আরিফ গাজী।।
কুমিল্লার মুরাদনগরে এক জীবিত মহিলাকে ২৩ বছর আগে মৃত দেখিয়ে তার নামে মৃত্যু সনদ দিয়েছে এক ইউপি চেয়ারম্যান।জীবিত থেকেও কাগজে কলমে তিনি এখন মৃত।
মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার পূর্ব ধইর পশ্চিম ইউনিয়নের খৈয়াখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। জীবিত লোককে মৃত্যু সনদ দেওয়ার বিষয়টিতে কোন দুরভীসন্ধি রয়েছে বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল।
বিধিমোতাবেক সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের মেম্বার প্রত্যয়ন দেওয়ার পর সে মোতাবেক কাজ করবেন। এ ক্ষেত্রে চৌকিদারকেও কাজে লাগানো যেতে পারে। এ বিষয়ে সকলকেই সচেতন ভাবে কাজ করা উচিত। ইউনিয়ন উদ্যোক্তা থাকা সত্বেও ওই ইউনিয়নে হাক্কানী (২০) নামে একজন কাজ করে সে বর্তমান চেয়ারম্যান রহিম পারভেজের ছেলে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার ৫নং পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের খৈয়াখালী গ্রামের মুন্সিবাড়ীর মৃত জয়দল হোসেনের স্ত্রী মিলন নেছা (৬৫) এর নামে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গত ১৮-০৯-২০২২খ্রী: মৃত্যু সনদপত্র দেয়া হয়েছে যার নং ২০২২১৯১৮১৮১০০৫২৯৭।
মৃত্যু সনদপত্রে তাকে ২৩ বছর আগে ১৫-০২-১৯৯৯খ্রী: মৃত্যু বরণ করেছেন উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবে তিনি জীবিত আছেন। সে মৃত জয়দল হোসেনের স্ত্রী। মিলনের নেছা উপজেলার টনকী ইউনিয়নের বাইড়া গ্রামের মৃত ছৈয়দ আলীর মেয়ে।
শুক্রবার বিকেলে এ প্রতিবেদক ওই মহিলার সাথে কথা বললে তিনি জানান এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এ বিষয়ে তার ছেলে জাকির হোসেনের সাথে কথা বলতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর সে আর কথা বলেনি। তার মোঠো ফোনে কথা বলতে চাইলে সে ফোন বন্ধ করে দেয়। ইউপি চেয়ারম্যান যাচাই-বাছাই না করে জীবিত মানুষকে মৃত দেখিয়ে মৃত্যু সনদ দেয়ার বিষয়টি রহস্যজনক।
এ বিষয়ে সিনিয়র এডভোকেট সৈয়দ তানভীর আহাম্মদ ফয়সাল বলেন, জীবিত ব্যাক্তিকে মৃত্যু সনদ দেয়া জঘন্য অপরাধ। উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে বিষয়টি প্রমানিত হলে ওই চেয়ারম্যানের জেল জরিমানা বা চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারন হতে পারেন।
উপজেলার ৫নং পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন বলেন কিভাবে মৃত্যু সনদ দেওয়া হয়েছে এসম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। যে মিলনের নেছা নামে মৃত্যু সনদ দেওয়া হয়েছে সে বর্তমানে জীবিত আছে। সে মুন্সি বাড়ির মৃত জয়দল হোসেনের স্ত্রী ও জাকিরের মা।
এ ব্যাপারে পূর্বধইর পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল রহিম পারভেছ বলেন মিলনের নেছার মৃত সনদপত্রটি আমার কাছে তথ্য গোপন করে নিয়েছে। আমি সম্পূর্ন অবগত ছিলাম না। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। তার ছেলে হাক্কানী ইউপি অফিসে কাজ করার কথা তিনি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আলাউদ্দিন ভুইয়া জনি বলেন বিষয়টি আমার জানা নাই তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে তদন্ত করে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।