০৭:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পিস্তল নিয়ে গ্রেফতার হওয়া রাসেল সদর দক্ষিণ উপজেলা যুবদলের কেউ নয়- সায়েম মজুমদার  নাঙ্গলকোটে মহিলাদল আদ্রা উওর ইউনিয়ন কমিটি গঠন করার লক্ষে মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় সুদের টাকা আদায়ে বৃদ্ধকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন কুমিল্লায় ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে কিশোর কুমিল্লায় চাঁদাবাজবিরোধী অভিযানে হামলা, আহত ৩ পুলিশ সদস্য ইউসুফ মোল্লা টিপুকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে যৌথ বিবৃতি কুমিল্লায় যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল কুমিল্লা সদর দক্ষিণে পিস্তলসহ যুবদল কর্মী আটক দুর্গাপূজায় ৯ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় হানিফ ফ্লাইওভারে বাস-সিএনজি সংঘর্ষ, নিহত ২

হারিয়ে যাচ্ছে গরুর গাড়ি, নেই গাড়িয়ালের কণ্ঠে ভাওয়াইয়া

  • তারিখ : ১০:১৪:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২১
  • / 1200

কি গাড়িয়াল ভাই, কত রব আমি পন্থের দিকে চাইয়া রে… এসব ভাওয়াইয়া গানের সৃষ্টি হয়েছে গরুর গাড়িকে ঘিরে। গরুর গাড়ি আর গাড়িয়ালকে নিয়ে প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী আব্বাস উদ্দিনের ভাওয়াইয়া দেশের গণ্ডি পেরিয়ে অর্ন্তজাতিক অঙ্গনেও স্থান করে নিয়েছিল। এক সময় এ অঞ্চলে গরুর গাড়ি ছাড়া বিকল্প বাহনের কথা ভাবাই যেত না। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই গরুর গাড়িও নেই। নেই গাড়িয়ালের কণ্ঠে ভাওয়াইয়া গানও।

এক সময় রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের এক মাত্র বাহন ছিল গরুর গাড়ি। ধান কাটার সময় লাইন ধরে গরুর গাড়িতে করে ধান নেয়া হত কৃষকের উঠানে। গাড়িয়ালদের ভাওয়াইয়ার সুরে মুগ্ধ হত কৃষক-কৃষাণি। বিয়ের অনুষ্ঠানে বরযাত্রী যেত গরুর গাড়ি নিয়ে। সারিবদ্ধ গরুর গাড়ি দেখার জন্য রাস্তার দুপাশে মানুষ ভিড় করতো। নবান্ন, নতুন বছরকে ঘিরে আয়োজন করা হত গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা। হাজার হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ করতো প্রতেযোগিতার দৃশ্য।

এসবের কিছুই নেই এখন। গ্রামগঞ্জে দু’একজন বড় গৃহস্থ প্রাচীন ঐতিহ্যটিকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে সখের বসে। সময়ের প্রয়োজনে মানুষ যন্ত্র নির্ভর হওয়ায় জনপ্রিয় এই বাহনটি এখন আর ব্যবহার হচ্ছে না। যোগাযোগ, যাতায়াত, মালামাল পরিবহনসহ সব কাজেই এখন ব্যবহার হচ্ছে বাস, অটোরিক্সা, ভটভটি ইত্যাদি বাহন।

কয়েক দশক আগেও উত্তরাঞ্চলের মধ্যে গরুর গাড়ির চাকা তৈরির বিখ্যাত হাট ছিল রংপুরের বদরগঞ্জে। দূর- দূরান্ত থেকে গরুর গাড়ির চাকা ক্রয় করতে বদরগঞ্জে আসতো। এই চাকা তৈরী করে শত শত পরিবার জীবিকা নির্বাহ করতো। এখন বদরগঞ্জে নেই গরুরগাড়ির চাকার হাট।

পীরগাছার কল্যানী ইউনিয়নের কৃষক নজরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, গরুর লালন-পালন, ক্রয়-ব্যয় বহুল হওয়ায় কৃষকরা এখন আর বাহনটির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তিনি বলেন, তার বাড়িতে এক সময় ৩টি গরুর গাড়ি ছিল। বাবা, দাদারা গরুর গাড়িতে চড়ে শহরের যেতেন। সে দৃশ্য এখন শুধুই স্মৃতি।

ইতিহাসবিদ জুবায়ের আলী জুয়েল বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গরু গাড়িকে এই প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে খুব দ্রুত এই গরুর গাড়ি ইতিহাসের পাতায় স্থান নিবে।

শেয়ার করুন

হারিয়ে যাচ্ছে গরুর গাড়ি, নেই গাড়িয়ালের কণ্ঠে ভাওয়াইয়া

তারিখ : ১০:১৪:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২১

কি গাড়িয়াল ভাই, কত রব আমি পন্থের দিকে চাইয়া রে… এসব ভাওয়াইয়া গানের সৃষ্টি হয়েছে গরুর গাড়িকে ঘিরে। গরুর গাড়ি আর গাড়িয়ালকে নিয়ে প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী আব্বাস উদ্দিনের ভাওয়াইয়া দেশের গণ্ডি পেরিয়ে অর্ন্তজাতিক অঙ্গনেও স্থান করে নিয়েছিল। এক সময় এ অঞ্চলে গরুর গাড়ি ছাড়া বিকল্প বাহনের কথা ভাবাই যেত না। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই গরুর গাড়িও নেই। নেই গাড়িয়ালের কণ্ঠে ভাওয়াইয়া গানও।

এক সময় রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের এক মাত্র বাহন ছিল গরুর গাড়ি। ধান কাটার সময় লাইন ধরে গরুর গাড়িতে করে ধান নেয়া হত কৃষকের উঠানে। গাড়িয়ালদের ভাওয়াইয়ার সুরে মুগ্ধ হত কৃষক-কৃষাণি। বিয়ের অনুষ্ঠানে বরযাত্রী যেত গরুর গাড়ি নিয়ে। সারিবদ্ধ গরুর গাড়ি দেখার জন্য রাস্তার দুপাশে মানুষ ভিড় করতো। নবান্ন, নতুন বছরকে ঘিরে আয়োজন করা হত গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা। হাজার হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ করতো প্রতেযোগিতার দৃশ্য।

এসবের কিছুই নেই এখন। গ্রামগঞ্জে দু’একজন বড় গৃহস্থ প্রাচীন ঐতিহ্যটিকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে সখের বসে। সময়ের প্রয়োজনে মানুষ যন্ত্র নির্ভর হওয়ায় জনপ্রিয় এই বাহনটি এখন আর ব্যবহার হচ্ছে না। যোগাযোগ, যাতায়াত, মালামাল পরিবহনসহ সব কাজেই এখন ব্যবহার হচ্ছে বাস, অটোরিক্সা, ভটভটি ইত্যাদি বাহন।

কয়েক দশক আগেও উত্তরাঞ্চলের মধ্যে গরুর গাড়ির চাকা তৈরির বিখ্যাত হাট ছিল রংপুরের বদরগঞ্জে। দূর- দূরান্ত থেকে গরুর গাড়ির চাকা ক্রয় করতে বদরগঞ্জে আসতো। এই চাকা তৈরী করে শত শত পরিবার জীবিকা নির্বাহ করতো। এখন বদরগঞ্জে নেই গরুরগাড়ির চাকার হাট।

পীরগাছার কল্যানী ইউনিয়নের কৃষক নজরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, গরুর লালন-পালন, ক্রয়-ব্যয় বহুল হওয়ায় কৃষকরা এখন আর বাহনটির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তিনি বলেন, তার বাড়িতে এক সময় ৩টি গরুর গাড়ি ছিল। বাবা, দাদারা গরুর গাড়িতে চড়ে শহরের যেতেন। সে দৃশ্য এখন শুধুই স্মৃতি।

ইতিহাসবিদ জুবায়ের আলী জুয়েল বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গরু গাড়িকে এই প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে খুব দ্রুত এই গরুর গাড়ি ইতিহাসের পাতায় স্থান নিবে।