আরিফ গাজী:
কুমিল্লার মুরাদনগরে জুমার নামাজের খুতবাকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা, ২টি ঘর ও দোকান ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দু’পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছে। ঘটনার পর পর অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি ও মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আলাউদ্দিন ভূইয়া জনি।
শনিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নে কুরন্ডী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সরে জমিনে গিয়ে দু’পক্ষের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ৭ মাস অতিবাহিত হলেও সাবেক ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম ও নির্বাচিত সদস্য সবুজ মিয়ার দ্বন্দ্ব শেষ হয়নি এখনো।
নির্বাচনী সেই প্রতিহিংসার জেরে ইউপি সদস্য সবুজ মিয়া গত কুরবানীর ঈদের নামাজ ঈদগায়ে গিয়ে পরতে বাধা দেয় নূরুল ইসলামের পরিবারের লোকজনকে। তখন তারা ঈদের নামাজ মসজিদে আদায় করতে সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহ জাহানের অনুমতি নিলেও সবুজ মিয়ার লোকজন মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে তার কোন উপায় না পেয়ে একই এলাকার কুরন্ডী ফুরকানিয়া মাদ্রাসায় ঈদের নামাজ আদায় করে। তার পর থেকে সেখানেই জুম্মাসহ সকল প্রকার নামাজ আদায় করেন নূরুল ইসলামের পরিবারের লোকজন।
মাদ্রাসা ও মসজিদ কাছাকাছি হওয়ায় গত ১৯ আগষ্ট জুমার খুতবাকে কেন্দ্র করে আবারো দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষে শুক্রবার (২৬ আগষ্ট) রাতে দু’পক্ষের লোকজন নিয়ে বসেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বাহার খাঁন। সেখান থেকে ফেরার পথে দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তারই জের ধরে শনিবার সকাল ৮টার দিকে ইউপি সদস্য সবুজ ও তার লোকজন নূরুল ইসলামের ভাই ইউনুছের বাড়ি, দোকান ও কুরন্ডী ফুরকানিয়া মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।
এ সময় নূরুল ইসলামের লোকজন প্রতিবাদ করতে আসলে দেশিয় অস্ত্রের আঘাতে দু’পক্ষের ১৫ জন আহত হয়। আহতদের মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে তিনজনকে ভর্তি দিয়ে বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
কুরন্ডী মসজিদ কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহজাহান বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই তাদের দু’পক্ষের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব। আমিসহ গণ্যমান্য অনেকেই বহুবার চেষ্ট করে কোন সমাধান করতে পারিনি। এই ঘটনার পরেও যদি কোন সমাধান না হয় তাহলে এটি দু’পক্ষের মাঝে ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।
বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহার খাঁন মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি শুক্রবার রাতে বসে ছিলাম কিন্তু কোন সমাধান করতে পারিনি।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি এবং কাউকে আটকও করা হয়নি।