নিজস্ব প্রতিবেদক :
কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকায় মোঃ শাহিন আলম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেছেন ভূক্তভোগীরা।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে লক্ষ্মীপুর চৌমুহনী বাজারের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে কনেশতলা, একবালিয়া, ডলখুলিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকার শত শত মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধন ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শাহিনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাকে “ভণ্ড প্রতারক” আখ্যা দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, শাহিন আলম দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে লিখে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। ফেসবুকে ভুয়া পেজ খুলে মিথ্যা স্ট্যাটাস ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করেন তিনি।
তারা জানান, শাহিন কখনো ‘অ্যাডভোকেট’, কখনো ‘সাংবাদিক’, আবার কখনো ‘রাজনৈতিক কর্মী’ পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছেন। প্রতিবন্ধী, বিধবা ও অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়ানোর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে তাদের কাছ থেকেও টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বহু ভুক্তভোগী লজ্জায় প্রকাশ্যে আসতে ভয় পাচ্ছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, প্রবাসী এক নারীকে ব্ল্যাকমেল করে জোর করে বিয়ে করেন শাহিন। পরে ফাঁদে ফেলে আরও চারটি বিয়ে করেন। নারীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেন তিনি।
শুধু সাধারণ মানুষ নয়, স্থানীয় ঠিকাদাররাও শাহিনের প্রতারণার শিকার। বক্তারা জানান, গুলিয়ারা ইউনিয়নের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদারদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন শাহিন। চাঁদা না দিলে ফেসবুকে মানহানিকর পোস্ট দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করেন। অনেক ঠিকাদার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাননি।
বক্তারা অভিযোগ করেন, শাহিন আলম দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে এসব অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। প্রশাসনের নির্লিপ্ততার সুযোগ নিয়ে তিনি এলাকার সাধারণ মানুষের ওপর দখলদারি কায়েম করেন। ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
মানববন্ধনে উপস্থিত ভুক্তভোগী রাসেল মিয়া, মাসুম, খলিল ও ফয়সাল বলেন, “শাহিন আলমের ভয়ে আমরা দীর্ঘদিন নির্যাতিত হয়েছি। আজ আমরা সাহস করে রাস্তায় নেমেছি। আমরা চাই দ্রুত তার গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।”
পরে উত্তেজিত জনতা শাহিন আলমের ছবি পায়ে দলিত করে জুতা নিক্ষেপ করে।
এতে বক্তারা অবিলম্বে শাহিন আলমকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বলেন, “আমরা আর নিরব থাকব না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।