দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মরিয়া চীন। পরীক্ষামূলকভাবে দুটি ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে দেশটির সরকার। বিদেশ থেকে ফেরা ব্যক্তিদের কারণে দ্বিতীয় দফায় করোনার সংক্রমণ দেখা দিয়েছে চীনে। এই পরিস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্ত বেইজিংয়ের।
চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের সূত্র দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়াকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিংয়ের সিনোভেক বায়োটেক ও উহানের ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রডাক্টস ভ্যাকসিনগুলো তৈরি করেছে।
এর আগে, গত মার্চে বেইজিং ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য একটি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছিল চীন। দেশটির মিলিটারি একাডেমি পরিচালিত মিলিটারি মেডিকেল সায়েন্সেস ও জৈবপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান কেনসিনো বায়ো সেটি তৈরি করেছিল।
সে হিসেবে, চীন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভিন্ন ভিন্ন তিনটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে আল জাজিরা। দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কমিশন বলেছে, যদি সাফল্য আসে তাহলে তারা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক উৎপাদনে যেতে পারবে।
মানব শরীরে ভ্যাকসিন পরীক্ষণের অনুমতির বিষয়টিকে সাহসী সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন হংকং ইউনিভার্সিটির প্যাথলজির ক্লিনিক্যাল প্রফেসর জন নিকলস। তিনি বলেন, হুট করেই টিকা মানব শরীরে দেওয়া যায় না। প্রথমে ছোট প্রাণী, তারপর বনমানুষ, এরপর পর্যায় ক্রমে মানব শরীরে প্রয়োগ করতে হয়। তবে চীনের এই সিদ্ধান্তটি খুবই সাহসী। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধদের শরীরের প্রয়োগের মধ্য দিয়ে খুব সহজে বোঝা যাবে এই উদ্ভাবন কতটা কার্যকর।
পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য প্রথম দফায় ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক নির্বাচন করা হয়েছে। এরপরের স্তরের জন্য আরেকটি দল গঠন করা হচ্ছে।
চীনে বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সংক্রমণ খুবই সীমিত। তবে শঙ্কার বিষয় হলো সেখানে রাশিয়া থেকে আগত মানুষদের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে। এমন সংক্রমণের সংখ্যা ৪০৯-এ পৌঁছেছে। সোমবার চীনে ৮৯ জন শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীর মধ্যে ৭৯ জনই রাশিয়া থেকে ফেরা।
করোনাভাইরাসে ২৪ ঘণ্টায় চীনে কারও প্রাণহানির খবর মেলেনি। ওয়ার্ল্ড্রমিটারের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত সেখানে ৮২ হাজার ২৪৯ জন মানুষের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৪১ জন।
“যমুনা টিভি”