মো. জাকির হোসেন ।।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামে স্বামী-শাশুড়ী-ননদের পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধুর আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে।
নিহত গৃহবধুর চাচা মোঃ নূরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গত ৪ বছর পূর্বে বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে খদিজা আক্তার আখি(২১)’র সাথে পাশ^বর্তী আধা কিলোমিটার দূরে নিমসার গ্রামের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে মোঃ ছফিউল্লার পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় স্বামী, শ^াশুড়ী ও ননদ খাদিজাকে মরধর করতো। ইতোমধ্যে তাঁদের সংসারে একটি কন্যা শিশুর জন্ম হয়, বর্তমানে শিশুটির বয়স দুই বছর।
গত বুধবার সকাল ১০ টায় খাদিজা বেগম তাঁর বাবার বাড়ীতে মোবাইল ফোনে জানায়, তাঁর স্বামী ও শ^াশুড়ী তাঁকে মারধর করে খাদিজার দুই বছরের কন্যা সন্তান আরিশাকে তার কাছ থেকে নিয়ে যায়। এজন্য সে বিষপান করেছে।
তাৎক্ষনিক ভাবে খাদিজার বাবার বাড়ীর লোকজন স্বামীর বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে বিষপানের বিষটি দেখতে পায়। এসময় খাদিজাকে দ্রæত কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন।
ওই দিন বিকেলে খাদিজার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে ডাক্তার তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে।
পরদিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খাদিজার মৃত্যু হয়। খাদিজার মৃত্যুর পরপরই স্বামী ছফিউল্লাহ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।
শুক্রবার শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এস আই) মিন্টু মিয়া হাসপাতালে পৌছে নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী পূর্বক ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্থান্তর করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহতের বাবার বাড়ীতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, নিহতের ময়নাতদন্ত ঢাকায় করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহত খাদিজার স্বামীর বাড়ীতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। এমনকি নিহত খাদিজার ২ বছরের কন্যা সন্তানের কোন খোজ মিলেনি।