০৫:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
হানিফ ফ্লাইওভারে বাস-সিএনজি সংঘর্ষ, নিহত ২ লালমাইয়ে বিয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে মারধর ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় মামলা কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ব্যবসায়ী দুলালকেখুন্তি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা ভাড়াটিয়া সুমি কুমিল্লার বেলতলীতে পিকআপ চাপায় পথচারী নিহত বিতর্কের মুখে সংসদের নির্বাচনী এলাকা সীমানা নির্ধারণ কারিগরি কমিটি কুমিল্লা সদর দক্ষিণে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান অপরাধী যে দলেরই হোক, কোনো ছাড় নেই- ওসি মোহাম্মদ সেলিম কুমিল্লা সদর দক্ষিণে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইয়ংস্টার সোশ্যাল অর্গানাইজেশন এর সদর দক্ষিন উপজেলার কমিটি গঠন নতুন পুরাতন বুঝি না,ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে-ডা. শফিকুর রহমান

দশ বছর শিকলবন্দী

  • তারিখ : ১১:০০:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অগাস্ট ২০২০
  • / 230

মো. আল আমিন, সোনারগাঁও : নজরুল ইসলামের জীবন সুখেই কাটছিল। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন টেকেনি। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ১০ বছর ধরে তিনি শিকলবন্দী। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাওা উপজেলায় সাদিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত জামির আলী মোল্লার ছেলে নজরুল ইসলাম।

তিনি ২০১০ সালে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এরপর বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা চললেও তাকে সুস্থ করা যায়নি। অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে পায়ে লোহার শিকল পরাতে বাধ্য হয় পরিবারের লোকজন। শিকলবন্দী অবস্থায় তার জীবন থেকে বিদায় নিয়েছে ১০টি বছর। কাউকে দেখলে অসহায় দৃষ্টিতে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। তার চাহনিতে অজানা কষ্ট বুকে চাপা দেয়ার ছাপ।

আজ মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামে ছোট একটি টিনের চালার চারদিক খোলা একটি ঘরে শিকল পায়ে মাটিতে বসে আছেন নজরুল ইসলাম। ঘরের পাশে থাকা গাছের সাথে লোহার শেকল আর তালা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে নজরুলকে। শরীরে পড়া ছেঁড়া লুঙ্গি ও পুরনো একটি শার্ট।

রোদ-বৃষ্টি-ঝড় যা-ই-হোক না কেন নজরুলের জীবনসঙ্গী শিকল আর ভাঙ্গা একটি খোলা ঘর। নজরুলরা ৬ ভাই ও ৫ বোন। বেশ সম্পত্তির মালিকও নজরুল। সু-চিকিৎসা করে তাকে সুস্থ করবেন এমন যেন কেউ নেই।

নজরুলের বড় ভাই নবীর হোসেন নবু জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় এলাকাবাসীর বিভিন্ন লোকসান করেছিল। কারও গরু ছাগলকে মারধর, মানুষ মারধর, রাস্তায় এসে গাড়ি ভাংচুর এমনকি নিজের পরিবারের লোকজনকে কাছে পেলে আঘাত করার চেষ্টা করে। এই জন্যই পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে তাকে।

তিনি আরও জানান, আমার অন্য ভাই-বোনেরা সম্পত্তির লোভে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন না। আমি একা কীভাবে নজরুলের দায়িত্ব নেব।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে নজরুলকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।

শেয়ার করুন

দশ বছর শিকলবন্দী

তারিখ : ১১:০০:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অগাস্ট ২০২০

মো. আল আমিন, সোনারগাঁও : নজরুল ইসলামের জীবন সুখেই কাটছিল। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন টেকেনি। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ১০ বছর ধরে তিনি শিকলবন্দী। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাওা উপজেলায় সাদিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত জামির আলী মোল্লার ছেলে নজরুল ইসলাম।

তিনি ২০১০ সালে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এরপর বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা চললেও তাকে সুস্থ করা যায়নি। অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে পায়ে লোহার শিকল পরাতে বাধ্য হয় পরিবারের লোকজন। শিকলবন্দী অবস্থায় তার জীবন থেকে বিদায় নিয়েছে ১০টি বছর। কাউকে দেখলে অসহায় দৃষ্টিতে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। তার চাহনিতে অজানা কষ্ট বুকে চাপা দেয়ার ছাপ।

আজ মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামে ছোট একটি টিনের চালার চারদিক খোলা একটি ঘরে শিকল পায়ে মাটিতে বসে আছেন নজরুল ইসলাম। ঘরের পাশে থাকা গাছের সাথে লোহার শেকল আর তালা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে নজরুলকে। শরীরে পড়া ছেঁড়া লুঙ্গি ও পুরনো একটি শার্ট।

রোদ-বৃষ্টি-ঝড় যা-ই-হোক না কেন নজরুলের জীবনসঙ্গী শিকল আর ভাঙ্গা একটি খোলা ঘর। নজরুলরা ৬ ভাই ও ৫ বোন। বেশ সম্পত্তির মালিকও নজরুল। সু-চিকিৎসা করে তাকে সুস্থ করবেন এমন যেন কেউ নেই।

নজরুলের বড় ভাই নবীর হোসেন নবু জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় এলাকাবাসীর বিভিন্ন লোকসান করেছিল। কারও গরু ছাগলকে মারধর, মানুষ মারধর, রাস্তায় এসে গাড়ি ভাংচুর এমনকি নিজের পরিবারের লোকজনকে কাছে পেলে আঘাত করার চেষ্টা করে। এই জন্যই পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে তাকে।

তিনি আরও জানান, আমার অন্য ভাই-বোনেরা সম্পত্তির লোভে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন না। আমি একা কীভাবে নজরুলের দায়িত্ব নেব।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে নজরুলকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।