নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের চাটিতলা গ্রামের উত্তর পাড়ায় সোমবার দুপুরে প্রকাশ্যে মুখোশ পরা প্রায় ২শ’ দুর্বৃত্ত ধারালো ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। দুর্বৃত্তরা ওই গ্রামের ৭টি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাংচুর করে। এসময় তারা ঘরে রক্ষিত নগদ টাকা, স্বর্ণাংকার, মূল্যবান আসবাবপত্র, দোকানের ক্যাশের টাকা ও মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে দাবি ভূক্তভোগীদের।
এ সময় দুর্বৃত্তরা চাটিতলা উত্তর পাড়ার মরহুম আব্দুল জলিলের স্ত্রী বৃদ্ধা মাজেদা বেগমের বাড়ি , পারভিন বেগমের বাড়ি, সাদেক হোসেন বাড়ি, জয়নাল আবেদীন ব্যাপারীর বাড়ি, লুৎফুর রহমানের বাড়ি, মাস্টার মিজানের বাড়ি, বেলাল হোসেনের দোকান ও মোস্তাফিজুর রহমানের দোকান ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। মুখোশধারীদের পরিচয় জানা না গেলোও হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন হামলার নেতৃত্বে ছিলেন চাটিতলা গ্রামের শাহিদুল ইমরান শাহিদ ও আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হুমায়ুন কবির বাবলু। খবর পেয়ে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ভূক্তভোগীরা।
ভূক্তভোগী বৃদ্ধা মাজেদা বেগম বলেন, আমার ৮ ছেলের মধ্যে ১জন আমেরিকা ও ৫জন সৌদি আরব প্রবাসী। অপর দুই ছেলের মধ্যে ১ছেলে চট্টগ্রামে ব্যবসা করে, আমি বড় ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে থাকি। সোমবার দুপুরে দেড় ২শ’ মুখোশ পরা লোক এসে আমার বাড়িঘর ও আমার ছেলের মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এ সময় তারা আমাকে মারপিট করে আলমিরার তালা ভেঙ্গে আমার পুত্র বধূদের ১০ভরি স্বর্ণের গহনা ও আমার গলার স্বর্ণের চেইন লুট করে নিয়ে যায়।
পারভীন বেগম বলেন, আমার ২ছেলে বিদেশে থাকে। আমি দুই দিন আগে কিস্তির টাকা দিতে ব্যাংক থেকে ৬০হাজার টাকা উঠিয়ে ঘরে রেখেছি। মুখোশ পরা লোকজনকে এসে আমাকে ঘরের বাহিরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ঘর ভাংচুর করে ৬০ হাজার টাকা ও আমার মেয়ের কানের স্বর্ণের দুল ও মালামাল নিয়ে যায়।
ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি ভ্যারাইটিজ স্টোর ও বিকাশ দোকান পরিচালনা করি। সোমবার সকালে আমাদের গ্রামের শাহেদ এসে বলে দোকান বন্ধ করে দাও সমস্যা আছে। এ সময় আমি দোকান বন্ধ করে সামনে বসে থাকায় তিনি আমাকে বলে এখন লোকজন আসবে তুমি চলে যাও। এরপর আমি কিছু দূরে বসে দোকান পাহারা দিতে থাকি। কিছুক্ষণ পর শাহিদ ও বাবলুর নেতৃত্বে অন্তত ২শ’ মুখোশধারী লোক এসে আমার দোকান ভাংচুর করে বস্তায় ভরে মালামাল গুলো নিয়ে যায়, টিভি ও ফ্রিজ ভাংচুর করে এবং ক্যাশ থেকে বিকাশ ব্যবসার ৫-৬ লাখ টাকা নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হুমায়ুন কবির বাবলু বলেন, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম, তবে কারো কিছু ভাঙ্গিনি, রক্ষা করার চেষ্টা করেছি।
এ ব্যাপারে নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ এ.কে ফজলুল হক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।