নিজস্ব প্রতিবেদক, সদর দক্ষিণ
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা দক্ষিণ ইউনিয়নের নোয়া-জোলাই গ্রামের স্বামীর বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে বিধবা রোকেয়া বেগমের ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় ঘরে থাকা সব আসাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দশ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগী রোকেয়া বেগম। এ ঘটনায় ইমান হোসেন, মফিজ মিয়া, ফরিদ মিয়া, করিম সহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
বিধবা রোকেয়া বেগমের দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আমি আমার সন্তানদের নিয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা দক্ষিণ ইউনিয়নের নোয়া-জোলাই গ্রামের স্বামীর বসতভিটায় বসবাস করে আসছে। আমরা উভয়পক্ষ একই গ্রামের পাশপাশি বাড়ির বাসিন্দা। বিবাদীদের সহিত আমাদের পূর্ব থেকেই জায়গা-সম্পত্তি নিয়া বিবাদ চলিয়া আসিতেছে। বিজ্ঞ আদালতে বিবাদীদের সহিত আমাদের দেওয়ানী মামলা চলিয়া আসিতেছে। উক্ত বিরোধের জেরে বিবাদীগণ আমাদের উপর অন্যায় অত্যাচার করিয়া
আসিতেছে এবং আমাদেরর পরিবারের লোকজনদেরকে মারপিট ও ক্ষতিসাধন করার জন্য সময়, সুযোগ ও উসিলা
খুঁজিয়া আসিতেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯ সেপ্টেম্বর বিকালে সদর দক্ষিণ থানাধীন গলিয়ারা দক্ষিণ ইউনিয়নের নোয়া-জোলাই আমার বসত বাড়ীতে পার্শ্ববর্তী ইমান হোসেন, মফিজ মিয়া, ফরিদ মিয়া, করিম সহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জন হাতে লাঠিা-সোটা ও পেট্রোলের বোতলসহ জনতাবন্ধে অনাধিকারভাবে প্রবেশ করে আমাদেরকে লক্ষ্য করিয়া অকথ্য ভাষায় গালাগাল করিতে থাকে এবং বলে যে, “আজ তোদের বাড়ী হইতে উচ্ছেত করে দিব, যদি না চলিয়া যাও তবে আগুন দিয়ে পুড়াইয়া দিব।” আমি ঘর হইতে বাহির হইয়া তাহাদের গালাগাল করিতে নিষেধ করি এবং বলি যে, আমার বাড়িতে আমি থাকব তোমাদের সমস্যা কি। ইহাতে বর্ণিত বিবাদীরা আরও ক্ষিপ্ত হইয়া ১নং বিবাদী ইমানের হাতে থাকা পেট্রোলের বোতল হইতে আমার রান্নাঘরের বিভিন্ন জায়গায় পেট্রোল ঢালতে থাকে এবং এক সময় আগুন জ্বালাইয়া দেয়। আমি নিরুপায় হইয়া আগুন আগুন বলিয়া
চিৎকার করিতে থাকি। আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসতে দেখে বিবাদীগণ বলে যে, “কাউকে
যদি আমাদের আগুন জ্বলানোর কথা বলিস, তবে প্রাণে মেরে ফেলবো।” হুমকি দিতে দিতে চলিয়া যায়।
আশপাশের লোকজন আমার বাড়িতে এসে পানি দিয়া আগুন নেভানোর কাজ করে এবং ফায়ার সার্ভিসে সংবাদ
দিলে তারা আমার বাড়ীর আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করে। পরবর্তীতে আগুন থামার পর দেখি যে, আমার বাড়ীতে কোন কিছুই অবশিষ্ট নাই। আগুনে পুড়ে আমার ঘরের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ফার্নিচার, ফ্রিজ, টিভি,
দুই লক্ষ টাকা ও একটি এ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোনসহ বাড়ী ও ঘরের সমস্ত কিছুই বিনষ্ট হয়ে গেছে। সর্বমোট অনুমান দশ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে। বর্তমানে আমার সব শেষ হয়ে গেছে।
বিধবা রোকেয়া বেগম বলেন, থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর প্রতিপক্ষের লোকজন প্রতিনিয়ত হুমকি ধমকি দিচ্ছে। আগুন দিয়ে ঘর পোড়ানোর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এবিষয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।