সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ছবি। কাছের বন্ধু মারা গেছেন। তার জানা হচ্ছে। পেছনে বিমর্ষচিত্তে বসে আছেন বন্ধু হারানো বাবু। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী বাজারের ব্যবসায়ী মীর হোসেন সওদাগর ও সুধীর বাবু বাল্যকালের বন্ধু।
মীর হোসেন সওদাগর মুদি দোকানের ব্যবসা করেছেন দীর্ঘদিন ধরে। সুধীর বাবুও ব্যবসা করতেন একই বাজারে। মঙ্গলবার রাতে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান মীর হোসেন। বন্ধুর মৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শোকে কাতর হয়ে পড়েন দীর্ঘদিনের সাথী সুধীর বাবু।
সুধীর বাবু আর মীর হোসেন সওদাগর এক অপরের বন্ধু। একজন মুসলিম আর অন্যজন হিন্দু ধর্মের অনুসারী। কিন্তু ছেলেবেলা থেকেই দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বে কখনোই ধর্ম বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
মঙ্গলবার রাতে মারা যান মীর হোসেন। বুধবার সকালে তার জানাজা হয়। জানাজা চলাকালীন সুধীর সবার পেছনে গাছের গুঁড়িতে বসে কাঁদছেন। জানাজায় অংশগ্রহণ করতে না পারলেও বন্ধুর প্রতি এমন অকৃত্রিম দরদ সবার হৃদয়কে স্পর্শ করে। মুহূর্তের মধ্যে বন্ধু মীরের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের এ ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। এতে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সত্যিকারের বন্ধুত্বের বন্ধন কত শক্তিশালী হতে পারে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে কুমিল্লাসহ দেশজুড়ে।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে জানাজা চলাকালীন সুধীর বাবু পেছনে গাছের গুঁড়িতে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানাজা শেষে উপস্থিত সকলে তার এ অকৃত্রিম ভালোবাসা দেখে আবাক হয়েছেন। তার ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হলে মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বন্ধুত্ব এমনই হওয়া উচিত বলে লিখেছেন ফেসবুকে ব্যবহারকারীরা।
অনেকে আবার লিখেছেন, সত্যিকারের বন্ধুত্ব আসলেই এমন হয়। যে বন্ধুত্ব জাত দেখে না, ধর্ম দেখে না, ধনী-গরিবের ভেদাভেদ চেনে না।
গোলাম মাওলা শিপু নামে গুণবতী বাজারের এক জানান, মীর হোসেন সওদাগর মুদি ব্যবসা করতেন। বুধবার সকালে গুণবতী গ্রামে তার বাড়ির কাছেই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতি করতেন। এলাকায় একজন ভালো মানুষ হিসেবে তার কদর ছিল। তার চার ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।