চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি :
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জাতীয় তেলের পাইপ লাইনের চলমান কাজের জন্য খননকৃত গর্তে পড়ে ইসমাইল হোসেন নাঈম (৮) নামে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহত নাঈম উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের দেড়কোটা গ্রামের মো: খোকন ভূঁইয়ার ছেলে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে খেলার ছলে নাঈম বাড়ীর পাশে জাতীয় তেলের পাইপ লাইনের চলমান কাজের জন্য খননকৃত গর্তে পড়ে যায়। পরে ছেলেকে দেখতে না পেয়ে খেঁজাখুজির এক পর্যায়ে তার মা সেখানে গিয়ে তাকে গর্তের পানিতে হাবুডুবু খেতে দেখতে পান। পরে প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় নাঈমকে উদ্ধার করে দ্রæত চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে নিহতের মা সহ স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে শিশু নাঈমের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে পাইপলাইন স্থাপন কাজের ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে দায়ী করে প্রশাসনের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহফুজ মজুমদার বলেন, ‘জাতীয় তেলের পাইপ লাইনের চলমান কাজের গর্তে পড়ে ইসমাইল হোসেন নাঈম নামে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শিশুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত এলাকাবাসীর ভয়ে পাইপলাইনে কর্মরত শ্রমিকরা পালিয়ে গেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি’।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তানভীর হোসেন বলেন, ‘মুন্সীরহাটের দেড়কোটায় জাতীয় তেলের পাইপলাইনের গর্তে পড়ে শিশুর মৃত্যুর খবর শুনেছি। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করবো। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
জাতীয় তেল লাইনের কুমিল্লা অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘শিশুর মৃত্যুর ঘটনাটি এইমাত্র জানলাম। নিয়ম অনুযায়ী পাইপ লাইনের কাজ শুররু করার আগে বিশাল এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করার বিধান রয়েছে। পাইপলাইনের পাশে যদি গর্ত করা হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গর্তগুলো ভরাট করে দিতে হবে। এতে কারো দায়িত্ব অবহেলার ঘটনা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে’।