হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এড.আহমেদ আলী

হালিম সৈকত :
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ,বিশিষ্ট ভাষা সৈনিক,মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর অ্যাডভোকেট আহমেদ আলীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার বাদ আসর কুমিল্লা টাউন হল মাঠে। জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল নামে। কুমিল্লা উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলা আ’লীগের সকল নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ এতে নেন।
জানার আগে প্রিয় নেতাকে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের জনগণ। পরে বর্ষিয়ান এই নেতাকে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একটি চৌকষ দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। মুক্তিযুদ্ধ কমান্ড কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধের পতাকা দিয়ে ও জেলা প্রশাসন জাতীয় পতাকা দিয়ে এই নেতার মরহেদ ঢেকে দেন।
সাংবাদিক আবুল কাশেম হৃদয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি শোকবার্তা পড়ে শোনান। প্রধানমন্ত্রী তাঁর শোকবার্তায় বলে, এডভোকেট আহমদ আলী ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন ঘনিষ্ঠ সহচর। প্রবীণ এই নেতার প্রয়াণে জাতি হারাল একজন মুক্তিযোদ্ধের সংগঠককে, আমরা হারালাম একজন অভিভাবককে। তাঁর এই প্রয়াণ দেশ ও জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এর আগে মরহুমকে নিয়ে কথা বলেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক, নবীনগর উপজেলার সাবেক এমপি শাহ জিকরুল আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার) পিপিএম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. শফিউল আহমেদ বাবুল, কুমিল্লা উত্তর জেলা আ’লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিন ভুইয়া, সাবেক জেলা পরিষদের প্রশাসক আলহাজ¦ মো. ওমর ফারুক,কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন খান জম্পি, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল, ভাইস চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম জুয়েল, তিতাস উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. পারভেজ হোসেন সরকার, দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজর (অব:) মোহাম্মদ আলী সুমন, জেলা আ’লীগের সদস্য নুর-উর-রহমান মাহমুদ তানিম ও কুমিল্লা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ নুরুর রহমান প্রমুখ।

উল্লেখ্য বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ছিলেন একজন ভাষা সৈনিক,মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর। প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে এই ভাষা সৈনিক রাজধানীর অ্যাপোলো হসপিটালে শুক্রবার দিবাগত রাত ১.৪৭ মিনিটে ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। তিনি পাঁচ মেয়ে এবং চার ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
স্বাধীনতা উত্তর কুমিল্লা জেলার প্রথম প্রশাসক অ্যাডভোকেট আহমেদ আলীর প্রথম নামাজের জানাযা তার গ্রামের বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কাজলিয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার বাদ আছর কুমিল্লা টাউন হল মাঠে দ্বিতীয় নামাজের জানাযা শেষে তাকে কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠার মহিন্দ্রক্ষনে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তিত্ব এড.আহমেদ আলী। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে কুমিল্লায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
বিজ্ঞ এ নেতা ১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের গণপরিষদ নির্বাচনে বৃহত্তর কুমিল্লা-৫ আসনের (বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫) এমএলএ নির্বাচিত হন। যা ১৯৭১ সালে এমসিএতে রূপান্তরিত হয়। কুমিল্লা আওয়ামী লীগের প্রথম প্রশাসক আহমেদ আলী নেতৃত্ব দিয়েছেন ভাষা আন্দোলনে। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ এ সহচর ১৯৫৩ সালে কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ছিলেন স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান। তিনিই প্রথম ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা মুক্ত দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!