০২:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ব্যবসায়ী দুলালকেখুন্তি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা ভাড়াটিয়া সুমি কুমিল্লার বেলতলীতে পিকআপ চাপায় পথচারী নিহত বিতর্কের মুখে সংসদের নির্বাচনী এলাকা সীমানা নির্ধারণ কারিগরি কমিটি কুমিল্লা সদর দক্ষিণে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান অপরাধী যে দলেরই হোক, কোনো ছাড় নেই- ওসি মোহাম্মদ সেলিম কুমিল্লা সদর দক্ষিণে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইয়ংস্টার সোশ্যাল অর্গানাইজেশন এর সদর দক্ষিন উপজেলার কমিটি গঠন নতুন পুরাতন বুঝি না,ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে-ডা. শফিকুর রহমান ছয় দফা দাবিতে কুমিল্লা সদর দক্ষিণে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে হেনস্তা: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হানিফ গ্রেফতার

হাসপাতালে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটার অভিযোগ

  • তারিখ : ০৪:৫৪:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 217

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে করোনার টিকা নিতে আসা বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা লাঠিপেটার শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে করোনার টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করেছেন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকেরা।

বিশৃঙ্খলা, হুড়োহুড়ি আর লাঠিপেটার ঘটনায় টিকা নিতে না পেরে অনেক শিক্ষার্থীই হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। সকাল ১০টার দিকে টিকা দেওয়া শুরু হলে আগে টিকা নিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের নিয়োজিত একদল স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা শুরু করেন। লাঠিপেটা থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীরা দিগ্‌বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকে। অনেকেই পাশের নর্দমায় পড়ে হোঁচট খান।

ওই কেন্দ্রে রেড ক্রিসেন্টের পোশাকধারী ১০-১২ জন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীরা।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রের বাইরে উপচে পড়া ভিড়। ভেতরে বাঁ পাশের লাইনে ছাত্র ও ডান পাশে ছাত্রীরা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। ভিড়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। কারও কারও মুখে মাস্ক নেই। বাইরে অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীরা হুড়োহুড়ি করে ভেতরে প্রবেশ করছে। হুড়োহুড়ি দেখে কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বে থাকা তরুণেরা লাঠিপেটা করছেন। এ অবস্থায় অনেক শিক্ষার্থীকে টিকা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যেতে দেখা যায়। বেলা দুইটা পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলায় ১২-১৭ বছর বয়সী ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৫৯ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর জেলায় শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। জেলায় গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার ৫০২ শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ ও ৬২ হাজার ৮৮ শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে বুধবার ৩ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়। আজ ওই কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীসংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

টিকা নিতে আসা ভেলাজান উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আহসান হাবিব বলে, ‘শুরু থেকে আমরা সারি করেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। ভিড় বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করেই টিকাদান কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকেরা তখন শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করেন। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।’

পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আখানগর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আকতার বলে, ‘স্বেচ্ছাসেবকেরা শুধু ছেলেদের নয়, মেয়েদেরও মারধর করেছে। আমরা টিকা নিতে এসে মার খাব, এটা কেমন কথা? তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’

টিকাদান কেন্দ্রে লাঠিপেটার কথা শুনে ছুটে আসেন শহরের হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা এনামুল হক। তিনি বলেন, ‘এটা কোনো পরিবেশ হলো? টিকাদান কেন্দ্রে গাদাগাদি আর বিশৃঙ্খলা। কর্তৃপক্ষ এই দায় না নিয়ে উল্টো শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’

আখানগর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এহসানুল হক বলেন, ‘এক দিনে একসঙ্গে এত শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা ঠিক হয়নি।’

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল বলেন, ‘তেমন কিছু ঘটেনি।’

তবে সিভিল সার্জন ডা. নূর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, ‘এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। বহিরাগতদের কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও ছিল কেন্দ্রে।’

আজকের পত্রিকা

শেয়ার করুন

হাসপাতালে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটার অভিযোগ

তারিখ : ০৪:৫৪:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে করোনার টিকা নিতে আসা বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা লাঠিপেটার শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে করোনার টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করেছেন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকেরা।

বিশৃঙ্খলা, হুড়োহুড়ি আর লাঠিপেটার ঘটনায় টিকা নিতে না পেরে অনেক শিক্ষার্থীই হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। সকাল ১০টার দিকে টিকা দেওয়া শুরু হলে আগে টিকা নিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের নিয়োজিত একদল স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা শুরু করেন। লাঠিপেটা থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীরা দিগ্‌বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকে। অনেকেই পাশের নর্দমায় পড়ে হোঁচট খান।

ওই কেন্দ্রে রেড ক্রিসেন্টের পোশাকধারী ১০-১২ জন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীরা।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রের বাইরে উপচে পড়া ভিড়। ভেতরে বাঁ পাশের লাইনে ছাত্র ও ডান পাশে ছাত্রীরা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। ভিড়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। কারও কারও মুখে মাস্ক নেই। বাইরে অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীরা হুড়োহুড়ি করে ভেতরে প্রবেশ করছে। হুড়োহুড়ি দেখে কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বে থাকা তরুণেরা লাঠিপেটা করছেন। এ অবস্থায় অনেক শিক্ষার্থীকে টিকা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যেতে দেখা যায়। বেলা দুইটা পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলায় ১২-১৭ বছর বয়সী ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৫৯ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর জেলায় শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। জেলায় গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার ৫০২ শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ ও ৬২ হাজার ৮৮ শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে বুধবার ৩ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়। আজ ওই কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীসংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

টিকা নিতে আসা ভেলাজান উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আহসান হাবিব বলে, ‘শুরু থেকে আমরা সারি করেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। ভিড় বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করেই টিকাদান কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকেরা তখন শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করেন। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।’

পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আখানগর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আকতার বলে, ‘স্বেচ্ছাসেবকেরা শুধু ছেলেদের নয়, মেয়েদেরও মারধর করেছে। আমরা টিকা নিতে এসে মার খাব, এটা কেমন কথা? তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’

টিকাদান কেন্দ্রে লাঠিপেটার কথা শুনে ছুটে আসেন শহরের হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা এনামুল হক। তিনি বলেন, ‘এটা কোনো পরিবেশ হলো? টিকাদান কেন্দ্রে গাদাগাদি আর বিশৃঙ্খলা। কর্তৃপক্ষ এই দায় না নিয়ে উল্টো শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’

আখানগর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এহসানুল হক বলেন, ‘এক দিনে একসঙ্গে এত শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা ঠিক হয়নি।’

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল বলেন, ‘তেমন কিছু ঘটেনি।’

তবে সিভিল সার্জন ডা. নূর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, ‘এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। বহিরাগতদের কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও ছিল কেন্দ্রে।’

আজকের পত্রিকা