ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রথম নগরী হিসেবে সিলেটে “ফ্রি ওয়াইফাই” চালু হচ্ছে। যার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে জাতীয় শ্লোগানের নামানুসারে “জয় বাংলা”।
সিলেট নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ১২৬ এক্সেস পয়েন্টে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা চালু করার মাধ্যমে দেশের প্রথম বিভাগীয় ডিজিটাল নগরী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো সিলেট। এর মাধ্যমে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির শহর হিসেবে সিলেট এখন সারা দেশের জন্য একটি রোল মডেল।
২০১০ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের সবগুলো ইউনিয়নকে ডিজিটালাইজেশন করার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সূচনা করেন।
২০১৫ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে আসার পর সিলেট শহরকে ডিজিটাল শহর করার চিন্তা করেন এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহের সাথে আলোচনা করেন। এক্ষেত্রে তখনকার অর্থমন্ত্রীর তার বড়ভাই আবুল মাল আব্দুল মুহিত ছোটভাই মোমেনকে উৎসাহ দেন। এর জন্য ৫০ কোটি টাকার একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এক পর্যায়ে ৩০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু হয়। সেই ধারাবাহিকতায় আজকের ডিজিটাল সিলেট প্রকল্পের আওতায় পাবলিক ওয়াইফাই জোন স্থাপন করা হচ্ছে। কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল বিভাগীয় শহর হিসেবে সিলেট শহর তার পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে।
বর্তমানে উন্নত বিশ্বে অত্যাধুনিক সিস্টেম ব্যবহৃত হচ্ছে এখন থেকে সিলেটেও সেসব প্রযুক্তির ব্যবহার চালু হয়েছে। উন্নত দেশের মানুষের মাথা পিছু আয় আমাদের থেকে অনেক বেশি। কিন্তু তারা তাদের জনগণকে যে সেবা দেয়, আমাদের সরকার জনগণকে সেই একই সেবা প্রদান করার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল বিভাগীয় শহর হিসেবে সিলেট ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ওয়াইফাই জোন স্থাপনের কার্যক্রম শুর হয়ে গেছে। প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এসব ওয়াইফাই জোন দেখভাল করবে। পরবর্তীতে এগুলো তদারকি করবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।
সিলেটের যে সকল স্থানে ফ্রি ওয়াইফাই-
চৌকিদেখিতে ১টি, আম্বরখানা পয়েন্টে ৪টি, দরগা গেইটে ২টি, চৌহাট্টায় ৩টি, জিন্দাবাজারে ৪টি, বন্দরবাজার ফুটওভার ব্রিজ এলাকায় ৩টি, হাসান মার্কেট এলাকায় ৫টি, সুরমা ভ্যালি রেস্ট হাউস এলাকায় ২টি, সার্কিট-হাউস জালালাবাদ পার্ক এলাকায় ৩টি, ক্বিন ব্রিজের দুই প্রান্তে ৬টি, রেলওয়ে স্টেশনে ৪টি, বাস টার্মিনালে ৩টি, কদমতলী পয়েন্ট ও সংলগ্ন এলাকায় ৫টি, হুমায়ুন রশীদ চত্বরে ৩টি, আলমপুর পাসপোর্ট অফিস এলাকায় ২টি, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় এলাকায় ৩টি, সিলেট শিক্ষাবোর্ডে ২টি, উপশহর রোজভিউ পয়েন্টে ২টি, শাহজালাল উপশহর ই-ব্লক ও বি-ব্লকে ১টি করে ২টি, টিলাগড় পয়েন্টে ৩টি, এমসি কলেজ এলাকায় ২টি, শাহী ঈদগাহ এলাকায় ৩টি, কুমারপাড়া এলাকায় ৩টি, কুমারপাড়া সড়কে ২টি, দক্ষিণ বালুচরে ১টি, টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ১টি এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে ১টি এক্সেস পয়েন্ট থাকবে।
এছাড়াও সিলেট নগরীর নাইওরপুল পয়েন্টে ২টি, মিরাবাজার সড়কে ১টি, রায়নগর এলাকায় ১টি, সোবহানীঘাট পুলিশ স্টেশন এলাকায় ২টি, ধোপাদিঘীরপাড় বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানে ১টি, বন্দরবাজার জামে মসজিদ এলাকায় ২টি, নয়াসড়ক পয়েন্ট ও সংলগ্ন এলাকায় ৪টি, কাজীটুলা এলাকায় ২টি, চৌহাট্টা সড়কে ৩টি, হাউজিং এস্টেট সড়কে ১টি, সুবিদবাজারে ১টি, মিরের ময়দানে ১টি, পুলিশ লাইন সড়কে ১টি, রিকাবীবাজার জেলা স্টেডিয়ামে ২টি, মদন মোহন কলেজ এলাকায় ১টি, মির্জাজাঙ্গাল সড়ক এলাকায় ২টি, পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট এলাকায় ১টি, খুলিয়াপাড়া এলাকায় ১টি, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি এলাকায় ১টি, তালতলা হোটেল গুলশান এলাকায় ১টি, কাজিরবাজার সেতু এলাকায় ১টি, কাজিরবাজার সড়কে ২টি, খোজারখলা সিলেট টেকনিক্যাল কলেজ এলাকায় ১টি, বাগবাড়ি ওয়াপদা মহল্লা এলাকায় ১টি, পাঠানটুলায় ১টি, মদিনা মার্কেট পয়েন্টে ২টি, শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গেটে ২টি এবং ওসমানী মেডিকেল কলেজ এলাকায় ১টি এক্সেস পয়েন্ট রয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এসব এক্সেস পয়েন্টের প্রতিটিতে একসঙ্গে ৫০০ জন যুক্ত থাকতে পারবেন। এরমধ্যে একসঙ্গে ১০০ জন উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। প্রতিটি এক্সেস পয়েন্টের চতুর্দিকে ১০০ মিটার এলাকায় ব্যান্ডউইথ থাকবে ১০ মেগাবাইট/সেকেন্ড।