কুমিল্লার কোভিড হাসপাতালে কোথায়ও আইসিইউ কিংবা সাধারণ বেডও খালি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সরকারি বিধি নিষেধাজ্ঞা কিংবা স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সাধারন মানুষের উদাসীনতার ফলে করোনাভাইরাস ভয়ংকর রুপ নিয়েছে কুমিল্লার শহর-গ্রাম সর্বত্র। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় চিকিৎসা সংকটে পড়েছেন রোগীরা।

কুমিল্লার কোভিড রোগীদরে জন্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাসে আইসিউ বেড এমনকি সাধারণ সিটও খালি নেই। আর সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট না থাকলেও প্রাইভেট হাসপাতালে অক্সিজেন নিয়ে টানাপোড়েনতো লেগেই আছে।

এদিকে করোনা ডিডিকেটেড কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা রোগীদের নিয়ে হিমশীম খাচ্ছেন। সিট দিতে না পেরে অসহায় বোধ করছেন তারা।

হাসপাতালে ভর্তি হওয়া একজন পুরাতন রোগী সুস্থ হওয়া বা মারা যাওয়ার অপেক্ষায় থাকেন নতুন রোগীরা। বেডের অভাবে এ্যাম্বুলেন্সেই রোগী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। কুমিল্লা জেলায় কোভিড ডেডিকেটেড বেড রয়েছে মাত্র ৫৯১ টি। সে তুলনায় রোগী অনেক বেশী।

এদিকে গতকাল সোমবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন ও ম্যাক্স গ্্রুপের উদ্যেগে কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে ৮০ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান করেন জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির উপদেষ্ঠা বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি।

এ সময় হাজী বাহার এমপি বলেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় হাসপাতালগুলোতে সিট বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। সংকট উত্তরণে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই।

কুমিল্লার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সূত্র মতে, এ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে বেড রয়েছে সর্বমোট ১৩৬টি। এর মধ্যে ২০টি আইসিইউ বেড এবং ১০টি এইচডিইউ বেড রয়েছে। এ হাসপাতালে বেডের চেয়ে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। এদের সবাইকে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ করা যাচ্ছে না। নতুনদের সিলিন্ডার অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে।

এছাড়া কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ৯০ বেডের সবকটিতে রোগী ভর্তি রয়েছে।এ হাসপাতালে আইসিইউ বেড নেই।

কুমিল্লা নগরীর বেসরকারি কোভিড হাসপাতাল মা ও শিশু হাসপাতাল, মর্ডার্ণ হাসপাতাল ,সেন্ট্রাল হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আইসিইউ কিংবা সাধারন বেড খালি নেই। তবে নগরীর অনেক প্রাইভেট হাসপাতালে চাপে পড়ে করোনা রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছে। তবে ওই সব হাসপাতালে পর্যাপ্ত সরাঞ্জাম নেই।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরেজমিন দেখা যায়, শয্যা সঙ্কটের কারণে অধিকাংশ রোগীর ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের বারান্দা ও মেঝেতে। একাধিক নতুন মুমূর্ষু রোগীকে দেখা গেছে করোনা ইউনিটের নিচতলায় বেডের জন্য অপেক্ষা করতে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জেলার ১৭ উপজেলা ছাড়াও ফেনী, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া,নোয়াখালি ও লক্ষিপুর থেকে আসছেন রোগীরা।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট হাই স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা নুুরুন্নবী ছিদ্দিক শশুর কে নিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে অবস্থান করছেন।

২৫ জুলাই রাতে তিনি ফেসবুক স্ট্যটাসে জানান, “ এই মুহুর্তে কুমিল্লা মেডিকেলে তাঁর নিজ এলাকা বরুড়ার আগানগর ইউনিয়ন ও পাশ^বর্তী সদরের কালিরবাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ১৫/২০ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন আছে। পুরো হাসপাতালেই গ্রামাঞ্চলের রোগী।

এতোদিন যারা বলেছি গ্রামে করোনা নাই তাদের অসতর্কতার কারণে করোনা আজ ভয়ংকর রুপ নিয়েছে। যারা সামর্থ্যবান আছেন তাদেরকে বলব, এলাকাতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করুন। না হয় আপনার নিকটাত্মীয় কেউ হয়তো চোখের সামনেই অক্সিজেনের অভাবে মারা যাবে।”

কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মহিউদ্দিন বলেন, বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেডের অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। মানুষ সচেতন না হলে সংকট আরও বাড়তে পারে।

কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেন বলেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় বর্তমানে সর্বোচ্চ শনাক্ত রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের অচেতনতার কারণে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে । সংক্রমণ প্রতিরোধে মানুষ কে সরকারি বিধি নিষেধ মেনে ঘরে থাকতে হবে, মাস্ক পড়তে হবে,টিকা নিতে হবে।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
error: ধন্যবাদ!