এই ঘোর অন্ধকার সময়ে আমাদের রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাই শেষ ভরসা। যেখানে করোনার অভিশাপে প্রতাপশালী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিপর্যস্ত। লাশ দাফনের ক্ষমতাও নেই! যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অসহায়। ইউরোপের রাষ্ট্রনায়করা আকাশমুখী আর্তনাদ করছেন! তখন ১৭ কোটি অসচেতন বিপুল গরিব জনগোষ্ঠীর রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দৃঢ় মানসিক মনোবল ও পরিশ্রমে জাতিকে অভয়বাণীতে জাগিয়ে লড়াই করছেন মানসিক শক্তিধর শেখ হাসিনা নেতৃত্বে সাহসে যখন জাতির সামনে ভাষণ, সংবাদ সম্মেলন আর ভিডিও কনফারেন্সে আসেন, মানুষ আশার আলো, শক্তি, সাহস পায়। তিনি ছাড়া তার মন্ত্রিসভার কাউকেই ভরসা করা দূরে থাক কয়েকজনকে দেখলে বিরক্তিতে গা জ্বলে। ব্যর্থ অথর্ব মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ ভাষণেও তাঁর পরিকল্পনা ও জনগণের করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন করোনার বিরুদ্ধে যারা যোদ্ধা তাদেরও উদ্দীপনা বিশ্বজুড়ে। আগেই কৃষি খাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। প্রথমেই গার্মেন্ট খাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দেন। তারপর ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা দেশের অর্থনীতিকে রক্ষার প্রণোদনা প্যাকেজ। তিনি চিকিৎসকদের জন্য প্রণোদনা দিয়েছেন। লড়াইয়ে আক্রান্তের জন্য ১০ লাখ, মৃতের জন্য ৫০ লাখ টাকা ঘোষণা করেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা গণমাধ্যম কর্মীদেরও এতে যুক্ত করা উচিত। কেরানি সাংবাদিকতা করা প্রেস সচিব ও স্তাবক সুবিধাভোগী স্বঘোষিত গণমাধ্যম মোড়লরা বলবে না। বঙ্গবন্ধুর কন্যাকেই করতে হবে।
এবার মহাপ্রলয় পৃথিবীতে ভয়ঙ্কর রাহুগ্রাস এনেছে। জীবন ও সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে। কর্মহীন মানুষ কয় কোটিতে দাঁড়ায় কেউ জানে না। শেখ হাসিনা সামনে বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকটসহ যে বিপর্যয় আসবে তা নিয়েও সতর্ক করেছেন বলেছেন খাদ্য উৎপাদনে বাড়ির আঙিনাও কাজে লাগাতে। সুরক্ষার পদক্ষেপসহ তিন স্তর পরিকল্পনা নিয়েছেন। কয়েকদিন আগে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ফোন করেছিলেন। বলেছেন, কৃষকের ধান কাটার জন্য গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন এলাকার শ্রমিক আমাদের হাওর অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে। কৃষি বিভাগ ও প্রশাসনকে তাদের দেখভাল করতে বলা হয়েছে। স্থানীয়রাও ধান কাটায় যুক্ত হবে। ধান কাটা শুরুও হয়েছে।
এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিপর্যয়ের মধ্যেও কৃষকের মুখে হাসি। হাওরজুড়ে ধানের কী অপূর্ব দৃশ্য। কৃষিমন্ত্রী জানালেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেই শেখ হাসিনা ৯৬ টাকার সার ২৫ টাকা করেছিলেন। আমরাও দেখেছি ধানের দেশ সুনামগঞ্জের হাওরে গিয়ে কৃষককে কী পরিমাণ কৃষি উপকরণ দিয়েছেন।
যাক, করোনামুক্ত হয়ে কৃষক তার ঘরে ধান তুলে নিক। খাবার সংকট এতে আসবে না। এবার শেখ হাসিনা সারের দাম আরও কমিয়ে ভর্তুকিতে ১৬ টাকায় কৃষককে দিয়েছিলেন। কৃষিমন্ত্রীকে বলেছি প্রান্তিক প্রকৃত কৃষক যেন তার ফসলের ন্যায্যমূল্য পায়। তারা এমনিতেই মহাজনী দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে বাঁধা। ফসলের মূল্য যদি চলে যায় মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়ার হাতে কৃষকের সর্বনাশ।
আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ পেয়েছি। মুজিবকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছিলাম এত ঘুষ-দুর্নীতির পরও। উত্তরের মঙ্গার গ্লানি মুছে গেছে কবে। ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। দেশপ্রেমিক শিল্পপতিরা দেশে উজাড় করা বিনিয়োগে বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন।
অভিশপ্ত করোনায় বড় ধরনের হোঁচট খেয়েছি। প্রবাসী শ্রমিকের রেমিট্যান্স বিপর্যয় ঘটবে। গার্মেন্ট সেক্টরও বিপর্যয়ের মুখে। গণমাধ্যম করুণ বিপর্যয়ে। শিল্পকারখানায় উৎপাদন বন্ধ। আমদানি-রপ্তানি নেই। অনেকে কাজ হারাবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের মন্দা আসবে। ফের কৃষিই আমাদের আজ বড় শক্তি অর্থনীতির। আর দেশের শিল্পকারখানার উৎপাদন, প্রকৃত ব্যবসায়ীদের সুরক্ষাই বড় করে দেখতে হবে। ছোট-বড় বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী যে বিশাল প্রণোদনা দিয়েছেন সেখানে ব্যাংক লুটেরাদের শকুনের নজরটা যেন না পড়ে। ঘুষ-দুর্নীতি কঠোর হাতে দমনের বিকল্প নেই।
শেখ হাসিনা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১০ টাকা কেজি চাল দিচ্ছিলেন উপজেলা পর্যন্ত। অসাধু ডিলাররা লোভ করল। শৃঙ্খলার জন্য তা বন্ধ। এটা সেনাবাহিনীর প্রহরায় চালু রাখা যায়। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম পর্যন্ত দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী পাঠালেন। আওয়ামী লীগের গ্রাম্য ছ্যাঁচড়ারা রিলিফ চুরিতে তৎপর। ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বাররা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিয়মিত আটক হচ্ছেন। মাটি খুঁড়ে চালের বস্তা বের হচ্ছে। চালসহ চোরগুলো আটক হচ্ছে। মুনাফাখোর যারা শুরু থেকে নিত্যপণ্যের মজুদ গড়ে দাম বাড়িয়ে মানুষের রক্ত খেয়েছে তাদেরও আজ কঠোর শাস্তি হোক।
প্রধানমন্ত্রী বারবার এদের রেহাই নেই বললেও শোনেনি। এখন রেহাই পাচ্ছে না। বেড়ায় চাল চোর চেয়ারম্যানের সমর্থক দলের নেতাকে বহিষ্কার করলেও নির্লজ্জ এমপি বলেন এটা ষড়যন্ত্র। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ত্রাণ চুরিতে জড়িত হলেই বরখাস্ত।
এই মহাসংকটে যে অমানুষরা গরিবের রিলিফ চুরি করছে, তাদের জুতার মালা পরিয়ে এলাকা ঘুরিয়ে জেলে নেওয়া হোক। বরখাস্ত করে কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক। ওদের বংশধররা জানবে তার পূর্বপুরুষ ছ্যাঁচড়া রিলিফ চোর ছিল। মানুষ ঘেন্নায় থুথু দিক।
আজ মহাদুর্দিনে সেই ডাকাতরা কোথায়, যারা ১৪ বছরে প্রায় ৯ লাখ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। যারা বিগত দিনে ব্যাংকের ৩০ হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়ে গেছে! সেই শেয়ারবাজার লুটেরারা কই, যারা ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা বারে বারে লুটে বিনিয়োগকারীদের পথে বসিয়েছে? সেসব ব্যবসায়ী কই যারা ১১ বছর সরকারের ছায়ায় একচ্ছত্র ব্যবসা-বাণিজ্য করেছে? তারা কজন কই যাদের হাতে উঠেছিল দেশের অর্থনীতি?
১১ বছর আগে যাদের কোথাও কিছু ছিল না, সরকারি দলের পদ-পদবি ক্ষমতা যাদের অঢেল অর্থবিত্ত দিয়েছে, গ্রামে আলিশান বাড়ি, ঢাকায় রাজকীয় ফ্ল্যাট, বিদেশে সম্পদ, কাঁচা টাকা হয়েছে তাদের পাকড়াও করে কেন জনগণের জন্য এই মহাদুঃসময়ে অর্থ আদায় করা হচ্ছে না?
যারা দেশের উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা লুট করেছে, ঘুষ খেয়েছে বেশুমার, হরিলুট করেছে রাষ্ট্রের অর্থ, তাদেরও পাকড়াও করে অর্থ আদায় করার সময়। লুটেরা ডাকাত ধরা যায় না, চোর ধরা যায়! রাষ্ট্রের হাত কেন দুর্বল?
দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, রিলিফ চোরদের গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু তিনি কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন, যে রুই কাতলা ধরবেন বলেছিলেন তা করেছেন? যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে তাদের রক্ষায় প্রভাবশালীদের তদবির উপেক্ষা করে আইনকে নিজের গতিতে চলতে দিচ্ছেন?
অনেকে বলছেন রিলিফ চোর, চাল চোরদের দলীয়ভাবে দেখতে নেই। তাদের বলি, আজ এত লজ্জা কেন! কেন দলের পরিচয় দেখতে নেই? মানুষ কেন দায় নেবে! ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন আওয়ামী লীগ দেয়নি? কেন দায় নেবে না আজ? দায়িত্বশীল নেতারা কী করেছেন যখন মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠল? দলীয় এমপিদের অনেকে এলাকায় বারো ভূঁইয়ার শাসনে অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য গড়েছেন। গোয়েন্দা রিপোর্ট ছাড়াও কি দলে খবর ছিল না? এলাকায় ঠিকাদারিসহ নানামুখী বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে কমিশন ভোগের কলঙ্কিত ইতিহাস অনেকে গড়েননি? লুটের অর্থবিত্তে ভোগবিলাসের রঙিন জীবনযাপন করেননি? কারা ১১ বছরে দলের ক্ষমতার সুবাদে অঢেল অর্থবিত্ত গড়েছেন? মানুষের মুখে মুখে যাদের নাম, দল জানে না তাদের আমলনামা? আওয়ামী লীগকে কারা ১১ বছর বিক্রি করে বাণিজ্য করেছে? বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করেনি, শেখ হাসিনার স্বপ্নকেও নয়। বিশ্বাসঘাতক দল বিক্রির বাজিকর এরা।
১১ বছর আগে গ্রামে শহরে কার কী সম্পদ অর্থ ছিল এখন ঢাকায়, এলাকায়, বিদেশে কী হয়েছে? তাদের বিরুদ্ধে দল বা দুদক কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে? কজন মন্ত্রী এমপি নেতা দলের ইমেজ নষ্টের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন?
সব শ্রেণির মানুষের দল আওয়ামী লীগকে একসময় গরিবের দল বলা হতো। গণমুখী সৎ রাজনীতির পোশাক ছিল সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি গায়ে মুজিবকোট। সেই পবিত্র পোশাকের রাজনীতির চরিত্র আজ কই? নেতারা কামিয়েছেন বলেই জেলা সম্মেলন থেকে সাংগঠনিক সফরে গিয়ে রাজকীয় আয়োজন, বিলাসে ভোগে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন। এত খরচ কোথা থেকে এলো জানতে চান না। নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখেছেন যে মাঠের দিকে তাকাবেন? নায়ক-নায়িকা নিয়ে রঙ্গ করেন আদর্শিক কর্মীর খোঁজ নিয়েছেন? দুর্দিনের ত্যাগী-দক্ষদের কোথাও ঠাঁই দিয়েছেন? লোভী-চরিত্রহীন একদল নারী-পুরুষ দলের চরিত্র লুণ্ঠন করেছে, কলুষিত করেছে। চুরি-চামারির সংক্রমণ ঘটিয়েছে। এ দায় দল কেন নেবে না?
ব্যাংক লুটেরা, শেয়ার লুটেরা, বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের দিকে তাকিয়ে সমাজ যখন আর্তনাদ করেছে তখন রাষ্ট্র ঘুমিয়েছিল কেন? সরকারের প্রতিটি খাতের উন্নয়নে হরিলুট হয়নি? কতজন ধরা পড়েছে? আমলা মন্ত্রী কর্মকর্তা কর্মচারীদের লুটপাটে সংবিধান আইন অকার্যকর ছিল কেন? সবার হরিলুটের বাজারে রাষ্ট্র নির্বিকারই নয় প্রশ্রয় দিয়েছে। সবাই কামিয়েছে এই নগ্ন প্রতিযোগিতায় এখন জাতির কঠিন দুঃসময়ে গরিবের রিলিফ চুরি করছে দলীয় জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান মেম্বার ডিলাররা। রাষ্ট্রের প্রশ্রয়ে ডাকাত লুটেরা সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা রিলিফ চোর সৃষ্টি করেছেন। অতীতেও বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীর কোনো দল নেই। কিন্তু সব সরকারে দলীয় ক্ষমতার ছায়ায় দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়েছে। বিএনপি এখন বড় কথা বলে, তাদের আমল ভুলে গেছে মানুষ? যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ!
রাত নামলেই খবর আসে, পৃথিবীতে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ কত হাজারে গেল! আক্রান্তের সংখ্যা কত লাখ? এ যেন অভিশপ্ত করোনার মৃত্যুর এক সর্বনাশা খেলা! ঘরে স্বামীর মরদেহ, পাশের রুমে আক্রান্ত স্ত্রী-সন্তান! গোটা পৃথিবীই আজ মর্গ বা লাশঘরে পরিণত। কবে শেষ হবে মরণযন্ত্রণা, করোনার ত্রাসের ভয়ঙ্কর ধ্বংসলীলা কেউ জানে না! ওষুধ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের সুখবর নেই। গৃহবন্দী মানুষ পাগল হয়ে যাচ্ছে।
করোনা চিকিৎসার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ছয়জন চিকিৎসককে দ্রুত বিনা নোটিসে বরখাস্ত করে দেওয়া হলো! আগে অযোগ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে কেন বিদায় নয়? করোনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে ঝুঁকি নিয়ে লড়ছে চিকিৎসক, নার্স থেকে প্রতিটি স্বাস্থ্যকর্মী।
বাংলাদেশ তো চীনের ভয়াবহতা দেখে প্রতিরোধ প্রস্তুতির তিন মাস সময় পেয়েছিল। কী করেছিল তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়? প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন তৈরি করেনি কেন? কেন ল্যাবসহ পরীক্ষার ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়নি? কেন হাসপাতালগুলোকে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে করোনা ও অন্যান্য চিকিৎসার জন্য পরিকল্পিত চিকিৎসার আওতায় আনার ব্যবস্থা করেনি? কেন জনগণকে সচেতন করেনি! কেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মশালাসহ প্রস্তুত করা হয়নি? আইসিইউ বেডসহ পরীক্ষার ব্যবস্থা জেলা পর্যন্ত নিশ্চিত করা হলো না? কেন ভেনটিলেশন আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি? কেন চিকিৎসক দলের পিপিই বা পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট মজুদ ও সরবরাহ করা হয়নি? ২ হাজার কিট নিয়ে দুই মাস টেলিভিশনে এসে দম্ভের সঙ্গে বলেছেন সব প্রস্তুতি রয়েছে! কিছু মন্ত্রীর ফালতু সব কথাবার্তা! যা হওয়ার যোগ্য নন, তাই হয়েছেন বলে জনগণকে মানুষ মনে করেননি? রাজনৈতিক প্রজ্ঞা-দূরদর্শিতা ব্যক্তিত্বের ঘাটতি বলে আমলারাও আপনাদের গোনায় ধরে না তাই?
করোনার আক্রমণ শুরু হলে প্রধানমন্ত্রী যখন কঠোর পদক্ষেপ নিলেন তখন দেখা গেল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কতটা দেউলিয়া। চিকিৎসক প্রায় ৫০ জন করোনা আক্রান্ত। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভেনটিলেশন পাননি। নিজ দায়িত্বে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকা এসেছেন। তার পরও বাঁচতে পারেননি এই নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসক। রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ভোর ৪টায় তিনি চলে গেছেন না-ফেরার দেশে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রীর মৃত ও আক্রান্তের খবর দিলেই হবে না। প্রস্তুতি জানান সারা দেশের। আইসিইউ কত বেড, পরীক্ষা ও ল্যাবের কী অবস্থা। ভেনটিলেশন কত আছে? কত আমদানি করছেন? কিট, পিপিই কত আছে? কত আনবেন? ভারত চিকিৎসকদের বেতন দ্বিগুণ করেছে, এখানে গরম দেখালে হবে না।
আমাদের চিকিৎসকরাও ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধা। জানের ভয় কার নেই? রাস্তার পাশে মরদেহ, কেউ এগিয়ে আসে না। অসুস্থ মাকে সন্তানরা বাবার সঙ্গে জঙ্গলে ফেলে আসে! ঝিনাইদহে জানাজায় ইমাম পাওয়া যায়নি! ইউএনও জানাজা পড়ান। হাসপাতাল ক্লিনিক ঘুরে মানুষ চিকিৎসা পায় না! আপনাদের ব্যর্থতা, চিকিৎসকদের নয়! কে কাকে ভাইরাস ছড়ায় কেউ জানে না। ৩৭ লাখ টাকায় পর্দা কিনতে মজা, ৫ হাজার টাকার বই ৮৫ হাজার টাকায় কিনতে আনন্দ! হাসপাতাল আছে চিকিৎসক নার্স আছে পরীক্ষা আইসিইউ ল্যাব ভেনটিলেশন নেই লজ্জা করে না?
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যুদ্ধে মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন। ব্যর্থ অপদার্থদের সরিয়ে পরিকল্পিত আয়োজনে দক্ষদের দরকার। সেনাবাহিনী, পুলিশ, প্রশাসন, মানুষ লড়ছে। মুজিবকন্যার পাশে প্রশাসন ও রাজনীতিতে সমন্বয়ের অভিজ্ঞ টিম দরকার। অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, শীর্ষ ব্যবসায়ী, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, পেশাদার কূটনীতিক দরকার। এখন ভয়ঙ্কর দুঃসময়। এ যুদ্ধে জিততে টানেলের শেষ প্রান্তে আলো দেখতেই হবে।
লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।