ডেস্ক নিউজ :
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ আগামী প্রজন্মের কাছে রেখে যেতে চাই। তিনি হচ্ছে আজ ও আগামীর মাঝে সেতুবন্ধন। শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা জামতলীতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, যার জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না, আজকে আমরা এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারতাম না। এটি অত্যন্ত শ্বাসত সত্য, এই শ্বাসত সত্যিটিকে আবার নতুন করে এলাকার মানুষের সামনে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে, যারা বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছেন, তার নির্দেশে যুদ্ধ করেছেন, তাদের জন্য এক ধরণের সিনারিও। অনেকে শহীদ হয়েছেন, অনেকে আহত হয়ে এখনো আমাদের মাঝে আছেন।
তাদেরকেও একত্র করা আমাদের মূল উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে দেখেছেন, তাদের কাছে বঙ্গবন্ধু এক রকম। এখনকার আমাদের যে তরুণ সমাজ, তারা বঙ্গবন্ধুকে দেখে নাই। এমনকি মুক্তিযুদ্ধও করার সুযোগ পায় নাই। তাদের সাথে বঙ্গবন্ধুকে পরিচয় করিয়ে দেয়া। সে সময় কোনো কারণে যারা বঙ্গবন্ধুকে সামনে থেকে দেখেনি, তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো আমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দ মেলা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, আমি লক্ষ্য করলাম যে, কোনো একটা লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করলে সবাইকে সম্পৃক্ত করা যায়।
সবাইকে সম্পৃক্ত করা না গেলে, আমাদের সমস্ত আয়োজন, সমস্ত উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। আমি এই এলাকার নির্বাচিত এমপি। এখানে দশ লাখ লোকের বসবাস। আমার ভোটারের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ। এখানে একটা বিরাট জনগোষ্ঠী। আমি লক্ষ্য করলাম যে, আমি যদি এটি শুরু করতে পারি, তাহলে অন্যান্য এমপি, মন্ত্রী মহোদয়রা এগিয়ে আসবেন। এভাবে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করতে। অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা এই অঞ্চলের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে ওয়ান টু ওয়ান গিয়েছি। তাদেরকে এই আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করেছি এবং সম্পৃক্ত করতে পেরেছি।
এটিই আমাদের সফলতা। মানুষকে সম্পৃক্ত করে, তাদের সামনে একটি আদর্শকে উপস্থাপন করা, আদর্শটি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। এই জাতীয় চেতনায় যারা বিশ্বাস করে না, তাদেরকে বিশ্বাসী করার জন্য এবং এই আদর্শকে আগামী প্রজন্মের কাছে, আমাদের তরুণ সমাজসহ আগামী প্রজন্মের কাছে, যারা এই পৃথিবীতে আসে নাই, তাদের কাছেও আমরা রেখে যেতে চাই। আজকের এই দিনটি হবে একটি সেতুবন্ধন। আমাদের আজ এবং আগামীর মাঝে সেতুবন্ধনটি সফল হোক আপনারা দোয়া করবেন। এসময় অর্থমন্ত্রীর মেয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের চেয়ারপারসন নাফিসা কামাল বলেন, আমাদের স্বার্থকতা হচ্ছে কুমিল্লা-১০ আসনের সবাই একত্র হয়ে বঙ্গবন্ধুর চেতনায় এক হয়ে অনুষ্ঠানটিতে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, অন্য অনুষ্ঠানের মধ্যে এই অনুষ্ঠানটির পার্থক্য একটাই, সেটি হলো বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন। এই অনুষ্ঠান এর আগে কখনো আমাদের জীবনে আসেনি হয়নি, কখনো আসবেও না। বাঙালি জাতি হিসেবে এটি আমাদের সব চেয়ে সৌভাগ্য। মুজিব বর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে কুমিল্লার লালমাই উপজেলা মাঠে আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে অংশ নেন অর্থমন্ত্রী। এতে মুজিব বর্ষ ভিক্টোরিয়ানস ক্রিকেট টি-২০ টুর্নামেন্টের ট্রফি উন্সোচন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিন্সের চেয়ারপারসন নাফিসা কামাল ও তার বড় বোন কাশফি কামাল উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব এমপি,নাসিমুল আলম চৌধুরী এমপি, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীর,জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম,সদর দক্ষিণ উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার,লালমাই উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বি.কম,লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে.এম.ইয়াসির আরাফাত,সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিয়া মোহাম্মাদ কেয়ামউদ্দিন,অর্থমন্ত্রীর এপিএস কে.এম.সিংহ রতন,সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রহিম,
লালমাই আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, মোঃ ইব্রাহিম, সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন চৌধুরী,সহ-প্রচার সম্পাদক হাজী আব্দুল মমিন,সদর দক্ষিণ উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক আব্দুল মোতালেব,যুগ্ম আহবায়ক মাসুদ,আমান উল্লা আমান,লালমাই উপজেলা যুবলীগ নেতা কাউসার মোর্শেদ মজুমদার প্রমুখ। পরে এক সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় দেশবরেণ্য শিল্পীরার সঙ্গিত পরিবেশন করেন।
ঊল্লেখ্য: অনুষ্ঠানটি উপলক্ষ্যে কুমিল্লার লাল-নীল মরিচা বাতি,অভিনন্দন জানানো পোষ্টারে ব্যানারে ছেয়ে গেছে প্রতিটি রাস্তা-ঘাট ও প্রতিটি অলি-গলি। মুজিব আদর্শকে লালনকারীদের ব্যক্তি জীবনের ফ্রেমে বেঁধে রাখতেই এ দিনটিকে ঘিরো ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন অনুসারীরা। পুরো কুমিল্লা-১০ নির্বাচনী এলাকায় ছিল সাজ সাজ রব । অনুষ্ঠানটি উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে নতুন রুপে সাজানো হয়েছে সড়ক-মহাসড়ক এর পাশ পাশ সহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার পথ-ঘাট। বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট, পোস্টার এবং স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী ইতিহাসের অডিও প্রদর্শনীতে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা। এছাড়াও অনুষ্ঠানস্থলে লাল-সবুজ আলোকসজ্জায় ভিন্ন ভাবে আলোকিত করে তোলা হয়েছে।