কুবি প্রতিনিধি :
রাস্তা সংস্কারের দাবিতে গাছ ও টায়ার পুড়িয়ে ফের সড়ক অবরোধ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৫ মার্চ) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের সামনের সড়ক অবরোধ করে তারা৷
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পার্শ্ববর্তী রাস্তা সংস্কারের দাবিতে অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। রাস্তা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত এ অবরোধ চলমান থাকবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এ রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয় গত বছরের আগস্ট মাসে। কর্তৃপক্ষের দায়সারা কার্যক্রমের কারণে খোঁড়াখুঁড়ির মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে সংস্কার কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় পিকনিক স্পট থাকায় এ রাস্তা দিয়ে সবসময়ই যানবাহন চলাচল করে। ফলে রাস্তার ধুলাবালির কারণে মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া রাস্তার আশেপাশে রয়েছে খাবারের হোটেল ও মুদি দোকান, যা ধুলোবালির কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পরিণত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন বাবর বলেন, ‘গত মার্চের ০১ তারিখ রাস্তা মেরামত করার আশ্বাস দিলেও এখনো কোন পদক্ষেপ নেয় নি। দীর্ঘদিন ধরে পুরো রাস্তাটাকে খুঁড়ে বেহাল অবস্থা করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। যার কারণে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঠিকাদার যদি সরেজমিনে এসে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না নেন আমরা অবিরতভাবে আমাদের অবরোধ চালিয়ে যাব।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আহসানুল হক শিপন বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ঠিকাদার এসে কাজ শুরু না করবে ততক্ষণ আমাদের অবরোধ অব্যাহত থাকবে। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কাজ শুরু করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের বিষয়টা আমি জেনেছি। তবে রাস্তারটার ঠিকাদার ১০ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করবে বলেছিল কিন্তু এখনো করে নি। তাছাড়া এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন কোনো বিষয় না। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে কিছু জানায় নি৷ জানালে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলে দেখবো৷’
এ বিষয়ে সদর দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, ‘কাজ তো শুরু হওয়ার কথা। আমি বিষয়টি প্রশাসনকে জানাচ্ছি এবং দায়িত্বরত সকলের সাথে কথা বলতেছি।’
দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার কিছু বিল আটকে আছে এজন্য কাজ আটকে আছে। ১০দিনের মধ্যে কাজ শুরু করার কথা ছিল কিন্তু পারি নি। আমি গতকালকে ঠিকাদার লিটনের সাথে কথা বলেছি আজকে রাতের মধ্যে সংস্কার সামগ্রী চলে আসবে এবং আগামীকালকের মধ্যে অবশ্যই কাজ শুরু হবে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, বিষয়টা পুলিশের না। এটা এলজিইডি আর ঠিকাদারের। মাঝখানে পুলিশ আর শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়ছে৷ তবে টাকার অভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাকি কাজ শেষ করতে পারছে না বলে আমি জেনেছি। তারপরও আমরা যতটুকু করার ততটুকু করে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা রাস্তা সংস্কারের দাবিতে অবরোধ করেছিল। সেদিন থেকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কাজ শুরু করার আশ্বাস দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।