মাজহারুল ইসলাম বাপ্পি :
বাংলা নববর্ষ গ্রামীণ জনপদের মানুষের জীবনে এক নতুন বার্তা নিয়ে আসে। গ্রীষ্মের আগমন, ফসলের মাঠের সোনালি স্বপ্ন আর প্রকৃতি সেজে ওঠেছে আজ নতুন সাজে। পহেলা বৈশাখ তথা বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে গ্রামীন জনপদে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী উৎসব বৈশাখী মেলাসহ নানান আয়োজন। গ্রামীন জনপদে বৈশাখের এমন আয়োজনে ফুটে ওঠে গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। পহেলা বৈশাখের দিন কুমিল্লার গ্রামাঞ্চলে প্রায় পরিবারে বড় আকৃতির মাছ ক্রয় করে রান্না করা সহ বিভিন্ন শাকসবজি দিয়ে বিশেষ ধরনের রান্না করে খাওয়া হয়।
পহেলা বৈশাখ সকালে প্রায় প্রতিটি গ্রামের শিশুরা সেজেগুঁজে পরিবারের লোকজনের সাথে বের হতে দেখা গেছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রা বের করেছে। অনেক সংগঠনের পক্ষ থেকে পান্তা-ইলিশের আয়োজনও লক্ষ্য করা গেছে। ছোটদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বড়রাও নতুন পোশাক পরিধান করে বের হয়েছে।
কুমিল্লার গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে বাংলা নববর্ষকে বরণ বাড়তি প্রস্তুতি দেখা গেছে। জামাই-মেয়ে বেড়াতে আসে বাপের বাড়ি। এককথায় নতুন বছরে প্রকৃতি যেমন নতুন সাজে সজ্জিত, তেমনিভাবে গ্রামে গ্রামে উৎসবের আমেজ ফুটে ওঠেছে।
গ্রামীণ জনপদের মানুষ সাধারণত সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে বৈশাখী মেলার জন্য। কুমিল্লার বৈশাখী মেলাগুলোতে স্থানীয় কারুশিল্প, হস্তশিল্প ও বিজয়পুরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পের বিপুল সমাহার ঘটে। বিজয়পুর রুদ্রপাল মৃৎশিল্প সমবায় সমিতির মৃৎশিল্পীরা তাদের নিপুণ হাতে তৈরি মাটির নানা জিনিসপত্র নিয়ে বসেন মেলাতে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণের রাজেশপুর ইকোপার্ক সহ বিজয়পুর, পদুয়ার বাজার সহ অনেক খোলা জায়গায়, কয়েকটি গ্রামের মিলনস্থল বড় ময়দান কিংবা বিদ্যায়তনের মাঠে এ মেলা বসে। মেলায় শুধু কেনাকাটা নয়, শিশুদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও বিনোদন কেন্দ্র গুলোতেও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে।
কুমিল্লা ময়নামতি যাদুঘরের কাস্টডিয়ান মোঃ শাহিন আলম জানান, বাংলা বর্ষবরন উপলক্ষে ময়নামতি যাদুঘর ও শালবন বিহারে আলপনা অংকন করা হয়েছে। পহেলা বৈশাখের সকালে দর্শনার্থীদের মিষ্টি মুখ করানো হয়েছে। ময়নামতি যাদুঘর ও শালবন বিহারে দর্শনার্থীদের ভালো উপস্থিতি রয়েছে।