কুমিল্লা প্রতিনিধি :
কুমিল্লার বরুড়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্থানীয় এমপি নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুলকে রাজাকারের সন্তান ও ভাতিজা বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান এএনএম মইনুল ইসলাম।
শনিবার বেলা ১১টায় কুমিল্লা উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভা ও মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা-৮ বরুড়া আসনের এমপি নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুল। আর বিশেষ অতিথি ছিলেন বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এএনএম মইনুল ইসলাম। অনুষ্ঠান শেষে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে কুমিল্লাজুড়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ভাইরাল ভিডিওতে উপজেলা চেয়ারম্যান এএনএম মইনুল ইসলামকে বলতে দেখা যায়, ‘বরুড়ার মাটিতে যার নেতৃত্বে রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনী গঠন করা হয়েছিল তিনি হলেন আদ্রা ইউনিয়নের বিতর্কিত কুট্টু মিয়া। কুট্টু মিয়ার ভাই সিএসপি অফিসার শামসুল আলম মিয়া, যার নাগরিকত্ব দেশবিরোধী অবস্থানের কারণে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু বাতিল করেন। অথচ যাকে আজ প্রধান অতিথি করা হয়েছে তিনি আর কেউ নন, সেই কুট্টু মিয়ার ছেলে ও শামসুল আলম মিয়ার ভাতিজা নাছিমুল আলম চৌধুরী। যে স্বাধীনতাবিরোধীরা মা-বোনের ইজ্জত লুটেছে, ভাইদের পাখির মতো গুলি করে মেরেছে, শহীদদের রক্তে রঞ্জিত যাদের হাত, সেই রাজাকারপুত্রের হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হলে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমি এটা কীভাবে মেনে নেব?
বিষয়টি অবশ্যই সত্যি। তার চাচার নাগরিকত্ব বঙ্গবন্ধু বাতিলই করে দিয়েছেন। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন, সে কারণে এটি আমাদের নলেজে আছে। মুক্তিযোদ্ধা ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে’ বইয়ের ৩৫ নম্বর পৃষ্ঠায় এর প্রমাণ আছে।’
ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মীর রাশেদুজ্জামান। এ সময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বরুড়া পৌরসভার মেয়র বকতার হোসেন বখতিয়ার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন লিংকনসহ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাগণ ও তাদের পরিবারবর্গ।
বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এএনএম মইনুল ইসলাম বলেন, শামসুল আলম একজন স্বীকৃত রাজাকার ছিলেন। ১৯৭২ সালে জাতির জনক তার নাগরিকত্ব বাতিল করেছিলেন। এমপি তার ভাতিজা। এ বিষয়ে যাবতীয় প্রমাণাদী সরকারি দপ্তরে সংরক্ষিত আছে এবং এমন প্রমাণ আমার কাছেও রয়েছে। এ বিষয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই, এটা সর্বজন স্বীকৃত এবং আমি যা বলেছি দায়িত্ব নিয়েই বলেছি।
তবে এ বিষয়ে কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের সংসদ সদস্য ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুল বলেন, আমার আপন কোনো চাচা নেই। একাত্তরে সিএসপি অফিসার ছিলেন আমার বাড়ির সামছুল আলম মিয়া। তাকে আমার চাচা উল্লেখ করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্যের পর আমি এর ব্যাখ্যা দিয়েছি, কিন্তু ওই অংশটি ভাইরাল হয়নি।
জাগো নিউজ