মো. জাকির হোসেন :
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কাবিলা বাজার এলাকায় ৪ তলা সমপরিমান ৫০ বছরের একটি কোল্ড স্টোরেজ ধসে পড়েছে। এতে কোল্ড স্টোরেজে রক্ষিত বিপুল পরিমান আলু ক্ষতি হয়েছে। তছাড়া গ্যাসের প্রভাবে পাশের একটি খামারের ১০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুন) ভোর ৬ টায় বিকট শব্দে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ৭নং মোকাম ইউনিয়নের কাবিলা বাজারে অবস্থিত মোকাম কোল্ড ষ্টোরেজ লিঃ। ভবনটি প্রায় ৫০ বছরের পুরনো।
ভোর ৬ টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে ধসে পড়ে কোল্ড স্টোরেজটি। এতে প্রানহানীর ঘটনা না ঘটলেও কোল্ড ষ্টোরেজটিতে সংরক্ষিত প্রায় ৭০ হাজার মণ আলুর ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভেঙ্গে পড়া কোল্ড স্টোরেজটির মালিক মোকাম ইউনিয়নের নিমসার এলাকার মৃত জুনাব আলীর ছেলে মোঃ গোলাম সারোয়ার।
গোলাম সারোয়ারের নিকট থেকে দীর্ঘ ৮ বছর যাবত ভাড়ায় চালিয়ে আসছিলো কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার সতরা এলাকার ফরহাদ হোসেন।
ফরহাদ হোসেন কোল্ডস্টোরেজ পরিচালনার পশাপাশি এর পাশেই সিয়াম ডেইরী ফার্ম নামে একটি গরুর খামার পরিচালনা করে আসছে।
এদিকে গরুর খামারের পাশের দেয়ালের একটি অংশ ভেঙ্গে পরে। এতে কোল্ড স্টোরেজের গ্যাসের প্রভাবে গরুর খামারটির প্রায় ১০ ট গরু মারা গেছে বলে জানা যায়।
ফায়ার সার্ভিসের লোকজন দেয়াল কেটে খামার থেকে প্রায় ৬১ টি গরু জীবিত উদ্ধার করে। এছাড়া অসুস্থ্য একটি গরুকে জবাই করা হয়।
কোল্ডস্টোরেজ ও খামারটির ম্যানেজার গৌরঙ্গ নন্দি জানান, ভোর ৬ টায় বিকট শব্দে কোল্ডস্টোরেজটি ভেঙ্গে পরে। ভাঙ্গা অংশ দিয়ে এমনিয়া গ্যাস গরুর খামারে ছড়িয়ে যায়। এতে খামারের ৯ টি বড় গরু মারা যায় ও একটি গরু জবাই করা হয়। শুধুমাত্র গরুর খামারেই প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে কোল্ড স্টোরেজ ধ্বসের খবরে আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকরা ভিড় জমাতে থাকে। তাঁদের রক্ষিত আলু নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরে। এছাড়া সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে আলুগুলো পচে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
স্থানীয় আলু ব্যবসায়ী ইউনুস মেম্বার জানান, তিনি এই কোল্ডস্টোরেজে প্রায় ২০ হাজার বস্তা আলু রেখেছেন। ধ্বসের কারনে তাঁর আলু নিয়ে চিন্তিত আছেন। তিনি তাঁর আলুর ক্ষতিপূরন দাবী করেন।
এছাড়াও আলু ব্যবসায়ী, সুলতান মিয়া, কামাল উদ্দিন, রফিক মেম্বার তাঁদের ক্ষতিপুরন দাবী করেন।
কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আলী আজম জানান, কুমিল্লা সদর ও চান্দিনা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৫ টি ইউনিট উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। ৪ ঘন্টা উদ্ধার কাজ শেষে দেয়াল কেঁটে ফার্মের গরুগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে।
এবিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াছমিন জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্নয়ে কাজ চলছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তদন্ত টিম গঠন ও সহযোগিতা করা হবে।