লাইফস্টাইল ডেস্ক :করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বেশিরভাগ মানুষ এখন ঘরে সময় কাটাচ্ছেন। অবসর সময়ে হয়তো মোবাইল ঘেঁটেই বেশিরভাগ সময় কাটছে আপনার। তবে সারাক্ষণ এভাবে স্ক্রিনে চোখ রাখলে হতে পারে ভয়াবহ ক্ষতি।
মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে হয়তো আপনার হাতের আঙুল আড়ষ্ট হয়ে পড়ছে, ঘাড়ে টান ধরা, চোখ ব্যথা ও হাত তুলতে কষ্ট হচ্ছে।
দিনভর মোবাইল হাতে নিয়ে সময় কাটালে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে শরীরের। ভারতের বিখ্যাত স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় জানান, নিয়ম না মেনে মোবাইল ব্যবহার করলে পেশিতে টান পড়া ও রক্তচলাচলের গতিও কমে যায়। ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা হতে পারে।
এ ছাড়া বাজারহাট বা অন্য কারণে সঙ্গে মোবাইল নিয়ে বাড়ির বাইরে গেলে তা থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। আবার কাজ করতে করতে কাঁধে মোবাইল রেখে, ঘাড় কাত করে কথা বললেও ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।
আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত সময় মোবাইল ব্যবহারে যেসব সমস্যা দেখা যেতে পারে-
১. কম আলোয় মোবাইল ব্যবহার করলে চোখের সমস্যা হতে পারে।
২ কাঁধ ও কানে সঙ্গে চেপে রেখে মোবাইলে কথা বললে ঘাড়ে ও কাঁধে ব্যথার ঝুঁকি বাড়ে।
৩. মাইগ্রেন ও মাথাব্যথাও হতে পারে।
৪. অনবরত মোবাইলে মেসেজ বা সোশ্যাল সাইটে লেখালেখি করলেও হাতের কবজি ও আঙুলে ব্যথা হতে পারে।
৫. ব্রিটেনের হ্যান্ড ও এলবো সার্জন রজার পাওয়েল ও তার সহযোগীদের এক সমীক্ষায় জানা গেছে, যারা ২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মোবাইলে টেক্সট করেন তাদের ‘টেক্সট ক্ল’ (Text Claw) এবং ‘সেলফোন এলবো’ নামে আঙুল ও কবজির সমস্যা দেখা যায়। এই সমস্যার নাম ‘কিউবিটাল টানেল সিনড্রোম’।
৬. সারাক্ষণ টেক্সট লেখার জন্য হাতের বুড়ো আঙুল, তর্জনি এবং মধ্যমা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যবহার হয় বলে এই আঙুল দুটির কাছাকাছি থাকা স্নায়ুর ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। ফলে শুরুর দিকে আঙুল অসাড় লাগে, পরের দিকে ব্যথা হয়।
৭. অনেকে কনুইয়ে ভর দিয়ে মোবাইলে টেক্সট করেন বা কথা বলেন। অতিরিক্ত সময় ধরে এমন করলে হাত, কাঁধ, ঘাড় ব্যথার ঝুঁকি বাড়ে।
৮. রাতের অন্ধকারে মোবাইলের নীল আলোর দিকে তাকিয়ে থাকলে অনিদ্রার ঝুঁকি বাড়ে। একই সঙ্গে ‘সিভিএস’ অর্থাৎ ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’ অর্থাৎ চোখের পানি শুকিয়ে গিয়ে চোখের সংক্রমণ হতে পারে।
৯. অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করায় হাড়ের আলনা নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ সময় সার্জারি করা ছাড়া উপায় থাকে না।
১০. শুধু স্নায়ুরোগই নয়, মোবাইল অতিরিক্ত ব্যবহারের অভ্যাস থেকে বেরিয়ে না এলে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিও বাড়ে।
কী করবেন?
১. প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ফোনের পেছনে ব্যয় না করা।
২. যতটা সম্ভব ফোন স্পিকারে দিয়ে কথা বলুন ও সব আঙুল পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করুন।
৩. টানা ব্যবহারের ফাঁকে হাত ও আঙুল স্ট্রেচিং করে নেয়ার মতো অভ্যাস বজায় রাখুন।
৪. শিশুর হাতে বেশি সময়ের জন্য মোবাইল দেবেন না।
তথ্যসূত্র: আন্দবাজার পত্রিকা