বুড়িচংয়ে দুই বোনের এক প্রেমিক, ক্ষোভে বড় বোনের আত্মহত্যা

আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয় ।।

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া গ্রামে এক প্রেমিক নিয়ে টানাটানি চলে দুই বোনের। অভিযোগ রয়েছে পরিবারের নির্যাতনের কারনে ক্ষোভে বড় বোন তানিয়া আক্তার বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে। নিহত তানিয়া বুড়বুড়িয়া গ্রামের আবু তাহের এর মেয়ে ও সোনার বাংলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী । পাশ্ববর্তী খারাতাইয়া গ্রামের প্রেমিক নাঈমকে দায়ী করে মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) বুড়িচং থানায় মামলা করেছে নিহতের পরিবার।

জানা যায়, খাড়াতাইয়া গ্রামের মৃত রোস্তম আলীর ছেলে ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স ৪র্থ বষের ছাত্র মো: সাইদুজ্জামান নাঈমের সাথে নিহত তানিয়ার ছোট বোন রীমির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই সুবাদে প্রায় সময় বড় বোন তানিয়ার সাথে কথোপকথন হতো নাঈমের। বেশ কিছুদিন পর রীমি ও নাঈমের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জেনে যায় উভয়ের পরিবারের অভিভাবকরা। তাদের প্রেমের বিষয়টি নিয়ে একে অপরকে দায়ী করে অভিভাবকদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়ে প্রেমের সম্পর্ক দূরত্ব হয়ে যায়। এই ফাঁকে ছোট বোনের খোঁজখবর রাখতে গিয়ে বড় বোন তানিয়া সাথে কথোপকথন শুরু করে নাঈম। এই ভাবে কথা বলতে বলতে নাঈমকে ভালোবেসে ফেলে তানিয়া।

নাঈমের বড় ভাই কামরুজ্জামান মিঠু জানান,তানিয়ার মৃত্যুর কিছুদিন আগে একদিন রাতে তানিয়ার বাড়িতে চলে যায় নাঈম। ঠিক তখনই টের পেয়ে তার ভাই নাঈমকে আটকে রেখে এবং গরু চুরির অভিযোগ এনে বাড়িতে খবর পাঠায় তানিয়ার অভিভাবকরা। ঘটনার খবর পেয়ে সাথে সাথে আমরা চলে যাই তানিয়ার বাড়িতে। তখনই জানতে পারি তানিয়ার ও নাঈমের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি। তখন তানিয়ার সাথে নাঈমের আর সম্পর্ক থাকবেনা এমন কথা বলে আমরা বিষয়টি সাথে সাথে মিটমাট করে নাঈমকে বাড়িতে নিয়ে শাসন করি এবং হাতের মোবাইলটি সহ জব্দ করি। এর কিছুদিন পর অর্থ্যৎ মৃত্যুর আগে নাঈমের মোবাইল ফোনে না পেয়ে বড় ভাই পিন্টুর বউ (ভাবি’র) মোবাইলে কল ও ম্যাসেজ দিতে থাকে তানিয়া। এই ম্যাসেজ গুলো তানিয়ার পরিবারকে দেখানো হয় এবং বিয়ের প্রস্তাবসহ দেওয়া হয়। কিন্তু তানিয়ার পরিবার আমাদের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে তানিয়াকে শাসন করতে শুরু করে।

কামরুজ্জামান মিঠু আরও জানান, শুনেছি শনিবার আত্মহত্যার কয়েক ঘন্টার আগে তানিয়ার বাবা আবু তাহের ও তার চাচা এবং জেঠাতো ভাই মামুন ও মাসুম মাস্টার তাকে মারধর করে। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে ক্ষোভে ঘরের ভিতরে রাখা বিষ খেয়ে সে আত্মহত্যা করে। তবে তানিয়ার আত্মহত্যার পর থেকেই নাঈমের কাছে টাকা দাবি করে মামলার হুমকি দিয়ে আসছে নিহতের জেঠাত ভাই মামুন ও মামুন মাস্টার। হুমকির ভয়ে নাইম বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে জানান তার ভাই।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থাণীয় কয়েকজন জানান, ঘরের মধ্যে তানিয়া বিষ পান করে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়। নামাজে দাঁড়ানো অবস্থায় বমি করার সময় ছোট ভাই দেখে কান্নাকাটি করলে বাড়ির সবাই এসে ধরাধরি করে হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।

এসব বিষয়ে সরেজমিনে জানতে চাইলে বিষয়টি নিয়ে নিহত তানিয়ার পরিবারের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে নিহতের জেঠাতো ভাই মামুন ও মাসুম মাস্টার সাংবাদিকের সাথে খারাপ ব্যবহার করে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন।

মামলার তদন্তকারী কমকতা বুড়িচং থানার এসআই মোঃ ইমরুল জানান, তানিয়া নিহতের ঘটনায় বুড়িচং থানায় নাঈম’কে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছে নিহতের পরিবার। আত্মহত্যার সঠিক কারণ এবং আইনানুগ ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
error: ধন্যবাদ!