কুমিল্লায় স্ত্রীসহ চিকিৎসককে হত্যার কথা স্বীকার করলো ৩ ঘাতক

কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি :

ডাকাতির নাটক সাজিয়ে কুমিল্লায় পল্লী চিকিৎসক শ্বশুর সৈয়দ বিল্লাল হোসেন ও শ্বাশুড়ীকে সফুরা খাতুনকে ডাকাতদল হত্যার কথা প্রথমে পুলিশকে জানালেও পরে জিজ্ঞাসাবাদে নিহত ওই দম্পতির পুত্রবধূ স্বীকার করেছেন হত্যা কথা। কিলিং মিশনে তিনি ছাড়াও আরও দুই ব্যক্তি সরাসরি জড়িত ছিলেন। পুলিশ সোমবারই অপর দুইজনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- নিহত দম্পতির দুবাই প্রবাসী ছেলে সৈয়দ আমান উল্লাহর স্ত্রী নাজমুন নাহার চৌধুরী শিউলী (২৫), তার খালাতো ভাই জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের আবদুর রহিম মজুমদারের ছেলে জহিরুল ইসলাম মজুমদার সানি (১৯) ও তার বন্ধু জেলার লালমাই উপজেলার দক্ষিণ জয়কামতা গ্রামের মো. শাহাবুদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান তুহিন (১৮)। তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আবদুর রহীম।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার পর গ্রেফতার শিউলীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কুমিল্লা নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকা থেকে জহিরুল ইসলাম সানি ও জেলার বরুড়া উপজেলার আড্ডা বাজার থেকে মেহেদী হাসান তুহিনকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকা-ের পর সোমবার সন্ধ্যায় নিহত দম্পতির মেয়ে সৈয়দা বিলকিস আক্তার কোতয়ালি মডেল থানায় শিউলীকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন।

মামলায় অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও দুই-তিনজনকে আসামি করা হয়। এই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিহত দম্পতির পুত্রবধূ শিউলী, সানি ও তুহিন হত্যার দায় স্বীকার করেছে। বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে নিহত ওই দম্পতির ২টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

পারিবারিক কলহের জেরে পরিকল্পনা করেই শ্বশুর পল্লি চিকিৎসক বিল্লাল হোসেন ও শাশুড়ি সফুরা খাতুনকে হত্যা করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শিউলী জানিয়েছে, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রোববার রাতে খবর দিয়ে সানি ও তুহিনকে শিউলী তার শ্বশুর বাড়িতে নেন। তখন বিল্লাল হোসেন বাসায় ছিলেন না। তারা সফুরাকে হাত-পা বেঁধে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন।

পরে বিল্লাল হোসেন বাড়িতে এলে তাকেও তারা একই কায়দায় হত্যা করে। হত্যাকান্ডের নেপথ্যে গ্রেফতার শিউলীর পরকীয়া প্রেমের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গ্রেফতারকৃতদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন, রাজন কুমার দাশ, সোহান সরকার ও ডিআইও-১ মনির আহাম্মদ, ডিবির ওসি সত্যজিৎ বড়–য়া, কোতয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। এর আগে আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের সুবর্ণপুর গ্রামে রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরদিন ভোরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়। লাশ দু’টি প্রবাসী দুই ছেলের অপেক্ষায় ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে বাড়িতে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে দাফনের কথা রয়েছে।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
error: ধন্যবাদ!