নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লায় আমেরিকা প্রবাসী আকবর হোসেন বাবুলকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার দায়ে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেন কুমিল্লার আদালত। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) এ রায় ঘোষণা করেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক নাসরিন জাহান।
মামলার বিবরণে জানা যায়- ২০১৭ সালের ১৪ আগস্ট বেলা ১১টার সময় কুমিল্লার লাকসাম থানাধীন ৩নং কান্দিরপাড় ইউনিয়নস্থ নোয়াপাড়া গ্রামের লাকসাম মুদাফ্ফরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের ১৫০গঞ্জ উত্তরে নোয়াপাড়া ওয়ার্ল্ড ভিশন কমিউনিটি ক্লিনিকের পশ্চিমে জলাশয়ে চটের বস্তায় ভর্তি একজনের গলিত লাশ ভাসিতেছে দেখিয়া স্থানীয় ইউপি সদস্য আঃ রব লাকসাম থানাকে মোবাইল করিলে লাকসাম থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তা ভর্তি লাশটি আঞ্চলিক সড়কের নিকট এনে লাশের স্থির চিত্রধারণ করে সুরতাল রিপোর্ট তৈরী করে।
এ ব্যাপারে ঐদিন এজাহারকারী লাকসাম থানার এসআই শেখ মিল্টন রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে লাকসাম থানায় দণ্ডবিধি ৩০২/২০১/৩৪ ধারার বিধানমতে মামলা রুজু করিলে থানাপুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আসামি লিপি আক্তার কাজল ও কামাল হোসেনকে এবং পরদিন আসামি তাজুল ইসলাম প্রঃ সজিবকে এবং ২৪ সেপ্টেম্বর মোঃ রহমত উল্লা প্রঃ রনিকে আটক করে। পরবর্তীতে আটককৃত আসামীগণ স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে।
এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ তদন্তপূর্বক আসামীগণের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৮ সালের ০৪ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষে মানীত ২৭জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে উভয়পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানী অন্তে আসামিগণের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন নোয়াখালী জেলার সোনাইমুরি উপজেলার উলুপাড়া গ্রামের আশরাফুল হোসেন বেলাল এর স্ত্রী পিলি আক্তার কাজল, মৃত আঃ রব এর ছেলে কামাল হোসেন, আবুল কালাম এর ছেলে তাজুল ইসলাম প্রকাশ সজিব, সামছু উদ্দিনের ছেলে মোঃ রহমত উল্লাহ প্রঃ রনি এবং জালাল আহাম্মদ এর ছেলে মোঃ রুবেল।
রায় প্রচারকালে ০৫ জন আসামির মধ্যে ০৩ জন আসামি ডকে উপস্থিত ছিলেন এবং মামলার প্রধান আসামি পিলি আক্তার কাজল ও তাজুল ইসলাম প্রকাশ সজিব জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছে।
রাষ্টপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি এড. জাহিদ হোসেন এবং আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ পিন্টু।
এদিকে, এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের বিজ্ঞ মোঃ জাহিদ হোসেন বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাদী এবং রাষ্ট্রপক্ষ অচিরেই এ রায়ের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।