মুরাদনগরে জেলা পরিষদের ভুলের খেসারত দিচ্ছে জনগন!

আরিফ গাজী :

কুমিল্লার মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ বাজারে দীর্ঘ ১৬ বছর আগে জেলা পরিষদ অপরিকল্পিত ভাবে খালের উপর দোকান ভিটি বন্দোবস্ত দেয়ায় দূর্ভোগে হাজারো জনগন। দূর্ভোগ লাগবে নিরব ভূমিকায় জেলা পরিষদ, স্থানীয় প্রশাসন ও বাজার কমিটি। সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কোন প্রকার উদ্যোগ না থাকায় ব্যবসায়ীদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ।

কুমিল্লা উত্তর জেলার বৃহত্তম পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ের কেন্দ্রস্থল হিসেবেই সবার কাছে পরিচিত এ বাজারটি। সামান্য বৃষ্টি হলেই এখানে তলিয়ে যায় কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর আঞ্চলিক সড়ক ও বাজারের সকল যোগযোগ ব্যবস্থা। উপরে উঠে আসে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা এবং নোংরা দূষিত পানি। এতে করে ভোগান্তিতে পরে ছোট-বড় কয়েক হাজার দোকানীসহ আশে-পাশের কয়েকটি উপজেলার হাজার হাজার মানুষ।

বছরের অধিকাংশ সময় বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও অলি-গলিতে পানি থাকার ফলে ক্রেতারা মালামাল ক্রয় করে নিয়ে যেতে ভরসা করতে হয় নৌকার উপরে। অপরদিকে জলাবদ্ধ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে যানবাহন গর্তে পড়ে ঘটে দুর্ঘটনা ও তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট।

ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন কুমিল্লা এসডি নিউজ কে বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই বাজারের ভিতর হাঁটু পানি জমে যায়। নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘদিন জমে থাকে পানি। নোংরা ও দূষিত পানির কারণে বাজারে তেমন কাস্টমার আসেনা। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেয়া হোক। এভাবে চলতে থাকলে বড় কোন ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আমরা ব্যবসা ছেড়ে চলে যেতে হবে।

সিএনজি চালক মাসুম বলেন, বৃষ্টি হলেই আমরা আর বাজারে জেতে পারি না। যাত্রীদের মন রক্ষার্থে বাজারে যেতে গিয়ে কয়েক বার আমার সিএনজি উল্টে গেছে। আর এই গাড়ি মেরামত করতে কয়েক মাসের ইনকাম চলে যায়। যার ফলে বেশি টাকা দিলেও এখন আর ওই বাজারে যাইনা।

অটোরিক্সা চালক কাউসার মিয়া বলেন, এই বাজারে গিয়া আমার রিক্সার চাক্কা ভাংছে দুই বার, মটার জ্বলছে একবার। বর্তমানে ভাড়া না পাইলেও ওই বাজারে আর জাইনা।

কোম্পানীগঞ্জ বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান কুমিল্লা এসডি নিউজ কে জানান, ২০০৫ সালের দিকে তৎকালিন এমপি কায়কোবাদের সহযোগীতায় উনার নেতাকর্মীরা জেলা পরিষদের কাছ থেকে সু-কৌশলে খালের একটি অংশ বন্দোবস্ত নিয়ে আসে। পরে কিছুদিনের মধ্যেই সেখানে গড়ে উঠে দোকান-পাট। এরপর ২০১২ সালে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকারের সহযোগীতা উনার নিকট আত্মীয় এবং নেতা কর্মীরা খালের বাকি অংশটুকু দখল করে রাতারাতি মার্কেট নির্মাণ করে। ফলে বন্ধ হয়ে যায় বাজারের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা। আমরা চাই বৃহত্তর এই বাজারের সার্থে খালটি পূনরায় উদ্ধার করা হোক।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অভিষেক দাশ কুমিল্লা এসডি নিউজ কে বলেন, জায়গাটি নিয়ে জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসক ও কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম ডিগ্রী কলেজ কতৃপক্ষের মধ্যে মামলা চলমান। যে কারনে নির্মানাধীন দোকান গুলো উচ্ছেদ করে আমরা বাজারের সমস্যা নিরশনে স্থায়ী ভাবে কিছু করতে পারছি না। গত কিছুদিন আগে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রাস্তার পূর্ব পাশের বন্দোবস্তকৃত দোকান ভেংগে ৫ ফিট জায়গা উন্মুক্ত করা হয়েছে। সেখানে কিছুদিনের মধ্যেই বাজারের পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ করা হবে।

কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হেলাল উদ্দিন কুমিল্লা এসডি নিউজ কে বলেন, প্রথমতো আমাদের অগোচরে এইসব জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন করে বন্দোবস্ত নিয়ে থাকে। দ্বিতীয়তো বন্দোবস্ত দেয়ার সময় বলা থাকে যেকোন জন দূর্ভোগে, প্রয়োজনে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। যদি জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বন্দোবস্ত দেয়া এই জায়গাটির জন্য কোন প্রকার জন ভোগান্তি হয়, তাহলে অবশ্যই আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!