মো.জাকির হোসেন।।
কুমিল্লার বুড়িচংয়ের অখাত গ্রাম মিথলমা। এই গ্রামের দুলাল মিয়ার কন্যা তাসলিমা (১৯)। পারিবারিকভাবে প্রায় ৮ মাস আগে তার বিয়ে হয় কুমিল্লা মহানগরীর মুরাদপুর এলাকারফারুক মিয়ার ছেলে সুজন মিয়ার সাথে। বিয়ের অল্প সময় পর থেকেই সুজন নানাভাবে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। এরই জের ধরে প্রায় দেড়মাস আগে তাসলিমা চলে আসে বাবার বাড়ি। এসময় স্বামী কৌশলে মোবাইল ফোনে স্ত্রীর সাথে কথা বলার সময় কিছু আপত্তিকর ছবি তুলে নেয়। পরবর্তীতে স্বামী স্ত্রীর বিরোধ নিস্পত্তিতে ১২ মার্চ শুক্রবার দুলাল মিয়াসহ কয়েকজন গন্যমান্য লোক নগরীর মুরাদপুরে এলে স্বামী দুলাল তাদের উল্টো মেয়ে চরিত্রহীনসহ আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে আর ঘর সংসার করবেনা বলে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি তাসলিমা জানতে পেরে অপমানে গতকাল শনিবার সকালে ঘরের তীরের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্নহত্যা করে।
নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের মিথলমা উত্তরপাড়া গ্রামের দুলাল মিয়ার কন্যা মোসাম্মৎ তাসলিমা আক্তারের বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে প্রায় ৮ মাস আগে কুমিল্লা মহানগরীর মুরাদপুর এলাকার ফারুক মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের অল্প কয়েক দিন পর থেকেই সুজন স্ত্রীর কাছে মোবাইল ফোন,বিদেশী কম্বলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দাবীসহ তাকে বিদেশ নিয়ে যেতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এতে অতিষ্ট হয়ে প্রায় দেড় মাস আগে তাসলিমা বাবার বাড়ি চলে আসে। তাসলিমার ভাই মামুন জানান, পরবর্র্তীতে সুজন তাসলিমার সাথে কথা বলার ফাঁকে মোবাইলে বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি তুলে নেয়। এরপর নানাভাবে তাকে উত্যক্তসহ টাকা চেয়ে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। গত ১২ মার্চ শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর তাসলিমার বাবা দুলাল মিয়া এলাকার কিছু গন্য মান্য লোক নিয়ে সুজনের বাড়িতে যায়। এসময় সুজন উপস্থিত সবার সামনে তাসলিমার আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে মেয়ের সাথে সংসার করবেনা বলে হুমকী দেয়। পরবর্তীতে বাড়ি ফিরে আসলে তাসলিমার মা বিষয়টি জানতে চাইলে দুলাল মিয়া বিষয়টি খুলে বলে। পরে মা বিষয়টি তাসলিমাকে বললে অপমানে গতকাল শনিবার বেলা আনুমানিক ১০ টায় ঘরের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দেয়। এসময় পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ইষ্টার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করে। খবর পেয়ে বুড়িচং থানার দেবপুর ফাঁড়ির এসআই কামালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।