বুড়িচংয়ে মহাসড়কে যানবাহন থেকে জ্বালানী তেল বিক্রি!

কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধিঃ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার পরিহলপাড়া এলাকায় প্রতিদিন শত শত যানবাহন থেকে চালকরা একটি চোরাই চক্রের কাছে বিপুল পরিমান জ্বালানী তেল বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মহাসড়কের ঢাকাগামী অংশের পাশাপাশি পৃথক দুটি স্থানে দু’টি ভাড়া করা দোকানে সিন্ডিকেট প্রধান রনির নেতৃত্বে চলছে এই চোরাই তেলের ব্যবসা । চোরাই এসব জ্বালানী পরবর্র্তীতে জেলার বিভিন্নস্থানে খোলাবাজারে বিক্রি করায় দুর্ঘটনাসহ নাশকতার কাজে ব্যবহারের আশঙ্কা করছে দায়িত্বশীল সুত্র।

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের পরিহলপাড়া গ্রাম। দেশের প্রধান জাতীয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফোরলেনের ঢাকাগামী অংশে সড়কের ডানপাশে কাছাকাছি দুরত্বের দু’টি টিনের ঘর । যেখানে বসে নিরবে প্রতিদিন শত শত যানবাহন থেকে চোরাই তেল ক্রয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে একটি চোরাই চক্র। আর এই চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন রনি নামের এক ব্যক্তি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সত্র জানায়, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার কালিবাজার ইউনিয়নের ছঁনগাও গ্রামের আলম মিয়ার পুত্র এই রনি। প্রায় ৭/৮ বছর পূর্বে বুড়িচংয়ের পরিহলপাড়ায় মহাসড়কের ঢাকাগামী অংশে সড়কের ডানপাশে প্রথমে একটি পরবর্র্তীতে ব্যবসার পরিধি বেড়ে যাওয়ায় কাছাকাছি দুরত্বে আরো একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে চোরাই তেলের ব্যবসা চলতে থাকে। দায়িত্বশীল স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, ব্যক্তি মালিকানাধীন ,সরকারী,আধা-সরকারী ,বিভিন্ন কোম্পানী বা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের শত শত গাড়ির চালকরা উপরি আয়ের লক্ষ্যে প্রতিদিন এখানে এসে গাড়ি থেকে জ্বালানী তেল বিক্রি করছে।

সুত্র জানায়, পেট্রোল পাম্প থেকে এক লিটার ডিজেল ৬৫.১২ টাকায় মালিক পক্ষ ক্রয় করলেও চালকরা সেই ডিজেল এখানে এসে লিটার প্রতি ৩০/৩৫ টাকায় বিক্রি করছে।

স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুত্র আরো জানায়, দোকান দুটি চোরাই জ্বালানী ক্রয়ের জন্য ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাতভর কমপক্ষে দু’ শতাধিক ট্রাক,ডাম্পট্রাক,সরকারী-বেসরকারী বা কর্পোরেট কোম্পানীর গাড়ি নিয়ে চালকরা এসে ভীড় করে। পরে সর্বনি¤œ ১০ লিটার থেকে সর্বোচ্চ ১৫/২০ লিটার তেল বিক্রি করে ।

এভাবে প্রতিদিন দেড় থেকে দু’হাজার লিটার ডিজেল ক্রয় করছে চক্রটি। পরবর্তীতে পিক-আপযোগে ক্রয় করা চোরাই তেল কুমিল্লা, চান্দিনা, দেবিদ্বার, বরুড়া, বুড়িচংসহ বিভিন্ন স্থানে অপেক্ষাকৃত লাভজনক মুল্যে খোলাবাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে।

সরেজমিন পরিহল পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সরকারী-বেসরকারী বা ব্যক্তিমালিকানাধীন যানবাহন ছাড়াও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ফ্রেশ, বসুন্ধরা, ক্রাউন, রয়েল সিমেন্ট, হাইড্রোলিক মিকচার মেশিন ,ঈগলুসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গাড়ি নিয়ে এসে চালকরা ভীড় করছে জ্বালানী বিক্রির জন্য। জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল একটি সুত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কোনভাবেই জ্বালানী তেল খোলা বাজারে ক্রয়-বিক্রয়ের সুযোগ নেই। জ্বালানী তেল বিক্রির জন্য বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নিতে হয়।

সূত্রটি আরো বলেন, চোরাই জ্বালানী পরবর্তীতে খোলা বাজারে বিক্রয় করায় সেগুলো নাশকতাসহ অন্যান্য কাজেও ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

স্থানীয় অনেকেই পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, প্রকাশ্যে প্রতিদিন শত শত যানবাহন থেকে এভাবে চোরাই তেল ক্রয়-বিক্রয় হলেও অজ্ঞাত কারণে আইন-শঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরব রয়েছে। উল্লেখ্য প্রতিটি পাম্পে প্রতি লিটার ডিজেল ৬৬ টাকায় বিক্রি করলেও চোরাই সিন্ডিকেটের কাছে যানবাহনের চালকরা সেটা অর্ধেক দামে বিক্রি করছে।

চুরি করা জ্বালানী তেল ক্রয় এবং খোলা বাজারে বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে সিন্ডিকেট প্রধান রনি বলেন, আপনাদের কিছু জিজ্ঞাসার থাকলে আমার দোকানে এসে বলেন। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক পিপিএম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার মাধ্যমে জেনেছি আমি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
error: ধন্যবাদ!