০৮:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ব্যবসায়ী দুলালকেখুন্তি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা ভাড়াটিয়া সুমি কুমিল্লার বেলতলীতে পিকআপ চাপায় পথচারী নিহত বিতর্কের মুখে সংসদের নির্বাচনী এলাকা সীমানা নির্ধারণ কারিগরি কমিটি কুমিল্লা সদর দক্ষিণে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান অপরাধী যে দলেরই হোক, কোনো ছাড় নেই- ওসি মোহাম্মদ সেলিম কুমিল্লা সদর দক্ষিণে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইয়ংস্টার সোশ্যাল অর্গানাইজেশন এর সদর দক্ষিন উপজেলার কমিটি গঠন নতুন পুরাতন বুঝি না,ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে-ডা. শফিকুর রহমান ছয় দফা দাবিতে কুমিল্লা সদর দক্ষিণে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে হেনস্তা: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হানিফ গ্রেফতার

আওয়ামী লীগ ২০০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও আপত্তি নেই মহিবুল্লাহর

  • তারিখ : ০২:১২:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 354

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :

জিহাদ করে কিংবা অস্ত্র ধরে হেফাজতে ইসলামের আলোচিত ১৩ দফা দাবি আদায় সম্ভব নয় বলে মনে করেন হেফাজতে ইসলামের সদ্যনিযুক্ত আমির আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরী।

তিনি বলেন, অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম কাউকে ক্ষমতায় বসানো কিংবা কারও পতন ঘটানোয় ভূমিকা রাখতে চায় না। এমনকি আওয়ামী লীগ ২০০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও তাঁর আপত্তি নেই। মহিবুল্লাহ আমির নির্বাচিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে ফটিকছড়ির বাবুনগরের নিজ বাসভবনে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপ করছিলেন।

হেফাজতে ইসলামের আলোচিত ১৩ দফা দাবির আন্দোলন নিয়ে মহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, সরকারের দিকে অস্ত্র তুলে, জিহাদ করে দাবি আদায় করা সম্ভব নয়। রক্তপাত ও অস্ত্রের মহড়ায় বিশ্বাস করে না হেফাজতে ইসলাম। আমরা সব সময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে ১৩ দফা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি। ২০১৩ সালে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচিতে ইতিহাসের বড় জমায়েত হওয়ার পরও রক্তপাত হয়নি। হেফাজতে ইসলাম রক্তপাতে বিশ্বাসী নয়। সরকার পারলে আমাদের দাবি পূরণ করবে, না পারলে আল্লাহর কাছে জবাব দেবে।

তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন এখনো চলমান। আমাদের যেসব দাবি সরকারের পক্ষে বাস্তবায়ন সম্ভব তা মেনে নেওয়ার আহ্‌বান জানাচ্ছি। সংবিধানে কিছু অংশ রয়েছে যা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব অংশ ইমানের জন্য ক্ষতিকর। এ অংশগুলো সংস্কারের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি।

এ দেশের নাগরিক হিসেবে সরকারের কাছে সংবিধান সংস্কারের দাবি করতে পারি আমরা। হেফাজতে ইসলাম ও সরকারের সম্পর্ক বিষয়ে তিনি বলেন, কওমিদের নিয়ে বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় আমরা খুশি। সরকারের পতন কিংবা কাউকে গদিতে বসানো আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য নয়। আমরা মুসলিম, কোরআন এবং হাদিস মেনে চলতে হবে।

কোরআন পরিপন্থী কোনো আইন চাপিয়ে দিলে আমরা বিরোধিতা করব। আন্দোলন করব। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আলেমরা গদি (ক্ষমতা) চায় না। গদিওয়ালাদের (ক্ষমতাসীনদের) আলেম বানাতে চায়।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে হেফাজতের আঁতাতের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, জামায়াতের সঙ্গে হেফাজতের আদর্শিক কোনো সম্পর্ক নেই। বরং কওমি আলেমরা জামায়াতের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকে সব সময়। দেওবন্দের অন্যতম অলি আল্লামা হোসাইন আহমদ মাদানি জামায়াতের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

আমরা তাঁর অনুসারী হিসেবে এখনো জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলি। তাই জামায়াতের সঙ্গে কওমিদের কোনো ঐক্য হতে পারে না। আদর্শিক কারণেই কওমিদের সঙ্গে জামায়াতের দূরত্ব ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। রাজনৈতিক স্বার্থে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করেছে। কিন্তু হেফাজতের সঙ্গে জামায়াতের এখনো কোনো জোট হয়নি। হেফাজতের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নেই বলে দাবি করেন তিনি।

আল্লামা মহিবুল্লাহ বলেন, অতীতের মতো ভবিষ্যতেও হেফাজতের ব্যানারে কাউকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। হেফাজতের কমিটি গঠন নিয়ে তিনি বলেন, হেফাজতের বর্তমান যে কেন্দ্রীয় কমিটি রয়েছে তা সম্প্রসারণ করা হবে। সবার মতামতের ভিত্তিতে জেলা, উপজেলা, থানা এবং ওয়ার্ড কমিটি করা হবে।

কমিটি গঠনের আগে হেফাজতের বর্তমান নেতাদের মধ্যে যে দূরত্ব রয়েছে তা বিমোচন করা হবে। এরই মধ্যে নেতাদের মধ্যকার মতপার্থক্য দূর করতে কাজ করছেন কয়েকজন শীর্ষ আলেম। যারা কমিটির বাইরে রয়েছেন তাদের নিয়েই আগামীতে কেন্দ্রীয় এবং অন্যান্য কমিটি সম্প্রসারণ ও গঠন করা হবে।

শেয়ার করুন

আওয়ামী লীগ ২০০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও আপত্তি নেই মহিবুল্লাহর

তারিখ : ০২:১২:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :

জিহাদ করে কিংবা অস্ত্র ধরে হেফাজতে ইসলামের আলোচিত ১৩ দফা দাবি আদায় সম্ভব নয় বলে মনে করেন হেফাজতে ইসলামের সদ্যনিযুক্ত আমির আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরী।

তিনি বলেন, অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম কাউকে ক্ষমতায় বসানো কিংবা কারও পতন ঘটানোয় ভূমিকা রাখতে চায় না। এমনকি আওয়ামী লীগ ২০০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও তাঁর আপত্তি নেই। মহিবুল্লাহ আমির নির্বাচিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে ফটিকছড়ির বাবুনগরের নিজ বাসভবনে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপ করছিলেন।

হেফাজতে ইসলামের আলোচিত ১৩ দফা দাবির আন্দোলন নিয়ে মহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, সরকারের দিকে অস্ত্র তুলে, জিহাদ করে দাবি আদায় করা সম্ভব নয়। রক্তপাত ও অস্ত্রের মহড়ায় বিশ্বাস করে না হেফাজতে ইসলাম। আমরা সব সময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে ১৩ দফা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি। ২০১৩ সালে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচিতে ইতিহাসের বড় জমায়েত হওয়ার পরও রক্তপাত হয়নি। হেফাজতে ইসলাম রক্তপাতে বিশ্বাসী নয়। সরকার পারলে আমাদের দাবি পূরণ করবে, না পারলে আল্লাহর কাছে জবাব দেবে।

তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন এখনো চলমান। আমাদের যেসব দাবি সরকারের পক্ষে বাস্তবায়ন সম্ভব তা মেনে নেওয়ার আহ্‌বান জানাচ্ছি। সংবিধানে কিছু অংশ রয়েছে যা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব অংশ ইমানের জন্য ক্ষতিকর। এ অংশগুলো সংস্কারের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি।

এ দেশের নাগরিক হিসেবে সরকারের কাছে সংবিধান সংস্কারের দাবি করতে পারি আমরা। হেফাজতে ইসলাম ও সরকারের সম্পর্ক বিষয়ে তিনি বলেন, কওমিদের নিয়ে বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় আমরা খুশি। সরকারের পতন কিংবা কাউকে গদিতে বসানো আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য নয়। আমরা মুসলিম, কোরআন এবং হাদিস মেনে চলতে হবে।

কোরআন পরিপন্থী কোনো আইন চাপিয়ে দিলে আমরা বিরোধিতা করব। আন্দোলন করব। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আলেমরা গদি (ক্ষমতা) চায় না। গদিওয়ালাদের (ক্ষমতাসীনদের) আলেম বানাতে চায়।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে হেফাজতের আঁতাতের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, জামায়াতের সঙ্গে হেফাজতের আদর্শিক কোনো সম্পর্ক নেই। বরং কওমি আলেমরা জামায়াতের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকে সব সময়। দেওবন্দের অন্যতম অলি আল্লামা হোসাইন আহমদ মাদানি জামায়াতের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

আমরা তাঁর অনুসারী হিসেবে এখনো জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলি। তাই জামায়াতের সঙ্গে কওমিদের কোনো ঐক্য হতে পারে না। আদর্শিক কারণেই কওমিদের সঙ্গে জামায়াতের দূরত্ব ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। রাজনৈতিক স্বার্থে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করেছে। কিন্তু হেফাজতের সঙ্গে জামায়াতের এখনো কোনো জোট হয়নি। হেফাজতের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নেই বলে দাবি করেন তিনি।

আল্লামা মহিবুল্লাহ বলেন, অতীতের মতো ভবিষ্যতেও হেফাজতের ব্যানারে কাউকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। হেফাজতের কমিটি গঠন নিয়ে তিনি বলেন, হেফাজতের বর্তমান যে কেন্দ্রীয় কমিটি রয়েছে তা সম্প্রসারণ করা হবে। সবার মতামতের ভিত্তিতে জেলা, উপজেলা, থানা এবং ওয়ার্ড কমিটি করা হবে।

কমিটি গঠনের আগে হেফাজতের বর্তমান নেতাদের মধ্যে যে দূরত্ব রয়েছে তা বিমোচন করা হবে। এরই মধ্যে নেতাদের মধ্যকার মতপার্থক্য দূর করতে কাজ করছেন কয়েকজন শীর্ষ আলেম। যারা কমিটির বাইরে রয়েছেন তাদের নিয়েই আগামীতে কেন্দ্রীয় এবং অন্যান্য কমিটি সম্প্রসারণ ও গঠন করা হবে।