নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার জোড্ডা গ্রামের চাটান বাড়ীর আলী আরশাদের বিরুদ্ধে ছেলে সিরাজুল ইসলাম তার স্ত্রীকে দিয়ে একাধিক মামলা করে জেলে প্রেরণ করে এবং কয়েক দফা মা ফেয়ারা বেগমকে মারপিট করে ও বুধবার ভোররাতে ঘরে আগুন দিয়ে উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সিরাজুল ইসলামের সাথে তার স্ত্রী মুন্নি আক্তার ও চাচা আলী মিয়া জড়িত রয়েছে বলে দাবী করেন, ভুক্তভোগী মা ফেয়ারা বেগম।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জোড্ডা চাটান বাড়ীর আলী আরশাদ স্ত্রী, ২ ছেলে, ৩ মেয়ে নিয়ে কৃষি কাজ করে এবং বাজারে চাউল বিক্রি করে সন্তানদের সুখের জন্য কিছু সম্পত্তি ক্রয় করে। সন্তানরা বড় হয়ে মা-বাবার দায়িত্ব নিবে এ আশায় দিন পার করতে থাকে। কিন্তু সন্তানরা ঠিকই বড় হয়েছে তবে সুখ আসেনি তাদের স্বামী-স্ত্রীর ভাগ্যে। ভাগ্য ফেরাতে জমি বিক্রি করে বড় ছেলে সিরাজুল ইসলামকে প্রেরণ করেন সৌদি আরব। তাদের আশায় গুড়ে বালি দিয়ে সে সৌদিতে গিয়ে নিজের আখের ঘোচান। সিরাজ দেশে এসে বিয়ে করেন একই গ্রামের আব্দুল ওহাবের মেয়ে কলসুম আক্তারকে। কুলসুম এক সন্তানের জননী হওয়ার পর যৌতুক নিয়ে পারিবারিক কলহে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
পরে সিরাজ বিয়ে করে উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের সালনা গ্রামের আরু মিয়ার মেয়ে মুন্নি আক্তারকে। মুন্নি সংসারে আসার পর স্বামী ও চাচা শ্বশুর আলী মিয়াকে নিয়ে শ্বশুর-শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। জোর পূর্বক শ্বশুরের কাছ থেকে স্বামীর নামে সম্পত্তি লিখে নিয়ে আবার সেই সম্পত্তি স্বামী থেকে নিজ নামে লিখে নেয়। সম্পত্তি নিজ নামে আশার পর ছেলে সিরাজুল ইসলাম ও পুত্রবধূ মুন্নি তাদেরকে বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করতে হায়নার বেশে দফায় দফায় আক্রমণ শুরু করে বৃদ্ধ আরশাদ ও ফেয়ারা বেগমের উপর।
মারপিটে কাজ না হওয়ায় সিরাজুল ইসলাম তার স্ত্রী মুন্নিকে দিয়ে কুমিল্লার আদালতে পিতা ও তার ২ বোনকে আসামি করে মামলা করে। ওই মামলায় চলতি বছরের ১২ রমজান পিতা আলী আরশাদকে জেলে প্রেরণ করে, এখনো তিনি কারাগারে আছেন। বাবাকে জেলে দেয়ার পর মাকে উচ্ছেদ করতে বুধবার ভোর রাতে ঘরে আগুন দেয়। এ ব্যাপারে ছেলে, ছেলের বৌ ও দেবর আলী মিয়ার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও বৃদ্ধ স্বামী আলী আরশাদের মুক্তি দাবী করেন বৃদ্ধা ফেয়ার বেগম।
অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি বাবা-মাকে মারপিট করিনি। তারা আমার টাকায় ক্রয় করা জমি আমার ভাই জাকের হোসেনকে দিয়ে দিয়েছে। আমার স্ত্রীকে মারপিট করেছে সেই মামলায় আমার বাবা কারাগারে আছে। আমার ভাইয়ের লোকজন আমাকে মারপিট করেছে আমি গত ২ দিন আগে হাসপাতাল থেকে এসেছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জুলহাস বলেন, আগুনের ঘটনার বিষয়ে আমাকে জানিয়েছে। পিতা-মাতাকে মারপিটের বিষয়ে আমি শুনেছি, তবে দেখিনি।
এ ব্যাপারে জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিয়াজি বলেন, আগুনের ঘটনা আমি জানিনা। তবে তাদের বাড়িতে মারামারি হয়েছে সেই ঘটনায় সিরাজের স্ত্রী মামলা করেছে সেই মামলায় তার বাবা জেলে আছে। রবিবার এ বিষয়ে থানায় সালিশ বৈঠক বসার কথা রয়েছে।