছিল।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিন সদস্য বিশিষ্ট যে তদন্ত কমিটি গঠন করেন তার প্রধান উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) সুমাইয়া মমিন এর সাথে কথা বলে জানা যায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তবে অফিস বন্ধ থাকায় চিঠি হাতে পাইনি। রবিবার চিঠি হাতে আসার সাথে সাথেই তদন্তের কার্যক্রম শুরু করা হবে। সকল প্রশিক্ষণার্থীরা আশা করছে একটি সুষ্ঠু তদন্ত হবে।

উল্লেখ্য যে, মুরাদনগর মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহিন আক্তার মায়ার বিরুদ্বে ১২ জন প্রশিক্ষাণার্থীর দেয়া অভিযোগে লিখা ছিল, জাতীয় মহিলা সংস্থার আওতাধীন ২০২১-২২ অর্থ বছরে ‘তৃণমূল পর্যায়ের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প’র অধীনে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ই-কমার্স, ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে প্রশিক্ষন দেয়া হয় ২শ ৮৯ জনকে। যা গত ১৪ই মার্চ ২০২২ ইং তারিখ সম্পূর্ণ হয়। তাদের মধ্যে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা ধার্য ছিলো ৬ হাজার এবং ৮০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ১২ হাজার টাকা। কিন্তু প্রশিক্ষন শেষে টাকার চেক আনতে গেলেই মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তার মায়াকে দিতে হয় দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা। তাছাড়াও প্রশিক্ষন চলাকালিন সময়ে বিভিন্ন অযুহাতে একশ থেকে তিন’শ টাকা নিতেন অফিস খরচ দেখিয়ে।

অভিযোগে আরো উল্লেখ রয়েছে যে, তার চাহিদা মতো টাকা না দেয়া প্রায় ১শ ৮০ জনের ভাতার চেক সে এখনো হস্তান্তর করছে না। এই বিষয়ে কয়েকজন প্রশিক্ষনার্থী তার সাথে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে তাদের কে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেন শাহিন আক্তার মায়া।

এই বিষয়ে প্রশিক্ষণার্থী রোকসানা খাতুন, তানজিনা আক্তার, খাদিজা আক্তার ও মঞ্জু বেগম, বলেন, ‘আমরা একসাথে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ৮৯ জন ও ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ২শ জন। যারা ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিল তাদের কাছ থেকে আমাদের চেয়ারম্যান মায়া মেডাম অগ্রিম ২ হাজার করে টাকা নিয়ে পরে ৬ হাজার টাকার চেক দিছে। আর যারা ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাদেরকে বলা হইছে প্রত্যেকে ৪ হাজার টাকা করে চেয়ারম্যান মেডামের কাছে অগ্রিম জমা দিতে। তবেই তিনি সকলকে ১২ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করবেন। আমরা অনেকেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান মেডাম নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে বলছে যারা টাকা দিবিনা তাগরে ইয়াবা দিয়া ধরাইয়া দিমু তখন বুজবি মজা।’

অভিযুক্ত মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তার মায়া মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। কেউ নিয়ে থাকলে আমার তা জানা নেই। ২০১০ সাল থেকে আমি এই চেয়ারে আছি এখন পর্যন্ত আমার বিরুদ্বে এই ধরণের অভিযোগ আনার সাহস করা হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, প্রশিকাষণার্থীদের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ভূমি কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থা-মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব মুঠোফোনে বলেন, প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে অভিযোগ প্রমানিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।