বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিনিধি ।।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের শরিফপুর এলাকায় চাচার নির্মানাধীন ঘর থেকে ফাহিম হোসেন (১৩) নামে দত্তক নেয়া এক শিশুর মরদেহ উদ্ধারের ২২ দিন পর আসামীকে আটক পূর্বক রহস্য উদঘাটন করেছে দেবপুর ফাঁড়ী পুলিশ।
আটককৃত আসামীকে সোমবার কুমিল্লা আদালতে নেয়া হলে হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি মূলক ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে সে। পরে আদালত তাঁকে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বুড়িচং থানার দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ীর উপ পরিদর্শক (এস আই) কাজী হাসান উদ্দিন আদালতের বরাত দিয়ে বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারী রাত ৩ টায় বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের শরিফপুর গ্রামের আবদুল মতিনের নির্মানাধীন তালাবদ্ধ ঘরের একটি কক্ষ থেকে ফাহিম হোসেন নামে পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিলো।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, ঘটনার পর তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার, সন্দেহভাজন একাধিক ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদসহ বিভিন্ন তথ্য উপাথ্য বিশ্লেষন করা হয়। পরবর্তীতে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে একই গ্রামের মোঃ আনোয়ার হোসেন প্রকাশ্যে অনু মিয়ার ছেলে মোঃ সুমন (২৮)কে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন হত্যাকান্ডে জড়িত আরো একজনের নাম প্রকাশসহ স্বীকারোক্তি দেয়। পরবর্তীতে সোমবার দুপুরে কুমিল্লা জ্যেষ্ঠ নির্বাহী বিচারক আদালতে নেয়া হলে বিচারকের সামনে হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
আদালতে সুমন জানান, সে ও আরেক আসামী শরীফ ভালো বন্ধু, ঘটনায় কয়েক দিন পূর্বে শরীফ শিশুটির চাচা আবদুল মতিনের একটি রেকডিং শুনায়। যেখানে মতিনকে বলতে শুনা যায়, শিশু ফাহিমকে হত্যার কথা। এর কয়েকদিন পর শরীফ সুমনকে ফোন করে আসতে বলে। সুমন সন্ধ্যার পর আসলে শরীফ শিশু ফাহিমকে নিয়ে আসে। পরে কাঁঠাল গাছে পাখির ছানা আছে বলে শিশু ফাহিমকে ডেকে নিয়ে যায়। ছাদে উঠার মূল ফটক তালাবন্ধ থাকায় আসামী শরীফ শিশুটিকে কাধে নিয়ে কাঁঠাল গাছ চড়ে ছাদে উঠে। ছাদে উঠারপর শিশু ফাহিমকে নাক মুখ চেপে ধরে হত্যা করে। পরে শিশুটিকে ভবনের একটি কক্ষে রেখে চলে যায়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, গত ১০ মার্চ শরীফকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছিলো। শরীফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার মূল রহস্যা উদঘাটন হবে বলে তিনি জানান।