১২:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পিস্তল নিয়ে গ্রেফতার হওয়া রাসেল সদর দক্ষিণ উপজেলা যুবদলের কেউ নয়- সায়েম মজুমদার  নাঙ্গলকোটে মহিলাদল আদ্রা উওর ইউনিয়ন কমিটি গঠন করার লক্ষে মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় সুদের টাকা আদায়ে বৃদ্ধকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন কুমিল্লায় ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে কিশোর কুমিল্লায় চাঁদাবাজবিরোধী অভিযানে হামলা, আহত ৩ পুলিশ সদস্য ইউসুফ মোল্লা টিপুকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে যৌথ বিবৃতি কুমিল্লায় যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল কুমিল্লা সদর দক্ষিণে পিস্তলসহ যুবদল কর্মী আটক দুর্গাপূজায় ৯ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় হানিফ ফ্লাইওভারে বাস-সিএনজি সংঘর্ষ, নিহত ২

কুবির নির্মাণাধীন প্রধান ফটকের রড চুরি

  • তারিখ : ০৯:৫৬:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মে ২০২১
  • / 407

কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) নির্মাণাধীন প্রধান ফটকের জন্য আনা প্রায় এক টন রড চুরি হয়েছে। গত ৭-৯ মে’র মধ্যে রডগুলো চুরি হয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাপ্রহরী থাকা সত্ত্বেও কে বা কারা চুরি করেছে তা এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জানা যায়নি। এ নিয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্মাণ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের সাথে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান ফটক। গত ১৬ মার্চ থেকে গেইটটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গত ৬ মে (শুক্রবার) রাতে মোট ২১ বান্ডেল রড আনা হয়। শেকল দিয়ে তালা মেরে সেগুলো ফটকের ভিতরে রাখা হয়।

কিন্তু ৯ মে দেখা যায়, সেখানে মাত্র ১৪ বান্ডেল রড আছে। বাকী সাত বান্ডেল নেই। চুরি হওয়া রডের পরিমাণ এক টনেরও বেশি। পরে ১১ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীনকে আহবায়ক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদারকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সহকারী প্রক্টর মো. মোকাদ্দেস-উল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম এবং কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি মো. আবু তাহের। তবে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাপ্রহরী থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ভিতর থেকে কীভাবে চুরি হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর আগেও বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইট চুরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিরাপত্তা প্রহরীদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে গত ১১ মার্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেডের সাথে চুক্তি করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। এ প্রকল্পের অধীনে মডার্ন কনস্ট্রাকশন এন্ড আর্কিটেকচার লিমিটেডের দ্বারা গেটটির নির্মাণকাজ করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রকল্পটির তদারকির দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘৬ তারিখ রাতে আমি ২১ বান্ডেল রড তালা দিয়ে ঈদ উপলক্ষে বাড়ি এসেছিলাম। যেহেতু নিরাপত্তারক্ষী আছে, সেহেতু আমি আর নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তা করিনি। আমি পরিচিত একজনের মাধ্যমে ৯ তারিখ খোঁজ নিয়ে শুনি যে বান্ডেলগুলোর শেকল কাটা এবং সাত বান্ডেল রডই নেই। প্রায় এক টন রড চুরি হয়েছে। আমি ৯ তারিখ কুমিল্লার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব মো. সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, ‘রড চুরির অভিযোগটি এসেছে। আমরা পরিদর্শনে গিয়েছি। এখন কী পরিমাণ মালামাল ছিলো সেটা তো আমাদেরকে বলেননি। একটা তদন্ত কমিটি হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি।’

তদন্ত কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল আসলে উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রহরী থাকে। তাছাড়া রাতের বেলা টহল টিমও দায়িত্বে থাকে। এর ভিতরেও রড চুরি হয়েছে। এটা খুব চিন্তার বিষয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এটা নিয়ে সিরিয়াস। আর সেনাবাহিনী যেহেতু প্রকল্পটির তদারকি করছে তারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘রড চুরি হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। এটি বের করতে না পারাটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। এ নিয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি হয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আমাদেরকে লিখিতভাবে চুরি হওয়ার বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তারা সম্ভবত জিডিও করেছে। আমরা কিছু ক্লু পেয়েছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা বের হয়ে যাবে।’

শেয়ার করুন

কুবির নির্মাণাধীন প্রধান ফটকের রড চুরি

তারিখ : ০৯:৫৬:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মে ২০২১

কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) নির্মাণাধীন প্রধান ফটকের জন্য আনা প্রায় এক টন রড চুরি হয়েছে। গত ৭-৯ মে’র মধ্যে রডগুলো চুরি হয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাপ্রহরী থাকা সত্ত্বেও কে বা কারা চুরি করেছে তা এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জানা যায়নি। এ নিয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্মাণ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের সাথে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান ফটক। গত ১৬ মার্চ থেকে গেইটটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গত ৬ মে (শুক্রবার) রাতে মোট ২১ বান্ডেল রড আনা হয়। শেকল দিয়ে তালা মেরে সেগুলো ফটকের ভিতরে রাখা হয়।

কিন্তু ৯ মে দেখা যায়, সেখানে মাত্র ১৪ বান্ডেল রড আছে। বাকী সাত বান্ডেল নেই। চুরি হওয়া রডের পরিমাণ এক টনেরও বেশি। পরে ১১ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীনকে আহবায়ক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদারকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সহকারী প্রক্টর মো. মোকাদ্দেস-উল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম এবং কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি মো. আবু তাহের। তবে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাপ্রহরী থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ভিতর থেকে কীভাবে চুরি হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর আগেও বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইট চুরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিরাপত্তা প্রহরীদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে গত ১১ মার্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেডের সাথে চুক্তি করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। এ প্রকল্পের অধীনে মডার্ন কনস্ট্রাকশন এন্ড আর্কিটেকচার লিমিটেডের দ্বারা গেটটির নির্মাণকাজ করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রকল্পটির তদারকির দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘৬ তারিখ রাতে আমি ২১ বান্ডেল রড তালা দিয়ে ঈদ উপলক্ষে বাড়ি এসেছিলাম। যেহেতু নিরাপত্তারক্ষী আছে, সেহেতু আমি আর নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তা করিনি। আমি পরিচিত একজনের মাধ্যমে ৯ তারিখ খোঁজ নিয়ে শুনি যে বান্ডেলগুলোর শেকল কাটা এবং সাত বান্ডেল রডই নেই। প্রায় এক টন রড চুরি হয়েছে। আমি ৯ তারিখ কুমিল্লার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব মো. সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, ‘রড চুরির অভিযোগটি এসেছে। আমরা পরিদর্শনে গিয়েছি। এখন কী পরিমাণ মালামাল ছিলো সেটা তো আমাদেরকে বলেননি। একটা তদন্ত কমিটি হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি।’

তদন্ত কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল আসলে উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রহরী থাকে। তাছাড়া রাতের বেলা টহল টিমও দায়িত্বে থাকে। এর ভিতরেও রড চুরি হয়েছে। এটা খুব চিন্তার বিষয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এটা নিয়ে সিরিয়াস। আর সেনাবাহিনী যেহেতু প্রকল্পটির তদারকি করছে তারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘রড চুরি হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। এটি বের করতে না পারাটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। এ নিয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি হয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আমাদেরকে লিখিতভাবে চুরি হওয়ার বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তারা সম্ভবত জিডিও করেছে। আমরা কিছু ক্লু পেয়েছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা বের হয়ে যাবে।’