স্তন্যপায়ী প্রাণী বাঁদুড়ের দেহে নতুন আরও ছয় ধরনের করোনাভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন মিয়ানমারের বিজ্ঞানীরা। তবে নতুন এই ছয় ধরনের করোনাভাইরাস মানুষসহ অন্য প্রাণীর মধ্যে ছড়াতে পারে কিনা তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা। লাইভ সায়েন্স অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ সংক্রান্ত একটি গবেষণা গত ৯ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনভিত্তিক ‘প্লোস ওয়ান’ জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে বিজ্ঞানীরা বাঁদুড়ের মধ্যে ওই নতুন ছয় ধরনের করোনাভাইরাস খুঁজে পেয়েছেন। প্রাণী থেকে ক্ষতিকর কোন কোন ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে তা জানতেই গবেষণাটি চলছে। এতে অর্থায়ন করছে খোদ মিয়ানমার সরকারই।
তবে বাঁদুড়ের মধ্যে নতুন পাওয়া ছয় ধরনের করোনাভাইরাসের সঙ্গে মানুষের শরীরে পাওয়া কোভিড-১৯, সার্স বা মার্স করোনাভাইরাসের জিনগত খুব একটা মিল নেই।
মহামারী নভেল করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ ভাইরাসটিও করোনাভাইরাস পরিবারের সদস্য। বিজ্ঞানীরা সর্বশেষ কোভিড-১৯ সহ এখন পর্যন্ত মানুষের শরীরে করোনাভাইরাস পরিবারের মোট সাত ধরনের ভাইরাসের সন্ধান পেলেন।
মিয়ানমারের গবেষকরা ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১১ প্রজাতির ৪৬৪টি বাঁদুড়ের লালা ও মল সংগ্রহ করেন। দেশটির তিনটি অঞ্চল থেকে মূলত এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
বিজ্ঞানীরা বাঁদুড়ের লালা ও মলের নমুনার জীনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করেন এবং মানুষের শরীরে পাওয়া করোনাভাইরাসগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন।
নতুন করোনাভাইরাসগুলো তিন প্রজাতির বাঁদুড়ের মধ্যে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গ্রেটার এশিয়াটিক ইয়েলো প্রজাতির বাঁদুড়ের মধ্যে পাওয়া গেছে প্রেডিক্ট-কোভ-৯০ ভাইরাস।
রিনকেল-লিপড ফ্রি-টেইলড প্রজাতির বাঁদুড়ের মধ্যে পাওয়া গেছে প্রেডিক্ট-কোভ-৪৭ ও প্রেডিক্ট-কোভ-৮২ ভাইরাস।
এছাড়া হর্সফিল্ডস লিফ-নোজড প্রজাতির বাঁদুড়ের মধ্যে পাওয়া গেছে প্রেডিক্ট-কোভ-৯২, প্রেডিক্ট-কোভ-৯৩ ও প্রেডিক্ট-কোভ-৯৬ ভাইরাস।
তবে নতুন এই ছয় ধরনের করোনাভাইরাস মানুষসহ অন্য প্রাণীর মধ্যে ছড়াতে পারে কিনা তা নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন মিয়ানমারের গবেষকরা।
তাছাড়া ভাইরাসগুলো যদি মানুষের শরীরে ছড়ায় তাহলে তার প্রভাব কী হতে পারে তা নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন আছে। কারণ কোভিড-১৯, সার্স এবং মার্স ছাড়া আরও যে চার ধরনের করোনাভাইরাস মানুষের শরীরে পাওয়া গেছে সেগুলো ততটা ক্ষতিকর নয়।