মো: ওমর ফারুক :
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌর সভার চৌঘুড়ি গ্রামের এক শত বছর বয়সী বৃদ্ধা মমেনা খাতুন। তার খবর এখন কেউ রাখেনা। গত ১৪ বছর আগে তার স্বামী রুসতম আলী মারা যান। মৃত্যুর আগে রেখে গেছেন, ৭ ছেলে, ৫ মেয়েকে। অসংখ্য জায়গা জমি। সন্তানরা কেউ চাকুরী জীবি, আবার কেউ ব্যবসায়ী ও কৃষক। তাদের সন্তানরাও কেউ প্রবাসী, কেউ বা চাকুরী জীবি। সকলের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু অসহায় নারী মমেনার ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।
তিনি এখন কোন কথা বর্তা বলতে পারেন না। কানেও তেমন শুনেন না। এই বৃদ্ধা নারীর বড় ছেলে জয়নাল আবেদীন চৌদ্দগ্রামে ওয়াবদাতে কর্মরত রয়েছে, ২য় ছেলে আ:মন্নান এক জন মাছ ব্যবসায়ী, ৩য় ছেলে আব্দুল মতিন আ:লীগের নেতা, তার স্ত্রী – খোরশেদা আক্তার পৌরসভার ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর, ৪ ছেলে আব্দুল বাতেন বাড়ীর পাশে ইটভাটার শ্রমিক, ৫ ছেলে রবিউল হোসেন ঢাকায় চাকুরী জীবি, ৬ ছেলে মোশারফ হোসেন চট্টগ্রামে কর্মরত ও মোতালেব হোসেন একজন কৃষক। তাদের সকলের সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে সংসার করলেও মায়ের খবর কেউ রাখছেন না। তার এক নাতি সিলেট জেলার হবিগজ্ঞে পিডিভির সহকারী প্রকৌশলী আবু হেলাল সোহেন। তার দুই নাতী ইব্রাহীম ও শাহ পরান প্রবাসী। ওই নারী সব ছেলে ও মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। সবাই তাদের নিজ নিজ সংসার নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে।
বুধবার সকালে এই নারী বাড়ীর পাশে পুকুরে পড়ে যায়। তখন প্রতিবেশী আনা মিয়া তাকে পুকুর থেকে তুলে তার কাছে রাখে। পরে তার সন্তানদেরকে বিষয়টি অবগত করেন। সংবাদ পেয়ে তার মেয়ে নাগোদা স্বামী বাড়ী থেকে মাহফুজা বেগম ও বাইয়ারা স্বামীর বাড়ী থেকে শাহিদা বেগম এসে তাকে উদ্ধার করে। ওই নারী দুই মেয়ে মাহফুজা ও শাহিদা অভিযোগ করেন বলেন-তাদের বাবা মারা যাওয়ার আগে অনেক জায়গা জমি রেখে গেছেন। কিন্তু ভাইয়েরা মায়ের কোন খবর রাখছে না। বাবার রেখে যাওয়া ঘরে বসবাস করছেন তিনি। মাঝে মাঝে খাবার দিলে তখন ওই খাবার খান তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কায্যলয় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লামইয়া সাইফুল বলেন, ওই নারীর প্রতি তার সন্তানরা তেমন নজর রাখছে না। বিষয়টি শুনার পর পৌর মেয়র আব্দুল মালেককে বলেছি, সমস্যাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধন করার জন্য।
এ ব্যাপারে নাঙ্গলকোট পৌর মেয়র আব্দুল মালকে বলেন, নির্বাহী অফিসার ওই নারীকে আমার কাছে পাঠিয়েছে। তার নিজ তহবিল থেকে ওই নারীকে আর্থিক সহযোগীতা করা হয়েছে।
এছাড়াও পৌর সভার পক্ষ থেকে সহযোগীতা করা হবে। তাছাড়াও খোজ খবর নিয়ে জান্তে পারলাম। তার সাত ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও তার পুত্রবধু পৌর কাউন্সিলর। ওই নারীর স্বামী মারা যাওয়ায় আগে অনেক সম্পত্তি রেখে গেছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবসা নেয়া হবে।