কুমিল্লার জাঙ্গালিয়ায় শিশু গৃহকর্মীর উপর অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় গৃহকত্রী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

কুমিল্লা মহানগরীর ২১ নং ওয়ার্ডের জাঙ্গালিয়ায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী ফারহানা আলমের বিরুদ্ধে শিশু গৃহকর্মী সুমিকে অবর্ণনীয় নির্যাতন শেষে বাথরুমে আটকে রেখে বাড়িতে তালা মেরে বন্দি অবস্থায় রেখে চলে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পার্শ্ববর্তী লোকজন শিশু গৃহকর্মী সুমির চিৎকার শুনতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে ।

জানা যায়, গৃহকত্রী ফারহানা আলম কর্তৃক ৮-৯ বছরের গৃহকর্মী সুমি আক্তারের উপর অমানবিকভাবে নির্যাতনের ফলে তার চোখে-মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষত-বিক্ষত চিহ্ন । গৃহকর্মী সুমির বাবা-মা দুনিয়াতে বেঁচে নেই। কয়েক বছর যাবত সে কুমিল্লা মহানগরীর সদর দক্ষিণ মডেল থানাধীন ২১ নম্বর ওয়ার্ডের জাঙ্গালিয়া এলাকার সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ফারহানা আলম দম্পতির বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করে আসছে। প্রায়ই তার উপর চালানো হতো শারীরিক নির্যাতন। মঙ্গলবার রাতে নির্যাতনের পর তাকে বাথরুমে আটকে রেখে বাসার দরজায় তালা মেরে বন্দি অবস্থায় রেখে চলে যায় বাসার লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক) নিয়ে ভর্তি করে। এ ঘটনায় গৃহকত্রী ফারহানাকে পুলিশ গ্রেফতার করে বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।
পুলিশ জানায়, নগরীর জাঙ্গালিয়া এলাকার ‘রক্তিম হাউজ’ নামের একটি বাসায় মঙ্গলবার রাতে শিশু গৃহকর্মী সুমি আক্তারের কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে পার্শ্ববর্তী বাসার লোকজন ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশে খবর দেয়। রাত সোয়া ৯টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একই ভবনের একটি ফ্ল্যাটের মালিক থেকে চাবি নিয়ে ঘরের তালা খুলে বাইরে থেকে আটকানো বাথরুমের ছিটকিনি খুলে শিশুটিকে উদ্ধার করে কুমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে নিয়ে ভর্তি করে। সুমির চোখ, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, প্রায়ই ওই বাসা থেকে তারা কান্নার আওয়াজ শুনতে পেতেন। নির্যাতিত শিশু জানায়, তার বাবা-মা নেই, বাড়ি কোথায় তাও জানা নেই। অবুঝ অবস্থায় সে এই বাসায় কাজ করে আসছে। প্রায় প্রতিদিন কারণে-অকারণে মেডাম (গৃহকত্রী) তার উপর নির্যাতন করতো। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কাঠ দিয়ে এলোপাতারি পিটিয়ে জখম করে বাথরুমে আটকে রেখে বাসায় তালা দিয়ে তারা চলে যায়। রাতে দীর্ঘক্ষণ ধরে কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে প্রতিবেশিরা পুলিশে খবর দেয়।

এ বিষয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, ৯৯৯-এ খবর পেয়ে খবর পাওয়ার পরই মঙ্গলবার রাতে ওই বাসার বাথরুম থেকে শিশু গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রাতেই অভিযান চালিয়ে লাকসাম থেকে গৃহকত্রী ফারহানা আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় খবর দেয়া প্রতিবেশী আশিকুর রহমান বাদী হয়ে ওই দম্পতির বিরুদ্ধে বুধবার দুপুরে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতার গৃহকত্রী ফারহানা আলমকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!